যেভাবে এল বিশ্ব সংগীত দিবস

২০১৯ সালের ২১ জুন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজনে বিশ্ব সংগীত দিবস উপলক্ষে সংগীত শিল্পীরা শোভাযাত্রা করে।ফাইল ছবি: দীপু মালাকার

সংগীতপ্রেমীদের কাছে অবশ্য গানের জন্য আলাদা কোনো দিন বা সময় নেই। গান ২৪ ঘণ্টার, ৩৬৫ দিনের। তবে বিশেষভাবে উদ্যাপনের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিন রয়েছে। গানের জন্যই বিশেষ দিবস এই বিশ্ব সংগীত দিবস। আজ ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস। এই দিন ঘিরে নানা দেশে নানা ধরনের আয়োজন হয়েছে। বাংলাদেশেও সংক্ষিপ্ত পরিসরে উদ্​যাপিত হয় দিনটি। আজ আমরা আবার জানব এই দিবসের টুকিটাকি।

প্রথম সংগীত দিবস

সংগীত দিবস এখন ২১ জুন উদ্​যাপিত হয়। কিন্তু, এটি প্রথম কবে উদ্​যাপিত হয়েছিল? আর দিবসটি উদ্​যাপন করেছিলই–বা কে? মূলত, ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে ‘ফেত দ্য লা মিউজিক’ বা ‘মেক মিউজিক ডে’ নামে একটি দিনের উদ্​যাপন শুরু করা হয়। ফ্রান্সের সংস্কৃতিমন্ত্রী জ্যাক ল্যাং ১৯৮১ সালে এ ব্যাপারে প্রথম চিন্তা শুরু করেন। তবে এ তো গেল ইতিহাসের একটি অংশ।

অনেকের মতে, ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সে মার্কিন সংগীতশিল্পী জোয়েল কোহেন ‘সামার সোলস্টাইস’ বা গ্রীষ্মকে উদ্​যাপন করতে সারা রাত গান চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবনার পরবর্তী ফলাফল হিসেবেই আসে ২১ জুনের সংগীত দিবস। বর্তমানে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ প্রায় ১২০টি দেশে এবং ৪৫০টি শহরে এই দিবস উদ্​যাপিত হয়। রেস্তোরাঁ, পার্ক, যানবাহন—সংগীত দিবসে সর্বত্র বিনা মূল্যে গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। শান্তি ও ইতিবাচক চিন্তাকে ছড়িয়ে দিতে দিবসটিকে ব্যবহার করা হয়।

বিশ্ব সংগীত দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমী থেকে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষেদর শোভাযাত্রা
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

সংগীত নিয়ে জ্যাক ল্যাং-এর মতো করে ফ্রান্সে খুব বেশি মানুষ ভাবেননি। তিনি ফ্রান্সের প্রথাগত গানের ধারাকে ভাঙতে মরিস ফ্লুরেটকে নিয়োগ দেন। ফ্লুরেট ১৯৮২ সালে বিশাল এক পরিসংখ্যান চালান। এই পরিসংখ্যানে উঠে আসে সংগীত নিয়ে কাজ করা প্রচুর মানুষের কথা। সে সময় ফ্রান্সে প্রতি দুইজন তরুণের মধ্যে একজন কোনো না কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। সব নিয়ম পাশে রেখে ঘোষণা দেওয়া হয় নতুন এক ধারার।

যেখানে তরুণেরা শুধু চিরাচরিত সংগীত শিখবেন না, শিখবেন রক, জ্যাজ, পপ—সব ধারার সংগীত। আর শেষমেশ জ্যাক ল্যাং, প্রকৌশলী ক্রিস্টিয়ান ডুপাভিলন আর মরিস ফ্লুরেটের চেষ্টায় এই উদ্যোগ সফলও হয়েছিল।

বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে আজ ও আগামীকাল দুই দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে

এ বছরের সংগীত দিবস

বরাবরের মতো ২০২৩ সালেও ‘বিশ্ব সংগীত দিবস’ পালিত হচ্ছে বিশ্বের নানা দেশে।বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে আজ ও আগামীকাল দুই দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আয়োজনে থাকছে আলোচনা সভা, সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। প্রতিদিন বিকেল চারটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে গান গাইবেন সরদার রহমতুল্লাহ, অঞ্জলি চৌধুরী, চম্পা বণিক, মায়েশা সুলতানা উর্বি, রোকাইয়া হাসিনা, নীতা, রজত দত্ত, উদয় শংকর বসাক, শ্যামল কুমার পাল, দিলদার হোসেন মুক্তারসহ বিভিন্ন গানের দল।