সভা থেকে বেরিয়ে গেলেন রিয়াজ

চিত্রনায়ক রিয়াজ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
চিত্রনায়ক রিয়াজ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

কথা বলতে না দেওয়ার অভিযোগ করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা থেকে বেরিয়ে যান বর্তমান কমিটির সহসভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিবছর একবার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলে গত বছর তা হয়নি। তাই আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিএফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে দুই বছরের সভা একসঙ্গে আয়োজন করা হয়। এখানে দুই বছরের আয়-ব্যয়সহ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নানা কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।

দুপুর ১২টা। চিত্রনায়ক রিয়াজ কথা বলার জন্য বারবার সুযোগ চান। প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি এই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাঁকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে হইচই হয়। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘এটি সাধারণ শিল্পীদের সভা, এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির আর কেউ কথা বলতে পারবেন না।’ এরপর রিয়াজ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে যান।

মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে প্রথম আলোকে রিয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় আছে, সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির কেউ কথা বলতে পারবেন না? এমন কোনো ধারা নেই। তাঁদের কিসের ভয়? আমি তাঁদের কাণ্ডকীর্তি ফাঁস করে দিতাম? সাধারণ সভায় তাঁরা এমনভাবে কথা বলছিলেন যে বর্তমান কমিটির সব অর্জন শুধু তাঁদের দুজনের। বাকিদের কোনো ভূমিকা নেই। এসব নোংরামি। এই নোংরামির মধ্যে আমি থাকতে চাইনি। তাই সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি।’

আপনি কী বলতে চেয়েছিলেন? রিয়াজ বলেন, ‘এমনিতেই প্রতিবছর একবার করে সাধারণ সভা হওয়ার নিয়ম। কমিটির কয়েকজনের কারণে তা করা যায়নি। দুই বছরের সভা এবার একসঙ্গে হচ্ছে। কিছু তো জানার বা বলার থাকতেই পারে।’

আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রসঙ্গে রিয়াজ বলেন, ‘কমিটির কোষাধ্যক্ষ যে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন, তা আমার কাছে পরিষ্কার না। দুই বছরে অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সংগ্রহ করেছে ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকা। শিল্পীদের জন্য খরচ হয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৩০০ টাকা। এই সহযোগিতার খরচ কি আরও বাড়ানো যেত না? এই টাকা তো শিল্পীদের সহযোগিতার জন্য দাতারা অনুদান দিয়েছেন। এত টাকা ফান্ডে ফেলে রাখার কারণ কী?’

এ ছাড়া আগের ৬২৪ জন ভোটার থেকে এবার কমিয়ে ৪৪৯ জন করা হয়েছে। বাদ পড়া শিল্পীদের সহযোগী সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। সহযোগীদের ভোটাধিকার নেই। গত ৩০ সেপ্টেম্বর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে অনেক নতুন শিল্পীকে ভোটার করা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে তালিকায় কিছু ব্যক্তির নাম রাখা হয়েছে, আবার একই নিয়মে অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও অনেকের নাম বর্তমান ভোটার তালিকায় নেই।

রিয়াজ বলেন, ‘নতুন ভোটার তালিকায় অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন ছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যায় না। কমিটির কয়েকজন সদস্য প্রভাব খাটিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। এসব অনিয়মের ব্যাপারে সভায় কথা বলতে চেয়েছিলাম।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘বার্ষিক সাধারণ সভার আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যায়। সাধারণ সভার কাজ হচ্ছে বছরজুড়ে সমিতির আয়-ব্যয়ের হিসাব ও নানা কার্যক্রম সাধারণ শিল্পীদের সামনে তুলে ধরা।’ তবে রিয়াজকে কথা বলতে না দেওয়ার জন্য যে কারণ দেখানো হয়েছে, সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ধারা নেই, কিন্তু আগের কমিটিগুলোর ধারাবাহিকতায় তা করা হয়েছে। এখানে সাধারণ শিল্পীরা প্রশ্ন করবেন, চলতি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জবাব দেবেন।’