'ফেরাতে পারিনি' গানের ভিডিওতে থাকবেন রুনা লায়লা

রুনা লায়লা
রুনা লায়লা

মিরপুর রোডের ‘ড্রিমস’ নামের বাড়িতে ঢুকতেই কানে ভেসে এল একটি গান। ‘ফেরাতে পারিনি আর তোমাকে এ ভালোবাসায়, তবুও ফেরানো পথে রয়েছি আশায় আশায়’। এগিয়ে আরেকটু চোখ বাড়াতেই বাড়ির ভেতরে লাইট, ক্যামেরা, আর কলাকুশলীদের ভিড়ের মধ্যে দেখা গেল কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী রুনা লায়লাকে। যে গানটি বাজছিল, সেটি তাঁরই। অনেক দিন পর রুনা লায়লা নতুন একটি মৌলিক গান করেছেন। গানটির মিউজিক ভিডিওর শুটিং হচ্ছিল তাঁর বাড়িতে। একদফা শুটিং শেষ। তখন চলছিল দ্বিতীয় দফার শুটিং। মিউজিক ভিডিওর পরিচালক শাহরিয়ার পলক মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে ‘কাট’ বলতেই ক্যামেরা বন্ধ করা হলো।

এই সময়ের গানে যে ধরনের মিউজিক ভিডিও হয়, এ গানটির ক্ষেত্রেও সে রকম করা হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের মিউজিক ভিডিওতে আগে কাজ করেননি রুনা লায়লা। তাঁর মুখোমুখি হয়ে তাই প্রথমেই জানতে চাই, শেষ কবে গানের শুটিং করেছেন। রুনা লায়লা মনে করতে পারলেন না। তবে স্মৃতি হাতড়ে বললেন, ‘বাইরে শুটিং করা আমার যে কটা গান, তার বেশির ভাগই বিটিভির জন্য।’
সময়টা জানতে চাইতেই বললেন, ‘স্বাধীনতার পর আমি দেশে ফিরে আসি ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে। ওই বছরই আমি দেবু ভট্টাচার্যের সুরে বিটিভিতে বেশ কয়েকটি গান করি। তবে বরকতুল্লাহর প্রযোজনায় ‘উপহার’ অনুষ্ঠানে পাঁচটি গান করেছিলাম, যে গানগুলো বিটিভির ফিলার সং হিসেবে সব সময় প্রচারিত হতো।’

মনে পড়ে গেল সাদা-কালো যুগের বিটিভিতে প্রচারিত সেই গানগুলোর কথা, ‘যখন থামবে কোলাহল’, ‘যখন আমি থাকব নাকো’, ‘শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব’, ‘এই বৃষ্টিভেজা রাতে চলে যেও না’। ওই সময়ে বিটিভিতে আরও কিছু গানও করেছিলেন রুনা লায়লা। সেই গানগুলোর কথাও বললেন, যার মধ্যে ‘ভাষার জন্য যারা দিয়ে গেল প্রাণ ভুলিনি আমরা’, ‘পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম’, ‘বাড়ির মানুষ কয় আমায় তাবিজ করেছে’, ‘নোটন নোটন পায়রাগুলো’ এবং কবি শামসুর রাহমানের লেখা ‘স্মৃতি ঝলমল সুনীল মাঠের কাছে’। এ গানগুলো নির্মাণ করেছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন, মুসা আহমেদ ও খালেদা ফাহমী। রুনা লায়লা বলেন, ‘যেহেতু এই গানগুলো প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ফাঁকে প্রচারিত হতো, তাই এগুলোকে ‘ফিলার সং’ বলা হতো। এখন সেই গানগুলোর নতুন নাম মিউজিক ভিডিও।

‘ফেরাতে পারিনি’ শিরোনামের নতুন গানটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রুনা লায়লা বলেন, ‘এটি আমারই সুর করা। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন রাজা কাশেফ। প্রথমবারের মতো নিজের সুর করা গান নিজেই গাইছি, অনুভূতিটা তাই অন্য রকম। আর আত্মোপলব্ধি হলো, যেহেতু গানটির কথা, সুর, সংগীতায়োজন ভালো হয়েছে, তাই বলতে পারি, দর্শক-শ্রোতা গানটি পছন্দ করবেন।’ রুনা লায়লা জানালেন, গানটি ধ্রুব মিউজিক স্টেশন থেকে মুক্ত হবে শিগগিরই।