প্রেম করার সময় কোথায়: পরিণীতি

>বরুণ ধাওয়ান ও আলিয়া ভাটের সঙ্গে স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছবি দিয়ে বলিউডে নাম লেখান সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। তবে সাফল্যের দৌড়ে সিদ্ধার্থের থেকে তাঁর দুই সতীর্থ অনেক দূরে এগিয়ে গেছেন। অভিনেতা হিসেবে নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করলেও বক্স অফিসে সিদ্ধার্থের ভাগ্যের চাকা থেমে আছে। অন্যদিকে প্রায় একই গতিতে এগোচ্ছেন অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া। বোন প্রিয়াঙ্কা যেখানে একাধারে বলিউড–হলিউড দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, সেখানে পরিণীতি বেশ কয়েক বছর ধরে একটা হিট ছবির অপেক্ষায় আছেন। এই সিদ্ধার্থ–পরিণীতি জুটি অভিনীত জবরিয়া জোড়ি ছবিটি মুক্তি পাবে শিগগিরই। এই ছবির দুই তারকার সঙ্গে মুম্বাইয়ের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আড্ডায় বসেছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য
জবরিয়া জোড়ি ছবিতে  পরিণীতি
জবরিয়া জোড়ি ছবিতে পরিণীতি

 প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার জন্মদিন উদ্‌যাপন করতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সফর কেমন ছিল?
পরিণীতি চোপড়া: প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম। মাত্র দেড় দিনের সফর ছিল। মুম্বাই থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে মিয়ামি গিয়েছিলাম। আর মুম্বাই ফিরেছিলাম লন্ডন হয়ে। এরপর ছবি প্রচারণার জন্য দিল্লি, আহমেদাবাদসহ অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। মিয়ামিতে গিয়ে আমি একটুও ঘুমাতে পারিনি। মানে আমাকে ঘুমাতে দেওয়া হয়নি। আটজনের ছোট একটা দল, সবাই পরিবারের সদস্য। সেই দলে দুজন ছেলে, আর বাকি সব মেয়ে। দারুণ মজা করেছি। আমি আর নিক (জোনাস) দেড় মাস আগে থেকে মিমি দিদির (প্রিয়াঙ্কার ডাকনাম) জন্মদিনের পরিকল্পনা করেছিলাম। মিমি দিদিকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম। বিয়ের পর এটা মিমি দিদির প্রথম জন্মদিন ছিল। তাই খুবই বিশেষভাবে উদ্‌যাপন করতে চেয়েছিলাম আমরা।

বিহার, উত্তর প্রদেশে জোর করে ধরেবেঁধে বিয়ে দেওয়ার চল আছে। এই ছবিটার আগে আপনি এই প্রথার ব্যাপারে কতটা জানতেন?
পরিণীতি: একটুও জানতাম না। প্রযোজক একতা কাপুর আমাকে ফোন করে প্রথমে এ ধরনের বিয়ের কথা বলেন। তখন তিনিই এ বিষয়ের ওপর ছবি নির্মাণের কথা বলেন। আমি তখন ভেবেছিলাম কোনো বোরিং ছবি হবে। ছবির কাহিনি শোনার পর আমার ধারণা বদলে যায়। গল্প শুনতে শুনতে আমি পাগলের মতো হাসতে থাকি। এখানে বসে মনে হয় দুনিয়া কতটা আগে এগিয়ে গেছে। কিন্তু আদতে তা নয়। এখনো সমাজের অনেক অংশ পিছিয়ে আছে। ছবিটি হাসির হলেও বিষয়টা কিন্তু গম্ভীর। ২০১৯ সালেও আমাদের সমাজে পণপ্রথা আছে, জোর করে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে, যা খুবই লজ্জার।

আপনি কি মনে করেন, এমন ছবির মাধ্যমে মানুষের চিন্তাধারায় বদল আনা সম্ভব?

