তথ্য মন্ত্রণালয়ে টেলিভিশনের চার নেতার ১৯ সুপারিশ

তথ্য মন্ত্রণালয়ে টেলিভিশনের চার নেতার ১৯ সুপারিশ
তথ্য মন্ত্রণালয়ে টেলিভিশনের চার নেতার ১৯ সুপারিশ

বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠান ও সংবাদ প্রচারে নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত করেছে সরকার। এ বিষয়ে মতামত নিতে সংশ্লিষ্ট চার সংগঠনের নেতাদের মন্ত্রণালয়ে ডেকেছিল তথ্য মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার বিকেলে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা, ডাইরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইরেশ যাকের এবং অভিনয় শিল্পী সংঘের নবনির্বাচিত সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম। তথ্যসচিবের কাছে ১৯টি সুপারিশ দেন নেতারা।

তিন বছর আগে দেশের নাট্য-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর শিল্পী-কলাকুশলীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, ডাবিং করা বিদেশি ধারাবাহিক দেশীয় টেলিভিশনে প্রচার করা যাবে না। কারণ, বিদেশি ধারাবাহিক প্রচারের কারণে দেশীয় নাট্যশিল্প হুমকির মুখে পড়ছে। এই হুমকি মোকাবিলায় নাটকের সব সংগঠন ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনের (এফটিপিও) ব্যানারে সেই আন্দোলন করে। যদিও সেই আন্দোলনের সুফল এখনো পাওয়া যায়নি।
সেবার শিল্পী ও কলাকুশলীরা মাঠে নেমেছিলেন ৫ দফা দাবি নিয়ে, যা পরবর্তী সময়ে ৮ দফায় পরিণত হয়। কিন্তু কোনো দফাই কার্যকর না হওয়ায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছিল সংগঠনটি।
সেই আন্দোলন তথা শিল্পী-নির্মাতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ডাকা হয়েছিল বলে প্রথম আলোকে জানান অভিনয় শিল্পী সংঘের নবনির্বাচিত সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম। মন্ত্রণালয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে আজ তথ্যসচিব আবদুল মালেকের সঙ্গে আলোচনা সভায় বসেন নাট্য প্রযোজক, পরিচালক, অভিনয়শিল্পী ও লেখক সমিতির চার সভাপতি—ইরেশ যাকের, সালাহউদ্দিন লাভলু, শহীদুজ্জামান সেলিম ও মাসুম রেজা।
তথ্যসচিবের সঙ্গে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা আলোচনা হয়। শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমরা ১৯টি সুপারিশ নিয়ে গিয়েছিলাম মন্ত্রণালয়ে। তথ্যসচিব শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি প্রতিটি সুপারিশ যথাযথ মনে করেছেন। সেগুলো বাস্তবায়ন হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন।’
২০১৬ সালের নভেম্বরে ‘ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন’ (এফটিপিও) শিরোনামে প্ল্যাটফর্মে আন্দোলন শুরু করেছি সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। নাট্যজন মামুনুর রশীদকে আহ্বায়ক ও গাজী রাকায়েতকে সদস্যসচিব নির্বাচিত করে এই আন্দোলনে মাঠে নামেন দেশের সর্বস্তরের টিভি শিল্পী-কুশলীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় জমায়েত হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে, ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর।
এফটিপিও নেতারা সেদিন কণ্ঠে তুলেছিলেন কিছু যৌক্তিক দাবি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বেসরকারি চ্যানেলগুলোতে বাংলায় ডাবকৃত বিদেশি সিরিয়াল বা অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ করা, টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ, ক্রয় ও প্রচারের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট/এজেন্সির হস্তক্ষেপ ছাড়া চ্যানেলের অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা, টেলিভিশন শিল্পের সর্বক্ষেত্রে এআইটির ন্যূনতম ও যৌক্তিক হার পুনর্নির্ধারণ করা, দেশের টেলিভিশন শিল্পে বিদেশি শিল্পী-কলাকুশলীদের অবৈধভাবে কাজ করা বন্ধ করা, ডাউনলিংক ফিতে সমতা আনা, দেশের বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে প্রচার না করা ইত্যাদি।