জাতীয় চারুকলা পুরস্কার পেলেন যাঁরা

অতিথিদের সঙ্গে জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর এবারের বিজয়ীরা। ছবি: প্রথম আলো
অতিথিদের সঙ্গে জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর এবারের বিজয়ীরা। ছবি: প্রথম আলো

আট শিল্পীকে স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে সোমবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় শুরু হয়েছে ২৩ তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী। এবারে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন শিল্পী কামরুজ্জামান। সোমবার বিকেলে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় দুই লাখ টাকার অর্থ পুরস্কার। আজ থেকে শুরু হয়ে শুরু হয়ে ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে জাতীয় এ প্রদর্শনী।

আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শনী উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং বরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী আশরাফুল আলম পপলু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অংশগ্রহণকারী সকল শিল্পীকে অভিনন্দন জানিয়ে এইচ টি ইমাম সবাইকে উপযুক্ত মূল্য দিয়ে শিল্পকর্ম ক্রয় করার আহ্বান জানান।

শ্রেষ্ঠ শিল্পীর পুরস্কার নিচ্ছেন শিল্পী কামরুজ্জামান। ছবি: প্রথম আলো
শ্রেষ্ঠ শিল্পীর পুরস্কার নিচ্ছেন শিল্পী কামরুজ্জামান। ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জাতীয় চিত্রশালা এবং জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় চিত্রশালা ভবনের সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বর্তমান ভবনের ওপর আরও ৩টি তলা নির্মাণ করা হবে যাতে আধুনিক বেশ কয়েকটি গ্যালারির পাশাপাশি একটি বড় মিলনায়তন নির্মাণ করা হবে। এ বছরের কোনো এক সময়ে এর নির্মাণকাজ শুরু করা হবে বলে আশা করেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে একাডেমির যন্ত্রশিল্পীরা অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার ছাড়াও ‍চিত্রকলা, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, স্থাপনা-এই চারটি বিভাগে সম্মানসূচক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। যথাক্রমে পুরস্কারগুলো পেয়েছেন শিল্পী রাফাত আহমেদ বাঁধন, শিল্পী তানভীর মাহমুদ, শিল্পী রুহুল করিম রুমী, শিল্পী সহিদ কাজী। প্রতিটির আর্থিক মূল্যমান ১ লাখ টাকা। এ ছাড়া বেঙ্গল ফাউন্ডেশন পুরস্কার পেয়েছেন শিল্পী উত্তম কুমার তালুকদার যার মূল্যমান ১ লাখ টাকা। দীপা হক পুরস্কার পেয়েছেন সুমন ওয়াহিদ যার মূল্যমান ২০ হাজার টাকা ও চিত্রশিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেন পুরস্কার পেয়েছেন শিল্পী ফারিয়া খানম তুলি যার মূল্যমান ৫০ হাজার টাকা।

উদ্বোধনের পর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
উদ্বোধনের পর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

এবার প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার জন্য ৮৫০ জন শিল্পী আবেদন করেছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে শিল্পকর্ম বাছাই কমিটিতে ছিলেন শিল্পী নাসরিন বেগম, শিল্পী মোস্তাফিজুল হক, শিল্পী শেখ সাদী ভূইয়া, শিল্পী মোহাম্মদ ইকবাল ও শিল্পী আনিসুজ্জামান। তাঁরা আবেদনকৃত শিল্পীদের মধ্যে ৩১০ জন শিল্পীর ৩২২টি শিল্পকর্ম বাছাই করেছেন। এর মধ্যে ১৫৯টি চিত্রকলা, ৪৫টি ভাস্কর্য, ৫০ টি ছাপচিত্র, ১৭টি কারুশিল্প, ৮টি মৃৎশিল্প, ৩৭টি স্থাপনা ও ভিডিও আর্ট, ৭টি কৃৎকলা (পারফরম্যান্স আর্ট)। পুরস্কারের জন্য সেরা শিল্পকর্ম বাছাইয়ে বিচারক হিসেবে ছিলেন শিল্পী আবদুস শাকুর শাহ, স্থপতি শামসুল ওয়ারেস, শিল্পী রণজীৎ দাস, শিল্পী ফরিদা জামান ও শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস।
আজ শুরু হয়ে ২১ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা ও শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী।

প্রদর্শনীর একটি স্থাপনা শিল্পকর্মের সামনে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
প্রদর্শনীর একটি স্থাপনা শিল্পকর্মের সামনে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো