বাংলাদেশের রাঢ়াঙ, ভিয়েতনামের 'কিম তু'

জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ ভিয়েতনামের লে নখ থিয়েটারের নাটক ‘কিম তু’ এর একটি দৃশ্য ছবি সংগৃহীত
জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ ভিয়েতনামের লে নখ থিয়েটারের নাটক ‘কিম তু’ এর একটি দৃশ্য ছবি সংগৃহীত

এক সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির দুই মঞ্চে দুই দেশের নাটক দেখল ঢাকার দর্শক। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়েছে আরণ্যক নাট্যদলের দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘রাঢ়াঙ’। অন্যদিকে নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়েছে ভিয়েতনামের লে নখ থিয়েটারের নাটক ‘কিম তু’। দুটি নাটকে দর্শকের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল।

সব মিলে বলতে হয়, ঢাকার নাট্যাঙ্গন এখন দারুণ সরগরম। প্রতিদিন একসঙ্গে একাধিক নাটক দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শক। তারা পাচ্ছেন মানসম্পন্ন নাটক বেছে নেওয়ার সুযোগ। বিদেশের পাশাপাশি পুরোনো নাটক ফিরে আসছে মঞ্চে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের ষষ্ঠ দিনের সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় ‘কিম তু’। নাটকটি লিখেছেন প্রখ্যাত চীনা নাট্যকার ক্যাও ইউ। প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন হ্যানয় একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড আটের শিক্ষক সুয়া সু পং। নাটকটির গল্প আনা হয়েছে চীনা শেক্সপিয়ারখ্যাত বিংশ শতাব্দীর অন্যতম চৈনিক লেখক কাওযুর ‘দ্য ওয়াইল্ডনেস’ থেকে। যেখানে দেখানো হয়েছে মানবহৃদয়ে প্রেম-প্রতারণা, শুভ-অশুভ কতটা পাশাপাশি এবং দখলদারির মনোভাব নিয়ে অধিষ্ঠান।

পরীক্ষণ থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয় আরণ্যকের নাটক ‘রাঢ়াঙ’। ফাইল ছবি
পরীক্ষণ থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয় আরণ্যকের নাটক ‘রাঢ়াঙ’। ফাইল ছবি

আরণ্যকের রাঢ়াঙ নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ। দূরাগত মাদলের ধ্বনির সঙ্গে শোষিত সাঁওতালদের জেগে ওঠার আহ্বান জানানো হয়েছে এই নাটকে। প্রযোজনাটিতে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ঘাত-প্রতিঘাত, হাসি-কান্না, জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ ও হত্যার নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে। নাটকের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে, ২০০০ সালে নওগাঁর সাঁওতালদের ভূমি বিদ্রোহ নিয়ে। এ বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন তরুণ আলফ্রেড সরেন। তাঁর নেতৃত্বে সাঁওতালদের সেই বিদ্রোহ দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিল। বিদ্রোহ দমাতে না পেরে জোতদারের দল আলফ্রেড সরেনকে হত্যা করেছিল। তাঁর সেই আত্মদানের গল্প মিশে আছে নাটকের ঘটনাপ্রবাহে। সব মিলিয়ে সাঁওতালদের দীর্ঘ সংগ্রামের বিশাল উত্তরাধিকারকে মেলে ধরার প্রয়াস ‘রাঢ়াঙ।’ নাটকে আলফ্রেড সরেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, আ খ ম হাসান, তমালিকা কর্মকারসহ আরণ্যকের অভিনয়শিল্পীরা।

কাল বুধবারও আলাদা দুটি মঞ্চে দুটি প্রদর্শনী রয়েছে। এদিন উৎসবের সমাপনী দিনে সন্ধ্যা সাতটায় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আলোকরশ্মির ব্যবহারে রাশিয়ার নিকোলাই জাইকভ থিয়েটার উপস্থাপন করবে ‘লাইট পাপেট শো’। অন্যদিকে নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে বটতলার দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘খনা’র সত্তরতম প্রদর্শনী।