'সুবীর কাকু'র গান করলেন প্রিয়াঙ্কা

সুবীর নন্দী স্মরণে প্রাণের খেলায় গান করছেন প্রিয়াঙ্কা গোপ
সুবীর নন্দী স্মরণে প্রাণের খেলায় গান করছেন প্রিয়াঙ্কা গোপ

এই প্রথম ‘সুবীর কাকু’র গান কণ্ঠে তুললেন শিল্পী প্রিয়াঙ্কা গোপ। নজরুলসংগীতশিল্পী হিসেবে পরিচিতি ও সমাদর রয়েছে এই শিল্পীর। সুবীর নন্দী স্মরণে আয়োজিত বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে সুবীর নন্দীর গাওয়া বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গান শোনালেন এই শিল্পী।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজন করে দুই দিনের গানের অনুষ্ঠান ‘গানের ঝরনা তলায়’। প্রথম দিন শিল্পী সুবীর নন্দী স্মরণে ছিল নিয়মিত গানের আসর ‘প্রাণের খেলা’। এতে পঞ্চকবির বর্ষার গান গেয়ে শোনান দুই নবীন শিল্পী জারিফ একরাম ও ঐশ্বর্য সমাদ্দার। সুবীর নন্দীর গানের পাশাপাশি নিজের দুটি মৌলিক গান শুনিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গোপ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সুবীর নন্দীকে নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। সেখানে গাইতে ও কথা বলতে দেখা যায় প্রয়াত এই শিল্পীকে। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানগুলোতে দেখা যেত তাঁর সরব উপস্থিতি। ভিডিওচিত্রে সেই দৃশ্যগুলোই ফিরে ফিরে আসছিল। তাঁর স্মরণ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সুবীর নন্দীর স্ত্রী পূরবী নন্দী ও মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী। বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করতে এসে ফাল্গুনী বলেন, ‘সব জায়গায় বাবাকে স্মরণের আয়োজন হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। বাবাকে বাসায় যে রকম দেখেছি, পেশাগত জীবনেও সে রকমই দেখেছি।

সুবীর নন্দী স্মরণে প্রাণের খেলায় গান করছেন জারিফ একরাম। ছবি: সংগৃহীত
সুবীর নন্দী স্মরণে প্রাণের খেলায় গান করছেন জারিফ একরাম। ছবি: সংগৃহীত

সবাই বলেন বাবার অমায়িক ব্যবহার, তাঁর কথা বলা, গান গাওয়া কেউই ভুলতে পারেন না। এখনো বিশ্বাস হয় না যে বাবা চলে গেছেন। জীবনের শেষ তিনটি বছর বাবা কিডনি ও হার্টের সমস্যায় খুব কষ্ট পেয়েছেন। কিন্তু কাউকে সেটা বুঝতে দেননি। সব সময় বলতেন, ভালো আছি। আমাকে বলতেন, চলতে তো হবেই। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা করিয়ে তাঁকে সারিয়ে তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি আর বাঁচবেন না। তিনি চেয়েছিলে দেশেই যেন তাঁর মৃত্যু হয়।’

সুবীর নন্দীকে নিয়ে কথা বলেন নজরুলসংগীতশিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক। তিনি বলেন, ‘সুবীর দা একজন বড় মাপের শিল্পী ছিলেন। আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে তিনি যে গানটিই গেয়েছেন, সেটিই সুপারহিট হয়েছে। তাঁর ভালোবাসার গান, আধ্যাত্মিক গান, ফোক-মেলোডি সব গানই শ্রোতারা পছন্দ করতেন। কারণ তাঁর ভেতরে তিনটি জিনিস ছিল—ডেডিকেশন, ডিটারমিনেশন এবং ডিভোশন।’

সুবীর নন্দী স্মরণে প্রাণের খেলায় গান করছেন ঐশ্বর্য সমাদ্দার। ছবি: সংগৃহীত
সুবীর নন্দী স্মরণে প্রাণের খেলায় গান করছেন ঐশ্বর্য সমাদ্দার। ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়াঙ্কা শোনান সুবীর নন্দীর ‘কী যে ব্যথা বুকে’, ‘ঘুমিয়ে গেছে শান্ত হয়ে’, ‘উচাটন মন’, ‘দ্বীপ নিভিয়েছে ঝড়ে’, ‘রুমঝুম রুমঝুম’। এ ছাড়া গেয়ে শোনান হৈমন্তী শুক্লার ‘ছন্দে ছন্দে হিয়া দোলে আনন্দে’ এবং নিজের মৌলিক গান ‘এ কোন রাত্রি এল’ এবং তোমার আশায় পথ চাওয়া’। নজরুলের বর্ষার গান দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। দ্বৈত কণ্ঠে জারিফ ও ঐশ্বর্য শোনান ‘মেঘ মেদুর বরষায় কোথা তুমি’। এ ছাড়া দ্বৈত ও একক কণ্ঠে তাঁরা শোনান ‘মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে’, ‘পরদেশী মেঘ যাওরে উড়ে’, ‘তোমার বিনা তারের গীতি’, ‘শাওন আসিল ফিরে’, ‘মুখে কেন নাহি বলো’ গানগুলো।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় আসরের দ্বিতীয় দিন পঞ্চকবির বর্ষার গান করবেন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার শিল্পীরা।