মহিদুল স্মরণে সম্মাননা পাচ্ছেন আসাদুজ্জামান নূর

আসাদুজ্জামান নূর ও সৈয়দ মহিদুল ইসলাম । ছবি: ফেসবুক থেকে
আসাদুজ্জামান নূর ও সৈয়দ মহিদুল ইসলাম । ছবি: ফেসবুক থেকে

সৈয়দ মহিদুল ইসলাম পদকে পাচ্ছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। সৈয়দ মহিদুল ইসলাম স্মরণ উৎসব-২০১৯ আয়োজনে এই পদক দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর উদ্যোগে কাল শনিবার শুরু হওয়া উৎসব চলবে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

উৎসবের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, এ বছর এ উৎসবটি এক যুগে পড়ছে। উৎসবে থাকছে পদক প্রদান, নাট্য প্রদর্শনী ও সম্মাননা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে বসবে এই আয়োজন। প্রতি সন্ধ্যায় দেখা যাবে দেশ ও বিদেশের নাটক। শনিবার প্রথম দিন থিয়েটার আরামবাগের নাটক ‘দ্রৌপদী পরম্পরা’। রোববার ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতের জলপাইগুড়ির অনামী থিয়েটার সেন্টারের নাটক ‘আর একটি প্রেমের গল্প’, ১৬ সেপ্টেম্বর থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নাটক ‘সুতায় সুতায় হ্যানা ও শাপলা’, ১৭ সেপ্টেম্বর ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর ‘তক্ষক’ ও ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রন্থিক নাট্যগোষ্ঠীর ‘গিরগিটি’ নাটকটি দেখা যাবে। নাটকগুলো মঞ্চস্থ হবে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে।

একটি চলচ্চিত্রের দৃশ্যে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে
একটি চলচ্চিত্রের দৃশ্যে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে

সৈয়দ মহিদুল ইসলাম পদক ছাড়াও বেশ কজন নাট্যবন্ধুকে সম্মাননা দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠী সূত্র জানিয়েছে, এবার মঞ্চবন্ধু সম্মাননা পাচ্ছেন তনিমা হামিদ, সুজিত সাহা (ভারত), শুভব্রত দে (ভারত), মীর জাহিদ হাসান ও সাধনা আহমেদ। দেওয়া হবে যুগল সম্মাননাও। এই সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন মোশাররফ করিম ও রোবেনা রেজা, আলী হায়দার ও সামিনা লুৎফা, মৈথিলী গুহ ও সীমান্ত মৈত্র, মাসুদ সুমন ও মুমু মাসুদ এবং অভিজিৎ সেনগুপ্ত ও দীপ্তা রক্ষিত।

টিভি নাটকের দৃশ্যে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম ও অমল বোস। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে
টিভি নাটকের দৃশ্যে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম ও অমল বোস। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে

সৈয়দ মহিদুল ইসলাম স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকে প্রথম সারির একজন। ১৯৭৭ সালে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি) থেকে নাট্যতত্ত্বে স্নাতকোত্তর করে এসেছিলেন। সহপাঠী হিসেবে সেখানে পেয়েছিলেন রাজ বাব্বর, স্মিতা পাতিল, নাসিরউদ্দিন শাহকে। তাঁর সেই পড়া ঢাকার নাটককে সমৃদ্ধ করতে কাজে দিয়েছিল। ১৯৮৪ সালে ঢাকায় তিনি চালু করেছিলেন ‘স্কুল অব অ্যাকটিং’। অভিনয় শিখে ঢাকার ছেলেমেয়েরা অভিনয়শিল্পী হবে, এই ছিল তাঁর স্বপ্ন। শিক্ষক হিসেবে সুনাম ছিল সৈয়দ মহিদুলের। অল্প কথায় সহজে বুঝিয়ে দিতেন, কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে। অনেক চলচ্চিত্র পরিচালক মহিদুলের কাছে নিয়ে যেতেন তাঁদের ছবির নায়ক-নায়িকাদের প্রস্তুত করে দেওয়ার জন্য। মহিদুলের ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, অভিনেতা ও পরিচালক গাজী রাকায়েত, অভিনেতা শাহিন আলম, বাসন্তী গোমেজ প্রমুখ।

উৎসবে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম পদক ছাড়াও বেশ কজন নাট্যবন্ধুকে সম্মাননা দেওয়া হবে। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে
উৎসবে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম পদক ছাড়াও বেশ কজন নাট্যবন্ধুকে সম্মাননা দেওয়া হবে। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে

১৯৭৬ সালে সৈয়দ মহিদুল ইসলাম কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন নিজের নাটকের দল ‘ব্যতিক্রম’। ১৯৭৮ সাল থেকে দলটি কাজ শুরু করে ঢাকায়। তিনি নিজে লিখতেন, বিদেশি নাটক অনুবাদ করতেন, নির্দেশনা দিতেন, স্টেজ সাজাতেন। তাঁর নাটকে অতিকায় সেট থাকত না, অভিনয়টাই সেখানে গুরুত্ব পেত। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘বিশ্বনাটক’ শুরু করেছিলেন তিনি। নিজে অভিনয় করেছেন টিভি নাটকে, চলচ্চিত্রে, এমনকি চলচ্চিত্র নির্মাণও করেছেন। তাঁর নির্মিত ছবি দুটি ‘আমি কার’ও ‘স্বপ্নযাত্রা’।

দেওয়া হবে যুগল সম্মাননাও। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে
দেওয়া হবে যুগল সম্মাননাও। ছবি: ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর সূত্রে