এফডিসিতে আবার নির্বাচনী হাওয়া

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মিশা সওদাগর, মৌসুমি, শাকিব খান, রিয়াজ, ফেরদৌস, পপি, জায়েদ খান, পূর্ণিমার নাম শোনা যাচ্ছে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মিশা সওদাগর, মৌসুমি, শাকিব খান, রিয়াজ, ফেরদৌস, পপি, জায়েদ খান, পূর্ণিমার নাম শোনা যাচ্ছে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে প্রযোজক সমিতির নির্বাচন নিয়ে বেশ সরগরম ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) প্রাঙ্গণ। ২৭ জুলাই প্রযোজকদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয়। দুই মাস না যেতে আবারও নির্বাচন কেন্দ্র করে সরগরম এফডিসি। এবার কড়া নাড়ছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। ইতিমধ্যে তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে, শিল্পী সমিতির ২০১৯-২০২১ মেয়াদের কমিটি নির্বাচনে ভোট হবে ১৮ অক্টোবর।

এই ভোট ঘিরে ২১ সদস্যের কমিটির প্রধান দুটি পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে ক্রমেই সরগরম হয়ে উঠছে চলচ্চিত্রপাড়া। নির্বাচনের উত্তাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পাওয়া যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে এই দুটি পদে একাধিক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে। এবার নতুন মুখও দেখা যাবে। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।

এফডিসি সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে চলতি কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদের মিটিংয়ে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়। তবে এখনো তফসিল ঘোষণা করা হয়নি।

সমিতির চলতি কমিটির সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান প্রথম আলোকে বলেন, কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সবার সম্মতিতে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের তারিখ আগামী ১৮ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে আগামী ৪ অক্টোবর বিগত দুই বছরের সমিতির কাজের হিসাব-নিকাশের ওপর তিনি প্রতিবেদন দেবেন। ওই দিন তফসিল ঘোষণা করা হবে।

বর্তমান সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান (বাঁয়ে))
বর্তমান সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান (বাঁয়ে))

এদিকে আগামী নির্বাচনে একাধিক সম্ভাব্য প্যানেল বা প্রার্থীর চূড়ান্ত ঘোষণা এখনো আসেনি। তবে নির্বাচনেও এবারও মিশা সওদাগর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খান প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে চিত্রনায়িকা মৌসুমিকে সভাপতি করে তৈরি হচ্ছে আরেকটি প্যানেল। এরই মধ্যে মৌসুমি আনুষ্ঠানিকভাবেই নিজের প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি প্রার্থী হচ্ছেন। মৌসুমি বলেন, ‘সবার অনুরোধেই প্রার্থী হতে যাচ্ছি। আমারও আগ্রহ ছিল। এই জায়গাটাতে এসে চলচ্চিত্র, চলচ্চিত্রশিল্পীদের জন্য নতুন কিছু করতে চাই।’ তার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখা যেতে পারে চিত্রনায়ক সাইমন সাদিককে। তবে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্বাচনে না করার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘এর আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নির্বাচন করব। কিন্তু আমার কয়েকজন হিতাকাঙ্ক্ষী নির্বাচন না করার পরামর্শ দিলেন। আমিও ভাবলাম এ মুহূর্তে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দাঁড়ানো ঠিক হবে না। তাই আপাতত অভিনয় নিয়েই আমি ব্যস্ত থাকতে চাই।’

রোববার সন্ধ্যায় এফডিসিতে গিয়ে নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিব খান, পূর্ণিমা, পপি, নিপুণ, ইমন, নীরবের মতো তারকা শিল্পীদের নামও শোনা গেছে। তবে কোনো কিছুই এখনো চূড়ান্ত নয়। যে কোনো সময় বিশেষ চমক নিয়ে হাজির হতে পারে নতুন কোনো প্যানেল।

মৌসুমি চলতি কমিটির কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিন মাসের মাথায় পদত্যাগ করেন তিনি। মিশা সওদাগর চলতি কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘চলতি কমিটির এই পদে থেকে চলচ্চিত্রের জন্য অনেক কাজই করেছি। কিছু কাজ বাকি আছে। সভাপতি হিসেবে আসতে পারলে বাকি কাজগুলো শেষ করতে চাই।’

গত ২৪ মে সমিতির দুই বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সমিতির গঠনতন্ত্র ৮ অনুচ্ছেদের (চ) অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ৯০ দিন অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। সে হিসেবে ২৪ আগস্টের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এমনকি গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে আরও প্রায় দুই মাসের মাথায় এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এ প্রসঙ্গে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘বিশেষ কিছু কারণে আমরা কিছুটা দেরিতে নির্বাচন করছি। কারণগুলো কী সেটা সবাই জানেন। নানা ব্যস্ততা, ঝামেলা শেষ করে নতুন নির্বাচনের তারিখ দিয়েছি। আশা করছি ঘোষিত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারব।’ তিনি জানান, ৪ অক্টোবর তফসিল ঘোষণা করা হবে। এরপর শিল্পীদের ভোটার তালিকাসহ অন্যান্য তথ্য প্রকাশ করা হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন কিছু শিল্পী সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন সমিতিতে। যাচাই-বাছাই শেষে কিছু নতুন ভোটার যোগ হতে পারে।