বড় উত্সবের মামুলি শুরু
আচমকা থেমে গেছে গাড়ি। সামনে রাস্তা বন্ধ। টরন্টো চলচ্চিত্র উত্সবের (টিফ) উদ্বোধনী আয়োজন চলছে। হাঁটা ছাড়া উপায় নেই। যাত্রীদের বিরক্ত হওয়ার কথা কিন্তু সেসবের লেশমাত্র নেই কারও চোখেমুখে। উত্সবের ঠিক আগে আগে ‘টরন্টো লাভস ফিল্ম’ শিরোনামে বড় বড় বিলবোর্ড উঠেছে টরন্টোর অলিগলিতে। এসব স্রেফ লোকদেখানো ব্যাপার নয়। এই শহরের মানুষজন আদতেই সিনেমা ভালোবাসে।
৫ সেপ্টেম্বর কানাডার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা প্রায় সাতটা। বাস থেকে নেমে উত্সব কেন্দ্র টিফ বেল লাইটবক্স ভবন অভিমুখে হাঁটা ধরেছি। স্রোতের মতো মানুষ যাচ্ছে। যেন ফেব্রুয়ারির শেষ শুক্রবারে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শাহবাগ হয়ে বাংলা একাডেমির পথে চলেছি। কী নেই পথের দুপাশে—বিনা পয়সার পপকর্ন, বিনা মূল্যের কোমল পানীয়র স্টল, ভ্রাম্যমাণ ব্যায়ামাগার; এমনকি আছে বিনা মূল্যে প্রসাধনসামগ্রী পাওয়ার স্টল।
টিফ বেল লাইটবক্স ভবনের কাছেই রয়্যাল থমসন হল। সামনেই তারকাদের আসার অপেক্ষায় শয়ে শয়ে মানুষ। একবার শুধু চোখে দেখা। কপাল ভালো হলে সেলফি। দুনিয়া কাঁপানো তারকাদের কাছাকাছি যাওয়ার এই তো মোক্ষম সুযোগ! উদ্বোধনী দিনে টিফ অবশ্য খানিক হতাশই করেছে শহরের সেলফি–শিকারিদের। এলি গ্লসনার কাজ করেন কানাডার সিবিসি টেলিভিশনে। তাঁর টিফের অভিজ্ঞতা বেশ কয়েক বছরের। উদ্বোধনী দিনে, হিলটন হোটেলের এক অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে আলাপ। ‘আজকের দিনটা আসলেই ম্যাড়ম্যাড়ে। লালগালিচার দিকে যাওয়ার বেশি আগ্রহ পাচ্ছি না।’ গ্লসনার সোজাসাপটা স্বীকার করলেন। তাঁর কথা খুব মিথ্যা নয়। ৫ সেপ্টেম্বর ওয়ান্স অয়্যার ব্রাদার্স ছবির প্রদর্শনী দিয়ে পর্দা উঠেছে টরন্টো চলচ্চিত্র উত্সবের। বাছাই তালিকায় এত বহুপ্রতীক্ষিত ছবি থাকতে কেন এই একটি কানাডিয়ান রকব্যান্ডবিষয়ক তথ্যচিত্র দিয়ে উৎসব শুরু হলো, সেটা উত্সবের কর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।
লালগালিচায় চোখে পড়ার মতো তারকা বলতে দিনশেষে বর্ষীয়ান চিত্রনির্মাতা মার্টিন স্করসেসি আর রন হাওয়ার্ড। দ্য পারসোনাল হিস্ট্রি অব ডেভিড কপারফিল্ড ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে লালগালিচায় দেখা মিলেছে অভিনেতা দেব প্যাটেলের। দিনের অন্য উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে ছিল আওয়ার লেডি অব দ্য নাইল ও আই অ্যাম ওম্যান।