ব্যর্থতা প্রত্যেকের জীবনেই আছে: সিদ্ধার্থ

>বরুণ ধাওয়ান ও আলিয়া ভাটের সঙ্গে স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছবি দিয়ে বলিউডে নাম লেখান সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। তবে সাফল্যের দৌড়ে সিদ্ধার্থের থেকে তাঁর দুই সতীর্থ অনেক দূরে এগিয়ে গেছেন। অভিনেতা হিসেবে নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করলেও বক্স অফিসে সিদ্ধার্থের ভাগ্যের চাকা থেমে আছে। অন্যদিকে প্রায় একই গতিতে এগোচ্ছেন অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া। বোন প্রিয়াঙ্কা যেখানে একাধারে বলিউড–হলিউড দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, সেখানে পরিণীতি বেশ কয়েক বছর ধরে একটা হিট ছবির অপেক্ষায় আছেন। এই সিদ্ধার্থ–পরিণীতি জুটি অভিনীত জবরিয়া জোড়ি ছবিটি মুক্তি পাবে শিগগিরই। এই ছবির দুই তারকার সঙ্গে মুম্বাইয়ের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আড্ডায় বসেছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য।
জবরিয়া জোড়ি ছবিতে সিদ্ধার্থ
জবরিয়া জোড়ি ছবিতে সিদ্ধার্থ

ছবির ট্রেলার দেখে মনে হচ্ছে, বেশ মজার ছবি এটি। এতে অভিনয় করার কারণ?
সিদ্ধার্থ মালহোত্রা: ছবিটি হালকা মেজাজের হলেও এর বিষয়বস্তু খুবই গম্ভীর। ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশেজবরিয়া জোড়ি, অর্থাৎ জোর করে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। গত বছর এ ধরনের প্রায় ২০০ বিয়ের কথা শোনা গেছে। আমরা সমাজের এই গম্ভীর বিষয়কে একটু মজার ছলে পরিবেশন করেছি। আমাদের মনে হয়েছে, এভাবে সমাজের কাছে বার্তা পৌঁছানো অনেকটা সহজ। আমার বিগত কয়েকটা ছবি বেশ সিরিয়াস ছিল। তাই নিজেকে হাসির ছবিতে একটু পরখ করতে চেয়েছিলাম। অনেকের ধারণা ছিল, আমাকে ছোট শহরের নিম্নবিত্ত যুবকের চরিত্রে মানাবে না। আমার মনে হয়, এই ছবির পর এই ধারণা আমি ভাঙতে পারব।

জবরিয়া জোড়ির প্রেক্ষাপট বিহারের পাটনা শহরকে কেন্দ্র করে। এই ছবির জন্য কি আপনাকে ওই শহর আর ওখানকার ভাষা নিয়ে কোনো হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে?
সিদ্ধার্থ: আমাকে দুই দিকে খেয়াল রাখতে হয়েছে—কারিগরি দিক আর বিনোদনমূলক দিক। প্রায় দুই মাস ধরে নিজেকে চরিত্রের মতো গড়েপিঠে তৈরি করেছি। পাটনার ‘পাটনাইয়া’ ভাষায় কথা বলা শিখেছি। এ জন্য আমি নিজে ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক রেখেছিলাম। চরিত্রের প্রয়োজনে কানে দুল পরেছি, গায়ে ট্যাটুও করিয়েছি।

আপনার চোখে বলিউডের সেরা জুটি কোনটি?

সিদ্ধার্থ: আমার দেখা সেরা জুটি সাইফ আলী খান আর কারিনা কাপুরের। আমি যখনই এই জুটিকে একসঙ্গে দেখি, তখনই মুগ্ধ হই। সাইফ-বেবো একসঙ্গে কোথাও থাকলে চারপাশের পুরো পরিবেশই খুব সুন্দর হয়ে ওঠে। হাসি-মজার মাধ্যমে ওরা সবাইকে মাতিয়ে রাখে। একে অপরকে তারা খুব ভালো বুঝতে পারে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, তারা যেন এ রকমই থাকে সব সময়।

আপনি আপনার সঙ্গীর মধ্যে কী কী গুণ দেখতে চান?

