কদিন বাদেই গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব

চট্টগ্রামের তির্যক নাট্যদলের ইডিপাস নাটকটিও দেখানো হবে উৎসবে।  ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের তির্যক নাট্যদলের ইডিপাস নাটকটিও দেখানো হবে উৎসবে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় শুরু হচ্ছে নাটকের বড় আয়োজন গঙ্গা–যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। ১০ দিনে ৪০টি নাটক নিয়ে ১১ অক্টোবর শুরু হচ্ছে উৎসবটি। বাংলাদেশের ৩৬টি দলের সঙ্গে এ উৎসবে নাটক নিয়ে আসছে ভারতের ৪টি দল। এতগুলো দলকে জায়গা দেওয়ার পরও উৎসবে নাটক প্রদর্শনের সুযোগ না পেয়ে মনঃক্ষুণ্ন বাংলাদেশের বেশ কিছু দল।

প্রদর্শনীর জন্য প্রতি বছর এ উৎসবে রাখা হয় প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলোকে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় দর্শকপ্রিয়তা, ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতিশীল নাটকগুলোকে। বিগত বছরে নিজেদের নাটক প্রদর্শনের সুযোগ পায়নি এ রকম দলগুলোকেও নাটক মঞ্চায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। এমনকি উৎসবে দেখানো হয় ঢাকার বাইরের অনেক নাটক। তবু এ বছরের উৎসবে জায়গা না পেয়ে অনুযোগ করেছে বেশ কিছু দল ও নাট্যকর্মী। অনেকের প্রশ্ন, উৎসবে নতুন নাটক এত কম কেন? কেনই বা এ উৎসবের আগে আবেদন আহ্বান করা হয় না? বছরের পর বছর নিজেদের মতো করে এ রকম একটি উৎসব চালিয়ে নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত।

সিলেটের মণিপুরী থিয়েটারের দলপ্রধান শুভাশিস সিনহা মনে করেন, সারা বছর যে নাটকগুলো মঞ্চে দেখা যায়, উৎসবে সেগুলো না রাখাই উচিত। তা ছাড়া দলকে প্রাধান্য না দিয়ে বরং ভালো ও মানোত্তীর্ণ নাটকগুলোকে এ রকম উৎসবে জায়গা দেওয়া দরকার।

গঙ্গা–যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদের সদস্যসচিব আখতারুজ্জামান বলেন, ‘৪০টির বেশি দলকে নাটক প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া কঠিন। গত বছর এই উৎসবে যে নাটক দেখানো হয়েছে, তার বেশির ভাগই বাদ দেওয়া হয়েছে। মহিলা সমিতিতে যে নাটকগুলো প্রদর্শিত হবে, কয়েকটা বাদে তার প্রায় সবগুলো দলের নাটকই নতুন। অনেকেই এখানে নিজেদের নাটক প্রদর্শন করতে চায়, এটি ইতিবাচক। পরবর্তী সময়ে আমরা চেষ্টা করব যেন নতুন নতুন দলকে এখানে জায়গা করে দেওয়া যায়। উৎসব নিয়ে সমালোচনাগুলোকে আমরা সাদরে গ্রহণ করছি। এগুলো আমাদের সামনে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে। কোজাগরি বছর দুই হলো পশ্চিমবঙ্গের প্রশংসিত একটি নাটক। দায়বদ্ধ নাটকটি অনেক পুরোনো। ঐতিহ্য ও সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে একে জায়গা দেওয়া হয়েছে।’

নাট্যজন মোহাম্মদ বারী মনে করেন, কোনো উৎসবে যোগ দেওয়ার প্রথম ক্রাইটেরিয়া হওয়া উচিত নতুনত্ব। তিনি বলেন, উৎসবে নতুন নাটকগুলোকেই জায়গা দেওয়া উচিত। তবে ঢাকায় নানা সমীকরণ মিলিয়ে নাটকগুলো নির্বাচন করা হয়। তবে শিল্প–সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এ ধরনের সমীকরণ কম থাকাই ভালো। এ উৎসব অনেক দিন ধরে হচ্ছে। আরও কিছুটা সময় পেলে অবশ্য নাটক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় একটি অনন্য মান তৈরি করা সম্ভব। নাটক নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, নিয়মিত নাটক করছে এ রকম আরও লোকজনকে নিয়ে একে আরও কিছুটা সর্বজনীন করা সম্ভব।

গঙ্গা–যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদের আয়োজনে এ উৎসবে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির প্রধান মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার ও স্টুডিও থিয়েটারের পাশাপাশি মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে থাকবে উৎসবের নাটকগুলো।