এফডিসিতে জানাজা, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

খলিলুর রহমান বাবর
খলিলুর রহমান বাবর

আজ সোমবার বিকেলে খলিলুর রহমান বাবরকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে জোহর নামাজের পর বাংলা চলচ্চিত্রের প্রয়াত এই অভিনেতার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর শুক্রবাদ জামে মসজিদে। বিকেলে নেওয়া হবে এফডিসি প্রাঙ্গণে। আসরের নামাজের পর সেখানে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হবে।

আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক খলিলুর রহমান বাবর (৬৭) (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ১৯৫২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গেন্ডারিয়ার জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

বাবরের ছেলে রিয়াদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, তাঁর বাবা মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করার জন্য বলে গেছেন। বাবার কথা অনুযায়ী সেখানে তাঁকে দাফন করা হবে। তিনি আরও জানান, দুপুরে স্কয়ার হাসপাতালের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে প্রথমে অভিনেতা বাবরের মরদেহ নেওয়া হয় কলাবাগানের বাসায়।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবর ভাই ছিলেন একজন গুণী অভিনেতা। তাঁর কাছে আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেক ঋণ। তিনি আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির একজন আজীবন সদস্য। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সব প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের এফডিসিতে আসার অনুরোধ করছি, যেন নির্ধারিত সময়ে আমরা প্রয়াত এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে পারি।’

দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন বাবর। কয়েক বছর যাবৎ অসুস্থ ছিলেন। ভুগছিলেন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ ও ফুসফুসের সমস্যায়। গত ৩০ এপ্রিল অসুস্থতা বেড়ে গেলে তাঁকে কমফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর গ্যাংগ্রিনের অপারেশন করাতে হয়। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে তাঁর বাঁ পায়ের তিনটি আঙুল কেটে বাদ দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত জুন মাসে অস্ত্রোপচার করে তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটু থেকে নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফিরে যান। তবে গত বৃহস্পতিবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ছেলে রিয়াদুর রহমান বলেন, ‘কোনোভাবেই বাবার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। তাই আমরা আজ আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আমরা। সে সুযোগ পেলাম না।’

খলনায়ক হলেও চলচ্চিত্রে বাবর প্রথম অভিনয় করেন নায়ক চরিত্রে। বাইরের অভিষেক ঘটেছিল আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘বাংলার মুখ’ চলচ্চিত্রে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করে। খলনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় নায়করাজ রাজ্জাক প্রযোজিত ও জহিরুল হক পরিচালিত ‘রংবাজ’ চলচ্চিত্র দিয়ে। এরপর তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অবশ্য মাঝে প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। পরিচালনা করেছেন ‘দয়াবান’, ‘দাগি’, ‘দাদাভাই’সহ বেশ কিছু ব্যবসাসফল ছবি। তবে অভিনয়েই বেশি সময় দিয়েছেন তিনি।