দর্শকহীন খুলনার সিনেমা হল

ঈদের ছুটির এ সময় বৈকালিক শোতে সিনেমা হলের সামনে ভিড় থাকবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু এবারের ঈদুল ফিতরে দর্শকের সাড়া তেমন নেই। এ জন্য হলমালিকেরা ঈদের দিনের বৈরী আবহাওয়া ও বিশ্বকাপ খেলাকে দায়ী করছেন। খুলনার লিবার্টি সিনেপ্লেক্স থেকে আজ তোলা। ছবি: সাদ্দাম হোসেন
ঈদের ছুটির এ সময় বৈকালিক শোতে সিনেমা হলের সামনে ভিড় থাকবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু এবারের ঈদুল ফিতরে দর্শকের সাড়া তেমন নেই। এ জন্য হলমালিকেরা ঈদের দিনের বৈরী আবহাওয়া ও বিশ্বকাপ খেলাকে দায়ী করছেন। খুলনার লিবার্টি সিনেপ্লেক্স থেকে আজ তোলা। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

ঈদ উপলক্ষে খুলনা নগরের পাঁচটি সিনেমা হলে চলছে তিনটি ছবি। কিন্তু ঈদের দিন থেকে বৃষ্টি আর ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার কারণে আশানুরূপ দর্শক পাচ্ছে না সিনেমা হলগুলো। ঈদের চতুর্থ দিনে অনেকটা দর্শকহীন ছিল হলগুলো।

খুলনা নগরের শঙ্খ সিনেমা হলে ঈদের দিন দুপুর ১২টা থেকে চলছে শাকিব খান ও মো. ইকবাল প্রযোজিত এবং মালেক আফসারী পরিচালিত ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি। নতুন ওই ছবি একই সঙ্গে চলছে নগরের খালিশপুর এলাকার লিবার্টি সিনেমা হলেও। সোসাইটি সিনেমা হলে চলছে উত্তম আকাশ পরিচালিত ‘বয়ফ্রেন্ড’।
এ ছাড়া সঙ্গীতা সিনেমা হলে চলছে সাকিব সনেট অ্যান্ড টিম পরিচালিত ছবি ‘নোলক’। ছবিটি একই সঙ্গে চলছে খালিশপুর এলাকার চিত্রালী সিনেমা হলেও।


আজ শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত খুলনা নগরের শঙ্খ, সোসাইটি ও সঙ্গীতা সিনেমা হল ঘুরে দেখা গেছে, দর্শক নেই বললেই চলে। দর্শক হিসেবে যাঁরা আছেন, বেশির ভাগই খুলনা শহরের বাইরের। বিশেষ করে কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা ও দূরবর্তী উপজেলার দর্শকই বেশি। ওই সময়ে পরিবার নিয়ে এসেছেন এমন কোনো দর্শক চোখে পড়েনি। অপেক্ষাকৃত স্বল্পশিক্ষিত ও উঠতি বয়সের ছেলে–মেয়েদের সংখ্যা ছিল বেশি। বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে আনন্দ করতে ছবি দেখতে এসেছেন তাঁরা।

শঙ্খ সিনেমা হলের গেটে কথা হয় আসাদুর রহমান নামের একজন দর্শকের সঙ্গে। তিনি তাঁর কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে এসেছেন তেরখাদা উপজেলা থেকে।

আসাদুর জানান, বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করতেই শহরে এসেছেন। সারা দিন ঘোরাঘুরি করার পর দুপুরে ছবি দেখে বিকেলে বাড়ি যাবেন।

ওই সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, হলটিতে দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় এক হাজার। ঈদের দিন প্রথম শোতে দর্শকের চাপ ছিল কিছুটা বেশি, তবে আশানুরূপ নয়। অন্যান্য শোতে বিশেষ করে ঈদের দিন ও পরের দিন দর্শকের চাপ থাকে সবচেয়ে বেশি। মাঝেমধ্যে হাউসফুলও হয়ে যায়। তবে এবার তেমনটি নেই। গতকাল তিনটার শোতে প্রায় দেড় শ জন দর্শক হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওই সিনেমা হল–সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজন জানান, দর্শক হিসেবে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁদের বেশির ভাগই উঠতি বয়সের। খুলনা নগরের বাইরের দর্শকই বেশি।

খুলনার চিত্রালী হলের সামনে থেকে আজ তোলা। ছবি: সাদ্দাম হোসেন
খুলনার চিত্রালী হলের সামনে থেকে আজ তোলা। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

সোসাইটি সিনেমা হলটি অনেক পুরোনো। ওই হলে গতকাল বেলা তিনটার শোতে দর্শক ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন। ওই সিনেমা হলের কাউন্টারম্যানসহ অন্যদের বাইরে দাঁড়িয়ে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। কাউন্টারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন সিনেমা দেখার দর্শক খুবই কম। বিশেষ করে ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের খেলা থাকায় দর্শকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। খরচ ওঠানো নিয়েই চিন্তায় আছেন কর্মকর্তারা। সিনেমা হলটির দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় সাড়ে ৫০০ বলে জানান তিনি।

সঙ্গীতা সিনেমা হলে দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৮০০। ঈদের দিন ওই হলে সাড়ে ৩০০–র বেশি দর্শক হলেও গতকাল ছিল খুবই কম। ওই হলের কাউন্টারম্যান নাসির উদ্দীন জানান, ঈদের দিন দর্শকের চাহিদা থাকলেও পরপর দর্শক কমে যাচ্ছে। পরিবার নিয়ে কেউ আসছেন না বললেই চলে। গতকাল তিনটার শোতে হলটিতে দর্শক ছিল ১০০ জনের কম।

খালিশপুর এলাকার লিবার্টি সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক মো. শাহজাদা ইমরান বলেন, ঈদের প্রথম দুই দিন তাঁর হলে মোটামুটি দর্শকের সমাগম হয়েছিল। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করেই দর্শক অনেক কমে গেছে। খেলার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।