বাজেটে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বেড়েছে: প্রতিমন্ত্রী

শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ ২০১৯’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ছবি: প্রথম আলো
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ ২০১৯’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃব্য দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ছবি: প্রথম আলো

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, এবারের বাজেট নিয়ে সংস্কৃতিজনদের মধ্যে কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে। তাঁদের ধারণা, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গতবারের মূল বাজেটের চেয়ে এবার বাজেট ৬০ কোটি টাকা বেড়েছে।

বরাদ্দের বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বিভাগে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দসহ গতবারের বাজেট হিসাব করা হচ্ছে। এবারের বাজেটেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের জন্য বিশেষ বরাদ্দ থাকবে, যা গতবারের বিশেষ বরাদ্দের চেয়ে অনেক বেশি হবে। সব মিলিয়ে এবারের বাজেট গতবারের চেয়ে অনেক বেশি হবে।

প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের (বাংলাদেশের কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীদের) স্মরণে মাসব্যাপী ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ ২০১৯’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আয়োজক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কবি-শিল্পী-সাহিত্যিকেরা সমাজের গুণীজন, তাঁরা আলোর বার্তাবাহক। কে এম খালিদ বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ৪৫ জন প্রয়াত বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের স্মরণে অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। ভবিষ্যতে সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, নাট্যকার, অভিনয়শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, আবৃত্তিকারসহ সংস্কৃতির সব শাখার বরেণ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তিপূর্বক এ সংখ্যা এক শতে উন্নীত করা হবে।

প্রদীপ জ্বালিয়ে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ ২০১৯’ উদ্বোধন করেন অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
প্রদীপ জ্বালিয়ে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ ২০১৯’ উদ্বোধন করেন অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন সংগীতজ্ঞ অধ্যাপক আ ব ম নূরুল আনোয়ার, বাংলাদেশ থিয়েটার আর্কাইভের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুস সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী জামাল আহমেদ, আলোকচিত্রশিল্পী পাভেল রহমান, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান এবং চলচ্চিত্র সংসদ কর্মী ও আলোকচিত্রী মুনিরা মোরশেদ মুন্নী। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব মো. বদরুল আনাম ভূঁঞা।
এর আগে প্রদীপ প্রজ্বালন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। উদ্বোধনীতে প্রয়াত গুণীজনদের স্মৃতির প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রয়াত গুণীজনের তালিকা এবং ছবি প্রদর্শন করা হয়।
উদ্বোধনী দিনে শচীন দেববর্মনের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে আলোচনা, ভিডিও চিত্র প্রদর্শন এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল। ‘ছন্দে বর্ণে’ গানের সঙ্গে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। ‘ঝিলমিল ঝিলমিল ঝিলের জলে’ গানের সঙ্গে দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন, ‘নিটোল পায়ে রিনিক ঝিনিক’ গানের সঙ্গে বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টসের শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নাই’ এবং ‘নিশিথে যাইয়ো ফুল বনে’ গান দুটি শোনান শিল্পী হৈমন্তী রক্ষিত। ‘তুমি এসেছিলে পরশু’ এবং ‘তুমি গিয়াছ বকুল বিছানো পথে’ শোনান শিল্পী সন্দীপন। ‘পিয়া বিনা বাঁশিয়া বাজেনা’ এবং ‘তুম না জানে কিস জাহানে’ শোনান অনুপমা মুক্তি। এ ছাড়া একক সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়। সবশেষে পরিবেশিত হয় মুনীর চৌধুরী রচিত আইরিন পারভিন লোপা নির্দেশিত আবদুল্লাহ আল–মামুন থিয়েটার স্কুলের পরিবেশনায় ‘কবর’ নাটকের অংশবিশেষ।
২ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে পর্যায়ক্রমে শিল্পীদের স্মরণ অনুষ্ঠানে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।