পরিণীতি: আমার তো মনে হয়, আমাদের দেশের মানুষের মনে সিনেমা খুব প্রভাব ফেলে। কারণ, আমরা সবাই আবেগপ্রবণ। আমরা সিনেমার সঙ্গে নিজেদের প্রায়ই মেলানোর চেষ্টা করি। ছবি থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করি।

 হাসি তো ফাঁসির পর সিদ্ধার্থের সঙ্গে এটা আপনার দ্বিতীয় ছবি। কতটা বদল এসেছে তাঁর মধ্যে?

পরিণীতি: হাসি তো ফাঁসির সময় সিডো তখনো স্টার হয়নি। তবে এখন ওর মধ্যে অনেকটা পরিপক্বতা এসেছে। অভিনেতা হিসেবে অনেক উন্নত হয়েছে। কিন্তু বাকি সবকিছু একই রকম আছে। আমরা মাঝে আমেরিকাতে ড্রিম ট্যুরে গিয়েছিলাম। এ ছাড়া আমরা মাঝেমধ্যে একে অপরের বাড়িতে ডিনারে যাই। এসব আমাদের মধ্যে চলতেই থাকে। তাই আমার আর সিডোর মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট ছিল।

আপনার চোখে বলিউডের সেরা জুটি কোনটি?

পরিণীতি: অবশ্যই নিক আর মিমি দিদির কথা বলব। ওরা জুটি হিসেবে দুর্দান্ত। ওদের একসঙ্গে দারুণ লাগে। এ ছাড়া আরবি (রণবীর সিং) আর দীপিকার জুটি ভালো লাগে। বাকিদের বিয়ে হয়নি, তাই নাম নিতে পারব না।

আপনাকে সেভাবে বিষয়ভিত্তিক ছবিতে দেখা যায়নি—

পরিণীতি: এবার আমাকে দেখতে পাবেন। গার্ল অন দ্য ট্রেন, সাইনা এ ধরনের ছবি। আমি এখন ভাবগম্ভীর চরিত্রে কাজ করতে চাই, যেখানে সাজপোশাক আর গ্লামারের কোনো ভূমিকা থাকবে না। আর আমি এখন সেসব চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যাতে আমাকে আগে কেউ দেখেনি। আমি সবাইকে সারপ্রাইজ করতে চাই। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।

সাইনা তো আপনার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জিং ছবি?

পরিণীতি: একদম তা–ই। এই ছবির জন্য আমাকে ব্যাডমিন্টনের প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। আর পর্দাতে আমাকে এমনভাবে খেলতে হবে, যাতে আমাকে স্টার প্লেয়ারের মতো লাগে। তাই খুবই কঠিন এ কাজ। আমি প্রযোজকের থেকে পাঁচ মাস সময় চেয়েছিলাম। এই ছবি ১০ বছর পরে হওয়া উচিত। কারণ, এই স্পোর্টস বায়োপিকের জন্য প্রচুর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আমি প্রযোজককে বলে দিয়েছিলাম, যেকোনো রকম প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া আমি চরিত্রটি করব। পর্দায় আমাকে যেন আসল লাগে। এখন গার্ল অন দ্য ট্রেন-এর শুটিংয়ের জন্য লন্ডনে যাব। ওখানে আমি আমার টিম নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিনই ব্যাডমিন্টনের অনুশীলন করব, যাতে লন্ডন থেকে ফিরে অসুবিধা না হয়।

আপনি কি আপনার সঙ্গীকে খুঁজে পেয়েছেন?

পরিণীতি: দেখুন, আমি প্রেম করে বিয়ে করব—এটা পাকা কথা। সেভাবে মানসিক প্রস্তুতিও নিয়েছি। কিন্তু প্রেম করার সময় কোথায়? তবে আমি সঠিক সঙ্গীর অপেক্ষায় আছি। আমাকে সে যেন বোঝে। আমাদের পেশায় প্রচণ্ড ব্যস্ততা, অসম্ভব চাপ। এ সবকিছু সে যেন বুঝে চলে। আর আমি চাইব আমার সঙ্গী যেন আমাকে শুধু নায়িকা হিসেবে না দেখে; সে যেন আমাকে আমার জন্যই ভালোবাসে।