বোহিমিয়ান ফ্রেডিকে চেনায় যে ৫ ছবি

>হলিউড ছবি বোহিমিয়ান র​্যাপসোডির মুক্তির প্রায় এক বছর হতে চলল। বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ গানের দল কুইনের ভোকাল ফ্রেডি মারকুরির জীবন অবলম্বনে নির্মিত ছবিটি সারা বিশ্বে তুমুল আলোড়ন ফেলেছে। ফ্রেডি মারকুরির চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে রামি মালেক অস্কারও পেয়েছেন। তবে এই বায়োপিকের আগেও কুইন ব্যান্ড ও ফ্রেডি মারকুরি নিয়ে বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্র হয়েছে। বোহিমিয়ান ফ্রেডি মারকুরিকে সেগুলোতে পাওয়া যায়। আজ ৫ সেপ্টেম্বর ফ্রেডি মারকুরির ৭৩তম জন্মদিনে সেগুলোর কয়েকটি সম্পর্কে জানা যাক।

ফ্রেডি মারকুরি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি (২০০০)

ফ্রেডি মারকুরির অজানা জীবন সম্পর্কে জানা যায় এই প্রামাণ্যচিত্রে। এতে আছে ফ্রেডির মা জের বালসারা, বোন কাশমিরা কুক, ভালোবাসার মানুষ মেরি অস্টিন, জিম হাটন এবং কুইন সদস্য ব্রায়ান মের সাক্ষাৎকার। আরও আছে ফ্রেডির দেওয়া বিরল সাক্ষাৎকারের ফুটেজ। জানা যায় ফ্রেডি মারকুরির শৈশব, কৈশোরে বেড়ে ওঠা ও বড় হওয়ার অজানা সব গল্প।

বিকামিং কুইন (২০০৪)

এই প্রামাণ্যচিত্রে কুইন ব্যান্ডের শুরুর দিনগুলোর কথা জানা যায়। ফ্রেডি মারকুরি, ব্রায়ান মে, জন ডেকন ও রজার টেলর মিলে সত্তরের দশকজুড়ে কী করে গড়ে তুলেছিলেন এই দল, সেটা জানা যাবে এখানে। ঘণ্টাব্যাপী এই প্রামাণ্যচিত্রে কুইনের কোনো গান নেই। তবে দুর্লভ সব সাক্ষাৎকার ও আর্কাইভ ফুটেজ বলে দেবে কুইনের পুরো গল্পটা।

কুইন: ডেজ অব আওয়ার লাইভস (২০১১)

কুইন–ভক্তরা এ বিষয়ে অন্যতম সেরা প্রামাণ্যচিত্র বলে মনে করেন এটিকে। দুই ঘণ্টার এই ছবিতে কুইন ব্যান্ড সদস্যদের সাক্ষাৎকার তো আছেই, আরও আছে তাঁদের বিভিন্ন কনসার্ট ও পরিবেশনার পর্দার আড়ালের সব কাহিনি। ফ্রেডির মৃত্যুর পর ১৯৯২ সালের ২০ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উইম্বলি স্টেডিয়ামে হয় ‘দ্য ফ্রেডি মারকুরি ট্রিবিউট কনসার্ট ফর এইডস অ্যাওয়্যারনেস’। তার ফুটেজ আছে এই ছবিতে। সেই কনসার্টে গেয়েছিলেন ডেভিড বোয়ি, জর্জ মাইকেল ও এল্টন জনের মতো শিল্পীরা।

কুইন: মারকুরি রাইজিং (২০১১)

সস্তা জনপ্রিয়তার পেছনে না ছুটে কুইন সদস্যরা কেবল মিউজিক করতে চেয়েছিলেন। এই ছবিতে দেখা যাবে, কীভাবে সেটা করেছিল কুইন। ফ্রেডি মারকুরির নেতৃত্বেই সারা বিশ্বকে নিজেদের জাত চিনিয়েছিল কুইন ব্যান্ড ও তার সদস্যরা। ছবিতে আছে কুইন সদস্য ব্রায়ান মে, বিভিন্ন গানের প্রযোজক, দলের ব্যবস্থাপকদের সাক্ষাৎকার। দলের হয়ে ফ্রেডি মারকুরির শেষ পরিবেশনার কথাও এই ছবিতে পাওয়া যায়।

ফ্রেডি মারকুরি: দ্য গ্রেট প্রিটেনডার (২০১২)

এটি অনেকটা কুইন: ডেজ অব আওয়ার লাইভস প্রামাণ্যচিত্রের সিক্যুয়াল। আশির দশকে ফ্রেডি দল থেকে আলাদা হয়ে এককভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন। টানাপোড়েনের সেই সময়ের কথা আছে এই ছবিতে। ছবিটি এমি পুরস্কার পেয়েছিল। এখানে মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে ফ্রেডির কোলাবরেশনের দুর্লভ অডিও আছে।

ফ্রেডি মারকুরি
ফ্রেডি মারকুরি

ফ্রেডির ৫

ফ্রেডি মারকুরির পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল ফারুক বালসারা। জন্ম জাঞ্জিবারের (বর্তমানে তানজানিয়া) স্টোন টাউনে। পার্সি পরিবারের সন্তান ফ্রেডির শৈশব কাটে তানজানিয়া ও ভারতে। সত্তরের দশকে কুইন ব্যান্ডে যোগ দেওয়ার সময় আইনিভাবে নিজের নাম ফ্রেডি মারকুরি রাখেন তিনি।

ফ্রেডি মারকুরির প্রতিভার কথা বলে শেষ করা যায় না। নিজের অনন্য কণ্ঠ, নেতৃত্বগুণ আর ব্যবসায়িক বুদ্ধি—এই তিনের সমন্বয়ে ফ্রেডি কুইনকে সাফল্যের উচ্চতম শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কুইনের জন্য ‘বোহিমিয়ান র​্যাপসোডি’, ‘উই আর দ্য চ্যাম্পিয়নস’, ‘কিলার কুইন’, ‘লাভ অব মাই লাইফ’, ‘ক্রেইজি লিটল থিং কলড লাভ’-এর মতো অসাধারণ সব গানও লিখেছেন।

দর্শক মঞ্চে ফ্রেডির উদ্দাম, দিলখোলা পরিবেশনা দেখতে অভ্যস্ত। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে ফ্রেডি ছিলেন বেশ লাজুক। এ কারণে খুব একটা সাক্ষাৎকারও দিতে চাইতেন না।

বিড়াল খুব ভালোবাসতেন ফ্রেডি। একসময় তাঁর ১০টি বিড়াল ছিল! একমাত্র একক অ্যালবাম মি. ব্যাড গাই তিনি উৎসর্গ করেছিলেন বিড়ালগুলোকে। প্রিয় বিড়াল দালাইলার নামে একটি গানও লিখেছিলেন।

১৯৯১ সালের ২৪ নভেম্বর মৃত্যুর মাত্র এক দিন আগে ফ্রেডি প্রথমবারের মতো স্বীকার করেন, তিনি এইডস রোগে আক্রান্ত। যদিও কয়েক বছর ধরেই তাঁর ভাঙা শরীর দেখে ভক্তরা কিছুটা অনুমান করেছিলেন। 

গ্রন্থনা: প্রণব ভৌমিক