'আমি কঙ্গনাকে ধর্ষণ করিনি'

কঙ্গনা রনৌত ও আদিত্য পাঞ্চলি
কঙ্গনা রনৌত ও আদিত্য পাঞ্চলি

২০১৭ সালের এক সাহসী দিনে কঙ্গনা বলেছিলেন, ‘আমার বয়স তখন ১৭ বছর। আর ওই বয়সে এমন একজন মানুষ আমাকে ধর্ষণ করে, যার বয়স আমার বাবার বয়সের সমান।’ পরে কঙ্গনা আর রাখঢাক না রেখে নামও ফাঁস করে দেন। জানালেন, যিনি তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন, তিনি অভিনেতা, প্রযোজক ও প্লেব্যাক শিল্পী আদিত্য পাঞ্চলি। জবাবে ৫৪ বছর বয়সী আদিত্য পাঞ্চলি শুধু বলেছিলেন, ‘কঙ্গনা একটা পাগল। এসব বলে কঙ্গনা আমার আর আমার পরিবারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’

এরপর আদিত্য পাঞ্চলি তাঁর সঙ্গে কী করেছেন, তার পুরো বর্ণনা সামনে আনেন কঙ্গনা। জানান, আদিত্যর মেয়ের চেয়ে তিনি এক বছরের ছোট। তখন কঙ্গনা ‘কুইন’ বা তারকা কিছুই হননি। বলিউডে একেবারেই নতুন। ওই সময় আদিত্য পাঞ্চলি নবাগত কঙ্গনাকে মুম্বাইয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কঙ্গনার বন্ধুদের যাওয়ার অনুমতি ছিল না। দিনের পর দিন কঙ্গনাকে প্রায় গৃহবন্দীর মতো কাটাতে হয় সেই ফ্ল্যাটে। শুধু আদিত্য পাঞ্চলি যেতে পারতেন সেখানে।

মিডিয়াতে যখন প্রতিদিন সংবাদপত্রে এসব খবর ছাপা হচ্ছিল, টিভি আর অনলাইন নিউজ মিডিয়াগুলো যখন আদিত্য পাঞ্চলির কুকীর্তি প্রকাশে ব্যস্ত, তখন কঙ্গনার নামে মানহানির মামলা ঠুকে দেন আদিত্য। আর গত এপ্রিল মাসে আদিত্য পাঞ্চলির বিরুদ্ধে কঙ্গনাকে শারীরিক নিগ্রহ ও হেনস্তা করার অভিযোগ এনে ভারসোভা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কঙ্গনার বোন ও ম্যানেজার রঙ্গোলি চান্ডেল। এমনকি আদিত্য পাঞ্চলির এই নিগ্রহের ঘটনার বিষয়ে তাঁর স্ত্রী জরিনা ওয়াহাবও সব জানেন বলে দাবি করেন কঙ্গনার বোন। পুলিশের এক কর্মকর্তা তখন বলেছেন, ‘আমরা কঙ্গনার বক্তব্য রেকর্ড করেছি। ঘটনাটি ১৩ বছর আগের। আমাদের অনেক তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে হবে।’

আদিত্যর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে কঙ্গনা নাকি একসময় ছুটে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী জরিনা ওয়াহাবের কাছে। কিন্তু সেখানে কোনো ভরসা তো পাননি, বরং জরিনার কথায় আরও হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। সেখানে ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশ মিথ্যা আশ্বাস আর আদিত্যকে সতর্ক করে সেখানেই যবনিকা টানে সেই অভিযোগের। কিন্তু কঙ্গনা তো ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন। তিনি এবার আদাজল খেয়ে নেমেছেন। ধর্ষণের মামলা ঠুকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পুরো বিষয়টি দেখছেন তাঁর আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিক। অন্যদিকে, আদিত্য পাঞ্চলি এখনো দুদিকে মাথা নাড়াচ্ছেন। এখন দাবি করছেন, কঙ্গনাকে ধর্ষণ করেননি তিনি।

আদিত্য পাঞ্চলি পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, ‘বহুদিন ধরেই কঙ্গনা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। এমনকি এই বিষয় নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলেও কঙ্গনা মুখ খুলেছে। শুধু তা-ই না, আমার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে টেনে আনা হয়েছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি সব মিথ্যা অভিযোগ মেনে নিয়ে বসে থাকার পাত্র নই।’

গত সপ্তাহে আদিত্য পাঞ্চলি পুলিশকে লিখিত দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ নাকি মিথ্যে। কঙ্গনার আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিক নাকি আদিত্যকে কঙ্গনার বিরুদ্ধে আনা মানহানির মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়েছেন। আদিত্য বলেন, ‘কঙ্গনার আইনজীবী আমাকে হুমকি দেন। আমি মানহানির মামলা তুলে না নিলে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হবে। আমি তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে ১৮ মিনিটের কথোপকথনের ভিডিও পুলিশের কাছে জমা দিয়েছি।’

আদিত্য তাঁর লিখিত বক্তব্যে সব ধরনের যৌন হেনস্তা ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশকে ‘দ্রুত ও কার্যকর’ পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।