পুরোনো নাটকে নতুন সন্ধ্যা

এ যেন শরৎসন্ধ্যায় সমকালীন বাংলা নাটকের মহা–আয়োজন। পুরোনো নাটক ফিরছে শহরে, নতুন নাটকে নতুন দলের উজ্জ্বল উপস্থিতি। মিলছে উৎসবের খবর। কেবল একটু সময় বের করে মন আর মনন দিয়ে দেখতে হবে। চলতি সপ্তাহের রাজধানীর নাট্য অঙ্গনের খবর জানাচ্ছেন মাসুম আলী
আরণ্যকের ময়ূর সিংহাসন নাটকের একটি দৃশ্য। ফাইল ছবি: আরণ্যক নাট্যদলের সৌজন্যে
আরণ্যকের ময়ূর সিংহাসন নাটকের একটি দৃশ্য। ফাইল ছবি: আরণ্যক নাট্যদলের সৌজন্যে

১৯৯৯ সালে মঞ্চে আসে ময়ূর সিংহাসন। ২০০৯ সালে নাটকটির শততম প্রদর্শনী হয়। মাঝে শুরু হয় বিরতি। একটা সময় দীর্ঘ বিরতি। উদ্বোধনের ২০ বছর এবং শততম প্রদর্শনীর ১০ বছর পর আবারও ঢাকার মঞ্চে ফিরেছে আরণ্যকের পুরোনো নাটক ময়ূর সিংহাসন

 ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর রাজারবাগের গঙ্গাসাগর দিঘির পাড়ে বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত শারদীয় নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হয় আরণ্যকের দর্শকপ্রিয় নাটক ময়ূর সিংহাসন। ৮ অক্টোবর সন্ধ্যা সাতটায় বেইলি রোডের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি মিলনায়তনে দর্শনীর বিনিময়ে হয় নাটকের আরেকটি প্রদর্শনী। দুটি প্রদর্শনীতেই ছিল দর্শকের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি।

আরণ্যক নাট্যদলের ৩২তম প্রযোজনা ময়ূর সিংহাসন। মান্নান হীরার রচনায় নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন শাহ আলম দুলাল। শততম মঞ্চায়নের পর অনিয়মিতভাবে মঞ্চে ময়ূর সিংহাসন–এর আসা-যাওয়া ছিল। দলের প্রধান নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘মাঝে আমরা বেশ কিছু নতুন নাটক নিয়ে আসি। ময়ূর সিংহাসন–এর পর মঞ্চে আরণ্যক আটটি মৌলিক নাটক আনে। এর মধ্যে রাঢ়াঙ, এবং বিদ্যাসাগর, ভঙ্গবঙ্গ, দ্য জুবিলি হোটেল-এর মতো আলোচিত নাটকও রয়েছে। নাটকগুলোর নিয়মিত প্রদর্শনী হয়। এখন থেকে ময়ূর সিংহাসনও নিয়মিত মঞ্চে থাকবে।’

ময়ূর সিংহাসন নাটকের ভেতর নাট্যকার নাটকের মানুষদের গল্পই বলেছেন। এতে উঠে এসেছে ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িকতার উত্থান ও পরবর্তীকালের ঘটনা, যার রেশ—এখনো বিলুপ্ত ভারতবর্ষের তিনটি দেশে রয়ে গেছে।

কথা হলো নাট্যকার মান্নান হীরার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মফস্বল শহরে আমার জীবনকাল শুরু। সে সময় ভালোভাবেই নিমজ্জিত ছিলাম নাটকের সঙ্গে। সেই বয়সে দেখা নাট্যাভিনেতাদের জীবন, কর্ম, বিশ্বাস, ত্যাগ-তিতিক্ষা আজও অন্তরে জ্বলছে। অনেকের অলক্ষ্যে নাটকের সেই আলো–জ্বালা মানুষদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে ঘটে যেত বড় বড় ট্র্যাজেডি। তার ইতিহাস আমরা রচনা করতে পারিনি। সেসব দেশপ্রেমিক মানুষের কথা স্মরণে লেখা এই নাটক।’

ময়ূর সিংহাসন ২০ অক্টোবর জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব’-এর সমাপনী দিনে আবার দেখা যাবে। কাছাকাছি সময়ে আরও কয়েকটি প্রদর্শনীর পরিকল্পনা আছে আরণ্যকের।