করিম স্মরণে 'মহাজনের নাও'-এর ১২৫তম প্রদর্শনী

‘মহাজনের নাও’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: প্রথম আলো
‘মহাজনের নাও’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: প্রথম আলো

বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের জীবন, সংগীত ও দর্শন নিয়ে সুবচন নাট্য সংসদের নাটক ‘মহাজনের নাও’। নাটকটি লিখেছেন শাকুর মজিদ। আর নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক সুদীপ চক্রবর্তী। গান আর কথামালার সমাহারে আলোচিত নাটকটির ১২৪টি প্রদর্শনী হয়ে গেছে। আগামী শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটির ১২৫তম প্রদর্শনী পূর্ণ হবে। 

সুবচন নাট্য সংসদের প্রধান আহাম্মেদ গিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, ‘১২ সেপ্টেম্বর বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। আমরা “মহাজনের নাও”-এর ১২৫তম প্রদর্শনী উৎসর্গ করব তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে। প্রদর্শনী শেষে শাহ আবদুল করিমের জীবন ও দর্শন এবং নাটকের ১২৫তম সন্ধ্যা পূর্ণ করা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।’

ইতিমধ্যে সুবচনের জনপ্রিয় এই নাটক ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জাতীয় নাট্য উৎসব ও দেশের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়া, লন্ডন, ভুটান, আসাম, ত্রিপুরা, বহরমপুর, জলপাইগুড়ি ও কলকাতার বিভিন্ন স্থানে আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবসহ অষ্টম থিয়েটার অলিম্পিকে ওডিশা ও দিল্লির এনএসডিতে নাটকটির প্রদর্শিত হয়।

‘মহাজনের নাও’ নাটকের শিল্পীরা । ছবি: প্রথম আলো
‘মহাজনের নাও’ নাটকের শিল্পীরা । ছবি: প্রথম আলো

শাহ আবদুল করিমের জীবন ও দর্শননির্ভর এই নাটকে দেখা যায় বাউল সম্প্রদায়ের একটা অংশ গান রচনা করে দেহতত্ত্ব নিয়ে। নিজেকে জানার, নিজেকে আবিষ্কার করার এবং সৃষ্টিকর্তাকে খোঁজার চেষ্টায় তাঁরা জীবনভর সাধনা করেন। এ সাধনার অংশ হিসেবে তাঁরা কেউ কেউ গান রচনা করেন এবং নিজেও গান। বাউল সাধক শাহ আবদুল করিমের সারা জীবনের সাধনা ছিল নিজেকে জানা এবং সৃষ্টিকর্তার রহস্য উদঘাটন করা। এ ক্ষেত্রে দেহতত্ত্বকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি অনেক গান লিখেছেন এবং যেহেতু শাহ আবদুল করিম সুনামগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের মানুষ ছিলেন, তাঁর গানে তিনি নৌকাকে অনেক বেশি ব্যবহার করেছিলেন; নিজের দেহের রূপক হিসেবে। তিনি নিজেকে ভেবেছিলেন যেন কোনো এক মহাজনের কাছ থেকে ধার পাওয়া এক নৌকা। যে নৌকার মালিক তিনি নন, শুধু সঠিকভাবে চালিয়ে কোনো এক ‘সোনারগাঁয়ে’ পৌঁছানোর গুরুদায়িত্ব তাঁর। জীবনের সায়াহ্নে এসে তাঁর নাও কোন গাঁয়ে ভিড়েছে-তা শুধু তাঁর মহাজন জানেন। মূলত শাহ আবদুল করিমের জীবনের জটিলতা, সংকট এবং তার থেকে উত্তরণের বিষয়গুলো এ নাটকে প্রকাশ পেয়েছে। তার সঙ্গে উঠে এসেছে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে তার বোধ এবং দর্শন।

নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন আহাম্মেদ গিয়াস, আনছার আলী, আসাদুল ইসলাম, শাহ সালাউদ্দিন, সোনিয়া হাসান, রুপা নাসরিন, লিঠু মণ্ডল, তানভীর আহাম্মেদ, ফজলুল হক, সোহেল খান, ইমতিয়াজ শাওন, হোসেন ইমরান, আল আমিনসহ অনেকে।