কাল শুরু হচ্ছে জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী

২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর ঘোষণা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। ছবি প্রথম আলো
২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর ঘোষণা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। ছবি প্রথম আলো

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী দেশের চারুশিল্পের বৃহত্তম উৎসব। ১৯৭৪ সালে সমকালীন চিত্রকলা প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিষয়ক কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এ কর্মকাণ্ডের সূত্র ধরে ১৯৭৫ সালে শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে প্রথম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর যাত্রা শুরু। প্রতি দুই বছর পর পর শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এ প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে কাল শুরু হবে ২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী।

কাল থেকে শুরু হয়ে এবারের আসরটি চলবে ২১ জুলাই পর্যন্ত। যেখানে দেশের ৩১০ জন শিল্পীর ৩২২টি শিল্পকর্ম স্থান পাবে। প্রদর্শনীর উদ্বোধন ছাড়াও কাল ৮টি পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বিজয়ী শিল্পীদের হাতে। এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্মের জন্য ২ লাখ টাকার পাবেন একজন শিল্পী। এ ছাড়া চারটি বিভাগীয় চিত্রকলা, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, নিউ মিডিয়া সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হবে, যার আর্থিক মূল্যমান এক লাখ টাকা। এ ছাড়া থাকবে ১ লাখ টাকা অর্থমূল্যের বেঙ্গল ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের দীপা হক পুরস্কার ও ৫০ হাজার টাকার মূল্যের চিত্রশিল্পী কাজী আলোয়ার হোসেন পুরস্কার।

আজ রোববার বিকেলে জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। তিনি জানান, কাল বিকেল ৫টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও বিজয়ী শিল্পীদের পুরস্কার দেবেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম।

১ জুলাই শুরু হয়ে ২১ জুলাই পর্যন্ত চলেব ২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী
১ জুলাই শুরু হয়ে ২১ জুলাই পর্যন্ত চলেব ২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার জন্য ৮৫০ জন শিল্পী আবেদন করেছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে শিল্পকর্ম বাছাই কমিটিতে ছিলেন শিল্পী নাসরিন বেগম, শিল্পী মোস্তাফিজুল হক, শিল্পী শেখ সাদী ভূইয়া, শিল্পী মোহাম্মদ ইকবাল ও শিল্পী আনিসুজ্জামান। তাঁরা আবেদনকৃত শিল্পীদের মধ্যে ৩১০ জন শিল্পীর ৩২২টি শিল্পকর্ম বাছাই করেছেন। এর মধ্যে ১৫৯টি চিত্রকলা, ৪৫টি ভাস্কর্য, ৫০ টি ছাপচিত্র, ১৭টি কারুশিল্প, ৮টি মৃৎশিল্প, ৩৭টি স্থাপনা ও ভিডিও আর্ট, ৭টি কৃৎকলা (পারফরম্যান্স আর্ট)। এসবের মধ্যে কাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চূড়ান্তভাবে পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কারের জন্য সেরা শিল্পকর্ম বাছাইয়ে বিচারক হিসেবে ছিলেন শিল্পী আবদুস শাকুর শাহ, স্থপতি শামসুল ওয়ারেস, শিল্পী রণজীৎ দাস, শিল্পী ফরিদা জামান ও শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস।

একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘জাতীয় সংস্কৃতির গৌরবময় বিকাশকে অব্যাহত রাখতে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলার চর্চা ও বিকাশের উদ্দেশ্যে শিল্পসংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা। প্রতি দুই বছর পর পর একাডেমির চারুকলা বিভাগ নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী, দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী আয়োজনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রদর্শনী আয়োজন করে থাকে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব বদরুল আনম ভূঁইয়া, চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী আশরাফুল আলম পপলু, উপপরিচালক এ এম মোস্তাক আহমেদ, সহকারী পরিচালক মো. আবদুল রাকিবিল বারী, জনসংযোগ কর্মকর্তা হাসান মাহমুদ, শিল্পী সুজন মাহাবুব প্রমুখ। চারুকলা বিভাগের পরিচালক বলেন, ‘আমাদের যেসব বরেণ্য শিল্পী আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কোনো না কোনো সময় জাতীয় এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তাই চারুশিল্পীদের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন।’