নেপালের নাটক ঢাকায়

নেপালের নাট্যদল মান্দালা থিয়েটারের ‘ঝিয়ালিঞ্চা’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি সংগৃহীত।
নেপালের নাট্যদল মান্দালা থিয়েটারের ‘ঝিয়ালিঞ্চা’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি সংগৃহীত।

সত্যিকারের এক আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমিতে। যেখানে নানা দেশের নানা ভাষার নাটক দেখার সুযোগ ঘটেছে ঢাকার দর্শকদের। সেই সুবাদে সোমবার সন্ধ্যায় তারা আগ্রহভরে দেখেছেন নেপালের নাটক। 

সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ নাট্যদল মান্দালা থিয়েটার পরিবেশন করে ‘ঝিয়ালিঞ্চা’ শিরোনামের প্রযোজনা। সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের পঞ্চম দিনে পরিবেশিত হলো নাটকটি। কুমার নাগর কোটির ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন ডায়াহাঙ রাই।

নাটকের একটি চরিত্র হাসাবির। তিনি লেখক। তাঁর লেখা জনপ্রিয় উপন্যাস ‘ঝিলঞ্চা’ (ড্রাগনফ্লাই) নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের সূত্র ধরে নাটক এগোয়। যদিও হাসাবিরা সশস্ত্র সংঘাতের সময়কে কেন্দ্র করে এই উপন্যাস লিখেছেন। তবে এর প্রধান নারী চরিত্র সম্পর্কে তাঁর কোনো বিশেষ ধারণা ছিল না। হাসাবিরা তাঁর বাগানে আসা একটি বেগুনি রঙের ফড়িং দেখেই দারুণ মুগ্ধ হন। এটি তাঁকে এক মায়াময় কল্পনার জগতে নিয়ে যায়। এটিই মূলত তাঁর উপন্যাসের মূল ঘটনা। উপন্যাসটি লেখার সময় হাসাবিরার মধ্যে এক ধরনের পাগলামি দেখা দেয়। তিনি ভাবেন, চরিত্রায়ণ তাঁকে অনুসরণ করছে। উপন্যাসের শেষ দিকে তাঁর পোষা সরীসৃপ বাগানের ফড়িংটি খেয়ে ফেলে। এরপর শুরু হয় আসল গল্প। দূরবর্তী গ্রামের এক তরুণীর আত্মা ফড়িংয়ে রূপান্তর হয়ে চারপাশে ঘুরতে থাকে। সশস্ত্র সংঘাতের সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে অপহরণ করে বিদ্রোহীদের খাবার সরবরাহের কাজে ব্যবহারের জন্য। তাকে তখন ধর্ষণ করে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হয় জঙ্গলে। কিন্তু গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় ওই তরুণীর নাম ছিল না। তরুণীর মা বিশ্বাস করতেন, তাঁর মেয়ে ফড়িং হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একদিন সে বাড়ি ফিরে আসবে। তরুণীটি বলার চেষ্টা করে হাসাবিরার পোষা সরীসৃপ তাকে খেয়ে ফেলেছে। ফলে তার আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এভাবেই শেষ হয় নাটক। দুই চরিত্রের ৬০ মিনিটের নাটকটিতে অভিনয় করেছেন বিজয় বরাল ও রঞ্জনা অলি।

কুমার নাগরকোটির ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন ডায়াহাঙ রাই ছবি সংগৃহীত
কুমার নাগরকোটির ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন ডায়াহাঙ রাই ছবি সংগৃহীত

এবারই প্রথম সরাসরি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দেশে আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবের আয়োজন হচ্ছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বৃহস্পতিবার থেকে চলছে এ নাট্যোৎসব। শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এ উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশসহ সাত দেশ। প্রতিটি নাটকই শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হচ্ছে।
মঙ্গলবার উৎসবের ষষ্ঠ দিনের সন্ধ্যায় দর্শকেরা দেখবেন ভিয়েতনামের লে নক থিয়েটারের নাটক ‘কিম তু’। বুধবার সমাপনী দিনে থাকবে দারুণ এক আয়োজন। আলোকরশ্মির ব্যবহারে রাশিয়ার নিকোলাই জাইকভ থিয়েটার উপস্থাপন করবে ‘লাইট পাপেট শো’।