লতার জীবনের অন্যতম সেরা উপহার

লতা মঙ্গেশকর ও অমিতাভ বচ্চন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
লতা মঙ্গেশকর ও অমিতাভ বচ্চন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৮ সেপ্টেম্বর লতা মঙ্গেশকরকে উপহার পাঠিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন। ডেকান ক্রনিকলকে আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে লতা মঙ্গেশকর বলেছেন, ‘এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা উপহার।’

লতা মঙ্গেশকর আরও বলেন, ‘অমিতাভ বচ্চন আর জয়া বচ্চনকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। তাঁরা দুজনই অসাধারণ। আমি তাঁদের অভিনয়ের ভক্ত। আমি জানি, তাঁরাও আমার গানের ভক্ত। “সিলসিলা” ছবিতে বচ্চন সাহেবের সঙ্গে আমার গান করার সুযোগ হয়। কিন্তু আমরা একসঙ্গে গানটি রেকর্ড করতে পারিনি। কারণ, তিনি তখন দেশের বাইরে ছিলেন। প্রথমে আমার অংশটুকু গেয়েছিলাম। আর তিনি পরে আমারটা শুনে মিলিয়ে পরের অংশ গেয়েছিলেন।’

২৮ সেপ্টেম্বর ১৯২৯। সেদিন গুজরাটি মা আর মারাঠি বাবার ঘরে জন্মেছিলেন ‘ভারতের নাইটিঙ্গেল’ লতা মঙ্গেশকর। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁর ৯০তম জন্মদিনে ভারত সরকার তাঁকে ‘ডটার অব দ্য নেশন’ খেতাবে ভূষিত করেছে। আর লতা মঙ্গেশকরের জন্মদিনে বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন ৭ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন নিজের টুইটারে।

এই ভিডিওতে দেখা যায়, অমিতাভ বচ্চন লতা মঙ্গেশকরের সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি বর্ণনা করেছেন খুবই কাব্যিক ভাষায়। বলেছেন, ‘লতা মঙ্গেশকরের গান সুন্দর, হৃদয়ের সবচেয়ে সুন্দর শব্দ আর সুন্দর সুর। লতাজি যখন গান করেন, তখন সেই সুরের সঙ্গে হৃদয়ও প্রবাহিত হয়। তারপর গান শেষে যখন হৃদয় আবার আত্মার কাছে ফিরে আসে, তখন সে পরিপূর্ণ। সেই হৃদয়ে তখন অন্য কিছুর প্রয়োজন হয় না।’

ওই ভিডিওতে অমিতাভ বচ্চন আরও বলেছেন, লতা মঙ্গেশকরের কাছে শ্রোতা আর শিল্পীদের সেই ঋণ, যে ঋণ সারা জীবনেও শোধ করা যায় না। সেই ঋণ কেবল কৃতজ্ঞতাভরে স্বীকার করতে হয়।

ভিডিওতে অমিতাভ বচ্চন মজা করতেও ছাড়েননি। তিনি লতা মঙ্গেশকরকে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘আমার আসলে এ কথাগুলো মারাঠি ভাষায় বলা উচিত ছিল। কিন্তু আমার মারাঠি শুনে আমি নিজেই ভয় পাই। বন্ধুকে ভয় দেখানো নিশ্চয়ই বন্ধুর কর্ম নয়।’

আজ দুপুর পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখবার দেখা এই ভিডিও শেয়ার করে লতা মঙ্গেশকর লিখেছেন, ‘অমিতাভ বচ্চন আমাকে নিয়ে একটি বিশেষ ভিডিও তৈরি করেছেন। সেখানে তিনি যেভাবে সবচেয়ে কাব্যিক আর শৈল্পিক শব্দ ব্যবহার করে আমাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, তাতে আমি আপ্লুত। একজন সত্যিকারের শিল্পীর ভাষা এমনই হওয়া উচিত। আর এটা কেবল শ্রী হরিবংশ রাই বচ্চনের ছেলের পক্ষেই সম্ভব।’

সাত দশক ধরেই লতা মঙ্গেশকর ভারতীয় সংগীত মহলে খ্যাতির চূড়ায় আছেন। প্রবাদতুল্য এই শিল্পীর জন্মদিনে কবি ও গীতিকার প্রসূন যোশি লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে একটি গান লিখেছেন। আরও জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লতা মঙ্গেশকরের গানের বড় ভক্ত। তাঁর মতে, লতা মঙ্গেশকর ভারতের সংগীতজগতের অন্যতম প্রতিনিধি।

লতা মঙ্গেশকর ইতিমধ্যে যত পুরস্কার আর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, তার কেবল শুরু আছে, শেষ নেই। ২০০১ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ভারতরত্ন পেয়েছেন তিনি। এর আগে ১৯৬৯ ও ১৯৯৯ সালে তাঁকে যথাক্রমে পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণ খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৮৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড পান। সবচেয়ে বেশি গানে কণ্ঠ দেওয়ার সুবাদে ১৯৭৪ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তাঁর নাম ওঠে।