এলভিস প্রিসলিকে খুঁজে পেলেন পরিচালক

এলভিস প্রিসলি ও অস্টিন বাটলার
এলভিস প্রিসলি ও অস্টিন বাটলার

এলভিস প্রিসলি মৃত্যুর পর প্রায় চার দশক পর আজও তুমুল জনপ্রিয়। যুক্তরাজ্যের টপচার্ট অ্যালবামের তালিকার বিবেচনায় সেরা পুরুষ গায়ক হিসেবে নাম উঠে আসে ‘কিং অব রক অ্যান্ড রোল’ এলভিস প্রিসলি। নানাভাবে তিনি প্রাসঙ্গিক। তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র। ছবিটি নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছেন বাজ লারম্যান। অনেকে যাচাইবাছাই করে সম্প্রতি নির্বাচন করেছেন ছবির প্রিসলিকে। অস্টিন বাটলারকে পছন্দ করেছেন তিনি। ছবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যেতে পারে টম হ্যাঙ্কসকেও।

সম্প্রতি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে এলভিস প্রিসলি আর অস্টিন বাটলার পাশাপাশি দুটি ছবি দিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত প্রচার করেছেন পরিচালক বাজ লারম্যান। অস্টিন রবার্ট বাটলার ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার আনাহেমে জন্মগ্রহণ করেন। কুয়েন্টিন ট্যারেন্টিনোর ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন হলিউড’ ছবির গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন।

জানা গেছে, এক দরিদ্র শিল্পী থেকে এলভিস কীভাবে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় তারকা হয়ে উঠলেন, সেই গল্প পরিচালক বলবেন তাঁর ছবির মাধ্যমে, যেখানে এলভিস প্রিসলির জীবনের কাহিনিকে দুই ভাগে ভাগ করে দুটি সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন নির্মাতা। একটিতে ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত সাফল্যের গল্প দেখানো হবে। আরেকটিতে ৩৫ বছরের পরের ঘটনাগুলো দেখানো হবে।

ম্যানেজার টম পার্কারের সঙ্গে এলভিস প্রিসলি
ম্যানেজার টম পার্কারের সঙ্গে এলভিস প্রিসলি

ছবির চিত্রনাট্য লিখছেন ক্রেগ পার্সি। প্রযোজনা করবে ওয়ার্নার ব্রস। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে ছবিটির শুটিং শুরু হবে। ২০২০ সালে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

প্রস্তাবিত ছবিটিতে গল্পের সূত্রধর হিসেবে থাকবে এলভিস প্রিসলির ম্যানেজার টম পার্কারের চরিত্র। তাঁর সঙ্গে বেশ জটিল সম্পর্ক ছিল এলভিস প্রিসলির। যখন সংগীতের মঞ্চে প্রিসলি একদম নবাগত, তখন তাঁকে আবিষ্কার করেন পার্কার। এরপর তাঁকে প্রায় সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করে তোলেন। প্রিসলির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পার্কারের নাম। পপ গায়ক এলভিস প্রিসলির ম্যানেজারের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে টম হ্যাঙ্কসের।

হুট করেই অস্টিন বাটলার নামটি চলে আসেনি। অস্টিনের আগে পরিচালক অডিশন নিয়েছেন আরও কিছু অভিনেতার। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাইলস টেলার, হ্যারি স্টাইলসের মতো তারকাও। তবে অস্টিনকেই পছন্দ হয় বাজ লারম্যানের।

মিসিসিপির টুপেলো শহরে ১৯৩৫ সালে জন্ম নেওয়া এলভিস প্রিসলি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়ক ও বহুল বিক্রীত অ্যালবামের সংগীতশিল্পীদের অন্যতম। তাঁর সময়ে তাঁকে ‘কিং অব রক অ্যান্ড রোল’ বা আরও সহজভাবে ‘দ্য কিং’ নামে ডাকা হতো। গান গাওয়ার পাশাপাশি তিনি অভিনয়ও করেছেন। গত শতকের ৫০ ও ৬০ দশকে এলভিসের প্রভাব ছিল সর্বগ্রাসী। স্টেজ, টেলিভিশন, সিনেমা সর্বত্রই ছিলেন এলভিস প্রিসলি।

এলভিস প্রিসলিকে নিয়ে ছবিতে দেখা যেতে পারে টম হ্যাঙ্কসকে
এলভিস প্রিসলিকে নিয়ে ছবিতে দেখা যেতে পারে টম হ্যাঙ্কসকে

নিজের সময় তো বটেই, পরের সব প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছেন রক অ্যান্ড রোলের রাজা এলভিস প্রিসলি। শুধু গান দিয়ে নয়, ব্যক্তিত্বের আবেদন, পোশাক, স্টাইল—সব মিলিয়ে এলভিস কোটি মানুষের হৃদয় হরণ করেন। গত শতকের ৫০ দশকে রক এন রোল, রিদম অ্যান্ড ব্লুজ মার্কিন তরুণদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর এই জনপ্রিয়তার কেন্দ্রে ছিলেন এলভিস প্রিসলি। তাঁর কল্যাণেই মার্কিন শ্বেতাঙ্গরা আফ্রিকান-আমেরিকান সংগীতের সঙ্গে পরিচিত হয়। বর্ণবাদী সেই সময়ে সেটা ছিল এক সাংস্কৃতিক বিপ্লব। বলা হয়, মার্কিন শ্বেতাঙ্গ সমাজের যে বর্ণবাদী এবং রক্ষণশীল চরিত্র ছিল, তাতে জোরেশোরেই আঘাত হানেন এলভিস। আর সে কারণেই বয়স্ক শ্বেতাঙ্গরা এলভিসকে যেমন ঘৃণা করেছেন, তেমনি তরুণ-কিশোররা ভালোবেসেছেন। কারণ কিশোর-তরুণদের কাছে এলভিস প্রিসলি ছিলেন স্বাধীনতার প্রতীক, নিজের মতো করে চলার অনুপ্রেরণা।

কালক্রমে এলভিস প্রিসলি শুধু মার্কিন তরুণদের নন, বিশ্বের তরুণদের কাছে আইকন হয়ে ওঠেন। এলভিসের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে তাঁর গানের রেকর্ড বিক্রি হয় অন্তত ৫০ কোটি কপি। ১৯৭৭ সালে মাত্র ৪২ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে মারা যান এলভিস প্রিসলি। সিএনএন, ভ্যারাইটি ডটকম, ইনসাইডার, টুইটার