তাঁরা আসছেন

লস্কর নিয়াজ মাহমুদ, তানভীর আহম্মদ ও তাসমিয়াহ্ আফরীন—বিজয়ী তিন আগামীর নির্মাতা। ছবি: আনন্দ
লস্কর নিয়াজ মাহমুদ, তানভীর আহম্মদ ও তাসমিয়াহ্ আফরীন—বিজয়ী তিন আগামীর নির্মাতা। ছবি: আনন্দ

তরুণ চলচ্চিত্রকারদের স্বপ্নপূরণে তৈরি করা হয় মেরিল–প্রথম আলোর প্ল্যাটফর্ম ‘ফেইম ফ্যাক্টরি’। সেখান থেকে ‘আগামীর নির্মাতা’ নামে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ছেঁকে বের করা হলো তিন তরুণ চলচ্চিত্রকারকে। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর হয় দ্বিতীয় ধাপের প্রতিযোগিতা। সেই বাছাইপর্বে চূড়ান্ত বিজয়ী—লস্কর নিয়াজ মাহমুদ, তানভীর আহম্মদ ও তাসমিয়াহ্ আফরীন। এখন তাঁরা স্বপ্নের ছবিটি নির্মাণের সুযোগ পাচ্ছেন। কোমর বেঁধে স্বপ্নের ছবি নির্মাণে নামার আগে প্রথম আলো কার্যালয়ে আনন্দ–এর মুখোমুখি হন বিজয়ী তিন আগামীর নির্মাতা। জানা গেল, স্বপ্ন বাস্তবায়নে পুরোদস্তুর প্রস্তুত তাঁরা। কাজ নিয়ে রুপালি পর্দায় শিগগিরই আসছেন।

ইতিমধ্যেই তিনজনই শুরু করে দিয়েছেন প্রি–প্রোডাকশনের কাজ। কারও শুটিং এক ধাপ হয়ে গেছে। কেউ পরিকল্পনা করছেন শুটিংয়ে নামার। তাসমিয়াহ্‌ আফরীন জানালেন, তাঁর গল্প চূড়ান্ত। এখন চলছে প্রযোজনা–পূর্ববর্তী কাজ। এটি শেষ হলেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন শুটিংয়ে। তাঁর ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করবেন সাদিয়া জাহান প্রভা ও মৌটুসী বিশ্বাস। থাকছেন শাহাদত হোসেনও। শুটিং করার পরিকল্পনা করা হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। ছবিটি একজন অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে। তাই ঢাকার বিভিন্ন শুটিংবাড়িতে কাজ হবে। এ ছাড়া আরেকটি বড় শুটিং হবে দৌলতদিয়ায়।

অন্যদিকে লস্কর নিয়াজ মাহমুদ তাঁর ছবির প্রথম ধাপের শুটিং শেষ করেছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরের ধাপের জন্য। তাঁর ছবিতে জুটি বেঁধেছেন ইয়াশ রোহান ও সুমাইয়া হিমি। ঝালকাঠি জেলায় প্রথম ধাপের শুটিং করা হয়েছে। বাকিটা হবে ঢাকায়। ঈদের আগেই শুটিং শেষ করতে চান এই নির্মাতা। আর তানভীর আহম্মদ কিছুদিনের মধ্যেই প্রযোজনা–পূর্ববর্তী কাজ শুরু করবেন। এর পরপরই নেমে পড়বেন শুটিংয়ে। কার্নিভাল ব্যান্ডের ভোকাল ও গিটারিস্ট টিনু রশিদ থাকবেন মূল চরিত্রে। ছবিটির সংগীতও করবেন তিনি। তিন নির্মাতাই তাঁদের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা নির্মাণ নিয়ে বেশ আশাবাদী ও আত্মবিশ্বাসী। মেরিল–প্রথম আলোর এ উদ্যোগকে বেশ ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় বললেন তাঁরা। তার আগে জেনে আসা যাক তিনজনের বিজয়ী হওয়ার পথটি কেমন ছিল।

টিভি, ইউটিউব, ফেসবুকসহ যেকোনো মাধ্যমের জন্য ফিকশন কিংবা নন–ফিকশন ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা অনূর্ধ্ব–৪০ বছরের নির্মাতারা আবেদন করেন ‘আগামীর নির্মাতা’ প্রতিযোগিতায়। অংশ নেওয়া প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে সেরা ১০০ নির্মাতাকে বেছে নেওয়া হয়। তাঁদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় কর্মশালা। ১০০ জন থেকে প্রথমে ৫০, পরে ৫০ থেকে ১০ জনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়। এই ১০ জন হলেন লস্কর নিয়াজ মাহমুদ, প্রজ্ঞা আহম্মদ, নভেরা হাসান, মো. ইয়াসির ইউনুছ, মাহমুদ হাসান, তাসমিয়াহ্ আফরীন, তানভীর আহম্মদ, আবু রায়হান, তাছনুফা সিমি ও জহিরুল ইসলাম। এই ১০ জন একটি করে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের সুযোগ পান। এতে সহযোগিতা করে মেরিল–প্রথম আলোর ‘ফেইম ফ্যাক্টরি’। এরপর ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র থেকে বিচারকদের রায় ও দর্শকের ভোটে বেছে নেওয়া হয় সেরা তিন নির্মাতাকে। এই তিন নির্মাতা পাচ্ছেন চলচ্চিত্র নির্মাণের সুযোগ। আর তাসমিয়াহ্‌ আফরীন ৭২তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক বিভাগ ‘মার্শ দ্যু ফিল্ম’–এ অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।

মেরিল–প্রথম আলোর ‘ফেইম ফ্যাক্টরি’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে কেমন লাগছে? এমন প্রশ্নে তানভীর আহম্মদ বলেন, ‘গল্প পছন্দ করার ক্ষেত্রে প্রযোজকদের কাছ থেকে একটা বাড়তি চাপ থাকে। তাঁরা তাঁদের পছন্দমতো গল্প নির্মাতাকে বেছে নিতে বলেন। এখানে নির্মাতা একদম স্বাধীনভাবে গল্প পছন্দ করেছেন। এটা খুবই ভালো একটি দিক।’

লস্কর নিয়াজ বললেন বাজেটের বিষয়টি। তিনি বলেন, বর্তমান মার্কেটে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করতে যে পরিমাণে বাজেট দেওয়া হয়, তার তুলনায় এ উদ্যোগে বেশ ভালো বাজেট পেয়েছেন তাঁরা। তাসমিয়াহ্‌ আফরীন জানালেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নিয়ে উৎসবে সফর করার কথা। শুধু বানিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছেন না তাঁরা। বিশ্বের বেশ কিছু নামকরা চলচ্চিত্র উৎসবে এটি নিয়ে তাঁরা অংশ নিতে চান। এই  সুযোগ মেরিল–প্রথম আলো তাঁদের দিয়েছে।