ঢাকার ছবি নেই, বাজারে কলকাতার ছবি
৫ জুলাই দেশের ৩৭টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে দেশীয় ছবি আব্বাস। ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি হলে এখনো চলছে ছবিটি। পরের সপ্তাহে ১২ জুলাই থেকে দেশের ৬৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে কলকাতা থেকে আমদানি করা ছবি কিডন্যাপ। ঈদের আগে আগামী তিন সপ্তাহে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির তালিকায় নেই নতুন কোনো দেশি ছবি। আছে কলকাতা থেকে আমদানি করা ছবি।
এর মানে পরের সপ্তাহ থেকে ঈদের আগপর্যন্ত সিনেমা হলগুলোয় নতুন কোনো বাংলাদেশি ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। এমনিতেই বাংলাদেশে ছবি নির্মাণ কমে গেছে, তার ওপর টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতের কলকাতার ছবিই হলে থাকছে—এ রকম ঘটনা আগে প্রায় ঘটেইনি বলা চলে।
১৯ জুলাই মুক্তি পাচ্ছে জিৎ, কোয়েল মল্লিক ও ঋত্বিকা অভিনীত কলকাতার ছবি শেষ থেকে শুরু, ২৬ জুলাই অঙ্কুশ ও নুসরাত ফারিয়া অভিনীত বিবাহ অভিযান, আগামী ২ আগস্ট মুক্তি পাবে সোহম, ওম ও শ্রাবন্তী অভিনীত ভূতচক্র। ১২ জুলাই মুক্তিপ্রাপ্ত কলকাতার কিডন্যাপ ছবিটি আমদানি করে বাংলাদেশে মুক্ত করেছে শাপলা মিডিয়া। শেষ থেকে শুরু ছবিটিও আনছে ওই একই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সেলিম খান বলেন, ‘কিডন্যাপ ছবিটি যাচ্ছে মোটামুটি। তবে আগামী সপ্তাহে শেষ থেকে শুরু ভালো যাবে আশা করছি।’
এদিকে আমদানিকারক ‘মোটামুটি’ বললেও কিডন্যাপ ছবিটি নিয়ে বিভিন্ন হলের কর্মকর্তারা খুশি নন। বলাকা হলের ব্যবস্থাপক সাজিদ আলী বলেন, কিডন্যাপ ভালো যাচ্ছে না। এমনিতেই হলে দর্শকস্বল্পতা, তার ওপরে আবার বৃষ্টি। সব মিলিয়ে অবস্থা খারাপই বলা চলে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের ছবি আব্বাস এই ছবির চেয়ে কিছুটা ভালো করেছে। ঢাকার মধুমিতা হলেও চলছে কিডন্যাপ। হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখারউদ্দিন নওশাদ জানিয়েছেন, ছবিটি তাঁর হলে মোটামুটি চলছে। তিনি বলেন, ‘আমার হলের পাশেই অভিসার ও রাজমনিতেও চলছে এই ছবি। ফলে দর্শক কিছুটা ভাগ হয়ে গেছে। খুব ভালো নয়, মোটামুটি চলছে। দেশীয় নতুন ছবি নেই। কী করব, লোকসান দিয়েই এই ছবি চালাচ্ছি। তা ছাড়া হল তো আর বন্ধ রাখতে পারি না। অল্প কিছুটা টাকা যা আসছে, তা-ই ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ছবি আগেই কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। পুরোনো ছবি তো আর কেউ দেখতে চায় না। দুই বাংলায় একসঙ্গে মুক্তি পেলে খুব ভালো যেত ছবিটি।’
সিনেপ্লেক্সেও কিডন্যাপ ছবির দর্শক সাড়া নেই। এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এখানে কিডন্যাপ-এর চারটা শো চলছে। দর্শকসংখ্যা করুণ। প্রতি শোতেই লোকসান। আমদানিতে আনা কলকাতার কোনো ছবিই তো দেখি চলে না।’
কেন এখন সিনেমা হলে বাংলাদেশের ছবি নেই, সে প্রশ্ন করা হলে পরিচালক শাহ আলম কিরণ বলেন, কিছু ছবি তৈরি আছে। কিন্তু ঈদের আগে বর্ষাবাদলার কারণে কেউ সেগুলো মুক্তি দিতে সাহস করছেন না। তবে এ কথা ঠিক, এখন ছবি তৈরি হচ্ছে কম। এত কমসংখ্যক ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রশিল্প এগিয়ে যেতে পারে না। চলচ্চিত্র তৈরি কমে যাওয়ার কারণও আছে। এক শাকিব খান ছাড়া আর কারও ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হচ্ছে না।