আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি থেকে সিনেমা

ডাস তাগবুকতিয়া আনা ফ্রাঙ্ক ও দ্য অ্যাটিক: দ্য হাইডিং অব আনা ফ্রাঙ্ক ছবির পোস্টার
ডাস তাগবুকতিয়া আনা ফ্রাঙ্ক ও দ্য অ্যাটিক: দ্য হাইডিং অব আনা ফ্রাঙ্ক ছবির পোস্টার

ভীষণ কষ্টের একটা দিন আজ! আনা ফ্রাঙ্ক হিটলার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিল ১৯৪৪ সালের আজকের এই দিনে। ভাবলে বিস্মিত হতে হয়, এমন দিনও পৃথিবীতে এসেছিল, খেতে না পেয়ে মরে গিয়েছিল আনা ফ্রাঙ্ক নামের এক মিষ্টি বালিকা, যাকে সারা পৃথিবী চিনেছিল তার ডায়েরি পড়ে, যে ডায়েরির ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে অনেকগুলো সিনেমা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানবতাবিরোধী যত ঘটনা ঘটেছিল, সেগুলোর অন্যতম হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে আনার পরিবারের সঙ্গে। ধরা পড়ার ভয়ে গোপন কুঠুরিতে বসে বই পড়তে পড়তেই ভাবনাটা খেলে যায় তার ছোট্ট মাথায়। সে ভেবেছিল, সময়টার কথা সে লিখে রাখবে। কাল্পনিক বন্ধু ‘কিটি’কে চিঠির মতো করে ঘটনাগুলো লিখেছিল সে তার ডায়েরিতে। বিশ্বযুদ্ধের নানা রকম ছবি সেখানে ধরা পড়েছিল। শুধু তা–ই নয়, মায়ের সঙ্গে প্রায়ই মতের মিল না হওয়া, বোনের সঙ্গে ঝগড়া, সব টুকে রাখত আনা। ১৯৪২ সালের ১২ জুন নিজের ১৩তম জন্মদিনে লাল-সাদা চেকের সেই ডায়েরিটা উপহার পেয়েছিল সে।

আনার এ ডায়েরিকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে অনেকগুলো সিনেমা। সেগুলোর মধ্যে জর্জ স্টিভেনস পরিচালিত দ্য ডায়েরি অব আনা ফ্রাঙ্ক ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৯ সালে। পরে ১৯৮৮ সালে জন এরম্যানের পরিচালনায় মুক্তি পায় দ্য অ্যাটিক: দ্য হাইডিং অব আনা ফ্রাঙ্ক ছবিটি। ১৯৯৫ সালে জন ব্লায়ার পরিচালনা করেন আনা ফ্রাঙ্ক রিমেম্বারড। ১৯৯৯ সালে জুলিয়ান উল্ফ পরিচালনা করেন আনা ফ্রাঙ্কস ডায়েরি। হান্স স্টাইনভেশলার পরিচালনায় ২০১৬ সালে মুক্তি পায় জার্মান ছবি ডাস তাগবুকতিয়া আনা ফ্রাঙ্ক। ২০১৭ সালে পরিচালক ম্যাট শিভারস্টোন করেন লাভ অল ইউ হ্যাভ লেফট। এখানেই শেষ নয়। ঘটনাটি নিয়ে নিশ্চয়ই আরও সিনেমা হবে।

ধরা পড়ার পর ১৯৪৫ সালের মার্চে আনা ফ্রাঙ্ক ও তার বোন মার্গট ফ্রাঙ্ক ক্ষুধার্ত অবস্থায় মারা যায়। তাদের মরদেহ ছুঁড়ে ফেলা হয় লাশের স্তূপে। মেয়েদের মৃত্যুর পর বাবা ওটো ফ্রাঙ্ক আনার ডায়েরিটি পান। প্রথম সেটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালের ২৫ জুন। নেদারল্যান্ডসে প্রকাশের পাঁচ বছর পর ১৯৫২ সালে আমেরিকায় বইটি মুদ্রিত হয় ৫ হাজার কপি, দ্বিতীয় মুদ্রণে ১৫ হাজার কপি আর তৃতীয় মুদ্রণে ৪৫ হাজার কপি প্রকাশিত হয়। এরপর লাখ লাখ লোক বইটি পড়তে শুরু করে। সিনেমাগুলো কত মানুষ দেখেছেন, সে হিসাব বের করা যায়নি।