কারগিলে আহত সিদ্ধার্থ

সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

১৯৯৬ সালের একটি দিন। এলাহাবাদ এসএসবির (সার্ভিস সিলেকশন বোর্ড) সাক্ষাৎকার প্যানেলের সামনে বসা এক তরুণ। শুরু হলো প্রশ্নোত্তর পর্ব—

: আপনি বিএসসি মেডিকেল সায়েন্স। পাশাপাশি ইংরেজিতে এমএ করেছেন। টেবিল টেনিসে জাতীয় পদকও রয়েছে আপনার। কারাতে পারদর্শী, একাধিক পদক জিতেছেন। তা ছাড়া আপনি সিডিএসে (কমবাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিস) সারা ভারতের সেরাদের মধ্যে একজন। আপনি বুদ্ধিমান। এত ডিগ্রি নিয়ে আপনি যেকোনো ভালো চাকরি পেতে পারেন। সেনাবাহিনীতে কেন?
: ‘পরমবীর চক্র’ পাওয়ার জন্য, স্যার।

এর মাত্র তিন বছর পর ১৯৯৯ সালের ১৫ আগস্ট ‘পরমবীর চক্র’ পান বিক্রম বাতরা। তত দিনে তাঁর নামের আগে যুক্ত হয়েছে ‘ক্যাপ্টেন’। কিন্তু ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা গ্রহণ করার জন্য সেদিন ছিলেন না তিনি। কারণ তাঁর ৩৮ দিন আগে কারগিল যুদ্ধে সাহসের সঙ্গে অসামান্য অবদান রেখে মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে যে বার্তা আদান-প্রদান করতেন, সেখানে নাকি তাঁরা বিক্রম বাতরার ছদ্মনাম হিসেবে ব্যবহার করতেন ‘শের শাহ’ বা সিংহদের রাজা।

বলিউডের বড় পর্দায় ফিরছেন বিক্রম বাতরা। তাঁর চরিত্রে অভিনয় করবেন বলিউড তারকা সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। সিনেমার নাম ‘শের শাহ’। এই ছবির জন্য ৩৪ বছর বয়সী এই বলিউড তারকা এখন ছবির শুটিংয়ের জন্য কারগিল আছেন। আর সেখানেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাহাড়ি পথে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন সিদ্ধার্থ। সেখানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শরীরের অনেক জায়গায় কেটে গেলেও বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে এর জন্য শুটিং বন্ধ করেননি সিদ্ধার্থ।

সিদ্ধার্থ বললেন, ‘এর ফলে সংক্রমণ ঘটার আশঙ্কা আছে। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। ঘা শুকাতে অন্তত কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। কিন্তু শুটিংয়ের দিন–তারিখ সব পূর্বনির্ধারিত। নড়চড় করার সুযোগ নেই। তাই আহত হয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই।’

সিদ্ধার্থ জানান, দুর্ঘটনা আরও মারাত্মক হতে পারত। আঘাতও গুরুতর হতে পারত। কারগিলে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে খুব বেশি ছবির শুটিং হয়নি। একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। আর সত্যিকারের যুদ্ধ তো এখানেই হয়েছে। তাই পর্দায়ও পুরো ব্যাপারটা বাস্তব দেখাবে।’

তবে কাশ্মীরের কারগিলে যুদ্ধ করা যেমন সহজ নয়, শুটিং করাও না। এখানে শুটিংয়ের ঝুঁকি নিয়ে সিদ্ধার্থ বলেন, ‘পাহাড়গুলো খুবই চোখা আর ধারালো। এখানে নিরাপদে শুটিং করা বড় চ্যালেঞ্জ।’

ছবিটি পরিচালনা করছেন বিষ্ণু ওয়ার্দান। তিনি মূলত তামিল আর তেলেগু ভাষার ছবি পরিচালনা করেন। এবারই প্রথম হিন্দি ভাষার ছবি পরিচালনা করছেন। আর এখানে সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে পর্দা ভাগ করবেন তাঁর ‘কথিত প্রেমিকা’ কিয়ারা আদভানি। এখানে সিদ্ধার্থ মালহোত্রাকে দেখা যাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পোশাকে। এর আগে ‘আইয়ারি’ ছবিতে (২০১৮) তাঁকে ভারতীয় সৈনিকের বেশে দেখা গেছে।