পঞ্চাশের পথে 'নীলাখ্যান'

মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের ‘নীলাখ্যান’ নাটকের একটি দৃশ্য: ফাইল ছবি
মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের ‘নীলাখ্যান’ নাটকের একটি দৃশ্য: ফাইল ছবি

২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার মঞ্চে যোগ হয় মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের ‘নীলাখ্যান’ নাটকটি। এরপর নাটকটির ৪৯টি সফল মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নাটকটির ৫০তম প্রদর্শনী হবে।

আগামীকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে শুরু হবে নাটকের মঞ্চায়ন। কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাপুড়ে’ গল্প আশ্রয়ে নাটকটি রচনা করেছেন আনন জামান। নির্দেশনায় রয়েছেন ইউসুফ হাসান অর্ক।

নাটকের দল মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের প্রধান মীর জাহিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ১৪ জুলাই দলটির তিন যুগপূর্তি হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাল ‘নীলাখ্যান’–এর মঞ্চায়ন ছাড়া আরও আনুষ্ঠানিকতা আছে। বিকেল চারটায় রয়েছে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ এবং সম্মানিত অতিথি থাকবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক।

জানা গেছে, অনুষ্ঠানে ‘নীলাখ্যান’ নাটকের নাট্যকার ও নির্দেশককে সম্মাননা জ্ঞাপন এবং ৫০টি প্রদর্শনীতেই অংশগ্রহণকারী শিল্পী মো. শাহনেওয়াজ ও মীর জাহিদ হাসানকে সম্মাননা স্মারক প্রদানসহ অংশগ্রহণকারী সব শিল্পীকে ৫০তম মঞ্চায়ন স্মারক প্রদান। আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রথমেই থাকছে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের পরিবেশনায় গীতি-আলেখ্য মীর জাহিদ হাসানের গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় এবং আমিনুল আশরাফের কোরিওগ্রাফি ও নির্দেশনায় ‘যখন আমার পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান’।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাপুড়ে’ গল্প আশ্রয়ে নাটকটি লিখেছেন আনন জামান।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাপুড়ে’ গল্প আশ্রয়ে নাটকটি লিখেছেন আনন জামান।

ইফতারের বিরতি দিয়ে সন্ধ্যায় শুরু হবে নীলাখ্যান। নাটকের গল্প প্রসঙ্গে নির্দেশক ইউসুফ হাসান অর্ক বলেন, ‘নাটকের কাহিনির প্রেক্ষাপট বেদেবহর হলেও কবি নজরুলের অন্তস্রোতে এমন একটি সর্বজনীন বীজ ভাসিয়ে দিয়েছেন, যা স্পষ্টতই গোটা মানবকুলের সর্বকালকে ছুঁয়ে যায়। অনতিক্রম্যদুর্মর আকাঙ্ক্ষা আর প্রকৃতির তুলনায় মানুষের অসহায়ত্ব কবিকে এমন প্রেমাখ্যান লিখতে কলম ধরিয়েছিল। কবি আর নাট্যকার তাঁদের মন্ময়তায়-তন্ময়তায় যে জগৎ রচনা করেন, তার চেয়েও ভিন্ন কোনো ভাষা অনুসন্ধান করতে হলে বাংলা নাট্যের সংগীতের ঐতিহ্যের দ্বারস্থ হতেই হয়। কারণ সেখানে অনেক কথা না বলেও বলা হয়ে যায়। “নীলাখ্যান” প্রযোজনাতেও সেই প্রয়াস রয়েছে।’

নাটকটির বিভিন্ন চরিত্র অভিনয় করেছেন কোনাল আলী, শাহিনুর প্রিতী, সুরেলা নাজিম, সুমাইয়া তাইয়ুম, নূর আক্তার, মানিক চন্দ্র দাশ, জাহিদ কামাল চৌধুরী, ফেরদৌস ইকরাম, আমিনুল আশরাফ, শিবলী সরকার, শাহরিয়ার হোসেন পলিন, তারেকেশ্বর তারোক, মো. আহাদ, রাসেল আহমেদ, রাজীব হোসেন, ইকবাল চৌধুরী, স্বপ্নিল, মো. শাহনেওয়াজ ও মীর জাহিদ হাসান।

১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করে মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবিরাম নাট্যচর্চায় মহাকাল নাট্যসম্প্রদায় ৪০টি নাট্য প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে এবং ইতিমধ্যে প্রযোজনাগুলোর ১০১৯টি প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে এবং ২টি নাট্য প্রযোজনার শতাধিক মঞ্চায়ন এবং ১টি প্রযোজনার ১৫০তম মঞ্চায়ন সম্পন্ন করেছে। মঞ্চে ৪টি প্রযোজনা নিয়মিতভাবে মঞ্চায়ন করে যাচ্ছে।