বাংলাদেশের গৌরব

মেড ইন বাংলাদেশ ছবির দৃশ্য
মেড ইন বাংলাদেশ ছবির দৃশ্য

টিফ বেল লাইটবক্স ভবনের তিনতলায় প্রেস লাউঞ্জ। ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় লাউঞ্জের এক কোনায় বসে এক কাপ কফি খাওয়া যায় কি না ভাবছি। এর মধ্যে হন্তদন্ত হয়ে হাজির ভারতীয় সাংবাদিক ফায়জাল খান। জানতে চাইলেন, ‘আপনার কাছে রুবাইয়াত হোসেনের নম্বর হবে?’ ফায়জাল খান ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। হ্যাংলা–পাতলা মানুষ। লম্বা চুলে পাক ধরেছে কিন্তু এখনো ছোটাছুটিতে ওস্তাদ। ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উত্সবে তাঁকে বহুবার দেখেছি কিন্তু কথা হয়নি কখনো। কানাডার টরন্টো উত্সবেও দেখছি তারকাদের সংবাদ সম্মেলন থেকে সিনেমা হল—সর্বত্র তাঁর ব্যস্ত পদচারণ। এই সাংবাদিক একাই নন। এবারের টরন্টো চলচ্চিত্র উত্সবে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন আর তাঁর মেড ইন বাংলাদেশ ছবি ঘিরে আগ্রহ। 

টরন্টো উত্সবের সিনেমা বিবরণীতে ছবিটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন উত্সব পরিচালক ক্যামেরন বেইলি। বাংলাদেশের একজন নারী নির্মাতার ছবি টরন্টোর মতো বড় উত্সবের অফিশিয়াল সিলেকশনে। বাংলাদেশের সিনেমার জন্য সুসংবাদ তো বটেই। 

এরই মধ্যে লন্ডন চলচ্চিত্র উত্সবেও আমন্ত্রণ পেয়েছে এই সিনেমা। রুবাইয়াত হোসেন অবশ্য মনে করছেন বড় উত্সবের সঙ্গে তাঁর ছবিটি বাংলাদেশের দর্শকদের দেখানো খুব জরুরি। ‘খুব ভালো সময় যাচ্ছে টরন্টোতে। পরিবেশকদের সঙ্গে মিটিং, আলাপ-আলোচনা, সাক্ষাৎকার—এসব নিয়ে ব্যস্ততা তো আছেই। ছবিটা বাংলাদেশের দর্শকদের দ্রুত দেখাতে পারলে সবচেয়ে আনন্দ পাব।’ বলছিলেন রুবাইয়াত হোসেন। 

৭ সেপ্টেম্বর টরন্টোর জ্যাকম্যান হলে ছিল মেড ইন বাংলাদেশ ছবির প্রদর্শনী। ছবির প্রদর্শনী শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন রুবাইয়াত। বাংলাদেশের নারী পোশাকশ্রমিকদের জীবন নিয়ে এই ছবি। মেড ইন বাংলাদেশ এক হিসেবে বলা চলে, বাংলাদেশের নারী পোশাকশ্রমিকদের স্বনির্ভর হওয়ার গল্পও। ছবিটি ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ ছিল প্রবাসী বাংলাদেশি অনেকের। তাঁদেরই একজন টরন্টোভিত্তিক বাংলাদেশি সাংবাদিক সারাহ্ নাফিসা সাহিদ। সারাহ্ বলছিলেন, ‘আমি মনে করি, রুবাইয়াতের মেড ইন বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ছবি। ছবিটি আমার ভালো লেগেছে। কারণ, এই সিনেমা পোশাকশ্রমিকদের মৌলিক মানবাধিকার পাওয়ার সংগ্রাম বড় পর্দায় তুলে ধরেছে।’