রানুকে বাড়ি উপহার দিলেন সালমান

ভারতের বিনোদন জগতে গত কয়েক দিন সবচেয়ে উচ্চারিত নাম রানু মণ্ডল
ভারতের বিনোদন জগতে গত কয়েক দিন সবচেয়ে উচ্চারিত নাম রানু মণ্ডল

ভারতের বিনোদন জগতে গত কয়েক দিন সবচেয়ে উচ্চারিত নাম রানু মণ্ডল। তাঁর জীবনের গল্প বলিউডের সিনেমাকেও হার মানায়। একেবারেই পথের মানুষ ছিলেন। পথে পথে ঘুরে বেড়াতেন। সবাই তাঁকে ‘পাগলি’ নামে ডাকত। নিজের খেয়ালে গান করে বেড়াতেন। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে লতা মঙ্গেশকরের ‘এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়’ গানটি গেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাতারাতি তারকা হয়ে যান রানু মণ্ডল। ‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’ ছবিতে হিমেশ রেশমিয়ার সুরে ‘তেরি মেরি’ গান রেকর্ড করেছেন। শোনা যাচ্ছে, প্রথম গানের জন্য রানুকে ছয় থেকে সাত লাখ রুপি দিয়েছেন হিমেশ রেশমিয়া। আবার আরেকটি সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, রানু পেয়েছেন তিন থেকে চার লাখ রুপি। অর্থের পরিমাণ যা-ই হোক, রানু মণ্ডল প্রথমে নিতে তা রাজি হননি। হিমেশ রেশমিয়া প্রায় জোর করেই এই অর্থ রানু মণ্ডলের হাতে ধরিয়ে দেন।

রানু মণ্ডল ও সালমান খান
রানু মণ্ডল ও সালমান খান

এবার জানা গেছে, ‘বলিউডের ভাইজান’ সালমান খান নাকি রানু মণ্ডলকে ৫৫ লাখ রুপি মূল্যের একটি বাড়ি উপহার দিয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ফিল্মফেয়ার ডটকমের অনলাইন সংস্করণ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। রানু মণ্ডলের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে সালমান খান তাঁকে এই উপহার দিয়েছেন। আরও জানা গেছে, সালমান খান তাঁর আগামী ছবি ‘দাবাং থ্রি’–র ছবির গান গাওয়ার জন্য রানু মণ্ডলকে প্রস্তাব দিয়েছেন।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে জোর করে এক বাবুর্চির সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। বিয়ের পর সেই বাবুর্চি হয়ে গেলেন পুরোদস্তুর বেকার। মানুষের বাসায় কাজ করতেন রানু। ফেরি করে বিস্কুট বিক্রি করতেন। তারপর স্বামীর মৃত্যু হয়। অনেক কষ্ট করে একবার এক হাজার টাকার মতো জমান। একদিন সেই টাকাও চুরি হয়ে যায়।

‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’ ছবিতে হিমেশ রেশমিয়ার সুরে গান গেয়েছেন রানু মণ্ডল
‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’ ছবিতে হিমেশ রেশমিয়ার সুরে গান গেয়েছেন রানু মণ্ডল

এভাবেই রাস্তাঘাটে ঘুরতেন, নিজের মনে গাইতেন, কেউ খেতে দিলে খেয়েছেন। রানাঘাট রেলস্টেশনে বেশির ভাগ দিন কাটে। রোদে পোড়েন, বৃষ্টিতে ভেজেন। অভাব-অনটনে মানসিক ভারসাম্যও হারান কিছুটা। অন্যের রেডিও ছিল তাঁর গুরু। সবাই বলত, ‘লতাকণ্ঠি রানু পাগলি’।

একদিন সেই রানু পাগলির গানের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। লতা মঙ্গেশকরের ‘এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়’। জীবনের ৫৪ বসন্ত পার করার পর যা কিছু ঘটছে, সবকিছু যেন তাঁর কাছে গল্পের মতো, সিনেমার মতো মনে হচ্ছে। রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে তিনি পৌঁছে যান বিমানবন্দরে। চড়লেন উড়োজাহাজে। মুম্বাই যান। গত সপ্তাহে বলিউডে প্লেব্যাক করেছেন। সবার আগে রানুকে গান রেকর্ডের সুযোগ করে দেন হিমেশ রেশমিয়া। গানটি সফলভাবে রেকর্ড করা হয়।

হিমেশ রেশমিয়া জানান, সালমান খানের বাবা সেলিম খান নাকি তাঁকে একবার বলেছিলেন, প্রতিভা দেখলে তা বিকাশে যথাসম্ভব সহযোগিতা করতে। হিমেশ সেই উপদেশবাণীর যেন সদ্ব্যবহার করলেন।