সিদ্ধার্থ: সে রকম কিছু নেই। সে যেন একটু সহজ প্রকৃতির হয়। আমার দোষ-গুণ দুটোই সে যেন আপন করে নেয়। তবে ভালোবাসা তো বলে–কয়ে হয় না। প্রেম আসে নীরবে। তবে আমি বিয়েতে বিশ্বাস রাখি। আমিও নিশ্চয় বিয়ে করব। তবে কবে কখন কার সঙ্গে, তা জানি না। মা তো সারাক্ষণ বিয়ের কথা বলছেন।

ব্যর্থতাকে কীভাবে দেখেন?

সিদ্ধার্থ: ব্যর্থতা থেকে নিজেকে আরও প্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার কিছু ছবি চলেছে, আবার কিছু চলেনি। আমি সব সময় ব্যর্থ সিনেমা থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। ব্যর্থ হলে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে অবসাদে ডুবে যাব, এটা কখনোই কাম্য নয়। আপনি যদি বড় বড় তারকার ক্যারিয়ার গ্রাফে একটু নজর দেন, দেখবেন ব্যর্থতা প্রত্যেকের জীবনেই আছে। আর তাঁরা সেসব উতরেই আজ বড় তারকা হয়েছেন।

আপনার স্বপ্ন ছিল হিন্দি ছবির নায়ক হবেন। আজ তা পূরণ হয়েছে। এখন কী স্বপ্ন দেখেন?

সিদ্ধার্থ: আমার স্বপ্ন তো কিছুটা পূরণ হয়েছে, পুরোটা নয়। আমি মনে করি, আমার স্বপ্ন অনেকটাই অধরা। আমি এমন এক চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যা সবাই চিরকাল মনে রাখবে। আমি থাকি বা না থাকি, আমার চরিত্র যেন জীবিত থাকে। আর আমার একটা গোপন ইচ্ছা আছে, সেটা হলো আমি ‘সুপার হিরো’র চরিত্রে অভিনয় করতে চাই।

কয়েক দিন পরেই তো বন্ধু দিবস। কথিত আছে, বলিউডে বন্ধুত্ব সময়ের সঙ্গে বদলায়। বলিউডে কাকে আপনি বন্ধু বলে মনে করেন?

সিদ্ধার্থ: অনেক সময় সময়ের অভাবে বন্ধুত্বকে এগিয়ে নেওয়া হয়ে ওঠে না। তবে অক্ষয় কুমারকে আমি আমার বন্ধু আর বড় ভাইয়ের মতো দেখি। ব্রাদার্স ছবিতে তাঁর সঙ্গে কাজ করেছিলাম। তখন আমরা অনেক আড্ডা দিতাম। এখনো আমাদের মধ্যে সেই সম্পর্ক অটুট। আমরা দুজনেই দিল্লির ছেলে। দুজনেই পাঞ্জাবি। তাই অক্ষয়ের সঙ্গে আমার টিউনটা খুব ভালো। আবার পরিও (পরিণীতি) আমার খুব ভালো বন্ধু। হাসি তো ফাঁসি ছবিতে প্রথম আমরা একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। আর আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব আছে বলেই পর্দাতে পরির সঙ্গে আমার রসায়নটা খুব ভালো।

আপনি দিল্লির ছেলে। পরিবার থেকে দূরে থাকার জন্য আক্ষেপ হয় না?

সিদ্ধার্থ: আক্ষেপ তো আছেই। আমি আমার পরিবারকে সময় দিতে পারি না। ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারি না। নতুন ফ্ল্যাট নিয়েছি। আমি আর অস্কার (কুকুর) শুধু থাকি। তারা মাঝেমধ্যে এসে সময় কাটায়।