অবাঙালিদের প্রিয় 'আমি বাংলায় গান গাই'

দীর্ঘদিন ধরে শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চা করছেন মেরিনা আহমেদ। ছবি: প্রথম আলো
দীর্ঘদিন ধরে শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চা করছেন মেরিনা আহমেদ। ছবি: প্রথম আলো

ভাষাটা না জানলেও বাংলা গান পৃথিবীর অনেক জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরই পছন্দের। সে কারণে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের পাশাপাশি বাংলা গানটাও শেখে অনেকে। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বাস যে মার্কিন মুলুকে, সেখানে বাংলা গান শেখান প্রবাসী বাংলাদেশি মেরিনা আহমেদ। তাঁর অবাঙালি ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় নাকি ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি।

মেরিনা আহমেদ ১৬ বছর বয়সে বাংলাদেশ ছেড়েছেন। বসবাস শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রে। শৈশবে ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদ, পণ্ডিত বারীণ মজুমদারের কাছে সংগীতশিক্ষা নিয়েছেন। শিখেছেন আলতাফ মাহমুদ একাডেমি আর নজরুল একাডেমিতেও। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার আগেই সংগীতশিক্ষার জন্য ভারতে যান। পণ্ডিত যশরাজের কাছে দীর্ঘদিন তালিম নেন। এখনো তুমুল উদ্যমে শিখে চলেছেন এই বিদুষী। পাকিস্তান, মুম্বাই ও বেনারসের শিল্পীদের কাছে নানা ঘরানার গান শিখছেন এখনো। পরিবেশনার পাশাপাশি নিজেও শেখাচ্ছেন।

এক দশক হলো যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘ঊদ্গাম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন তিনি। নানা জাতির মানুষকে সেখানে উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম দেওয়া হয়। এই যেমন আজ ১১ থেকে ১৩ অক্টোবর নিউইয়র্কে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর নানা জায়গা থেকে সেখানে ছাত্ররা আসবেন। টানা তিন দিন গুরু মেরিনা আহমেদের বাড়িতে থাকবেন ছাত্রছাত্রীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিখবেন। রাতে গুরুদের জন্য গান করবেন।

মেরিনা জানান, গুরুভাই প্রীতম ভট্টাচার্য ও ওস্তাদ জাকির হোসেনের ছাত্র পৃথ্বীরাজ ভট্টাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই কর্মশালা পরিচালনা করবেন তিনি।

বাংলাদেশেও অনেক কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে ‘ট্যাগর গ্লোবাল’ নামের একটি সংস্থা শুরু করেছেন মেরিনা। গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ শনিবার ট্যাগর গ্লোবাল ও ঊদ্গামের যৌথ আয়োজনে ঢাকার ইস্কাটনে হলো প্রথম গানের আসর। বাংলাদেশে রবীন্দ্রসংগীতকে যাঁরা জনপ্রিয় করেছেন, তাঁদের নিয়ে আরও আসর করবে সংস্থাটি। পাশাপাশি করবে নাটক, লেখক আড্ডাসহ আরও অনেক কিছু।

মেরিনা বললেন, ‘সবাইকে তুখোড় পারফরমার হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আমি গান শিখেছি, শেখাব, গাইব। পাশাপাশি গান নিয়ে ভাবছি। গানকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কিছু করতে চাই। সে জন্যই এ উদ্যোগ। ইচ্ছা আছে গ্রামে একটা আশ্রম করব, সেখানেও গান শেখাব। সারা পৃথিবীতে বাংলা গানের চর্চা হচ্ছে আর বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে হবে না, সেটা হয় না।’

এ ধরনের কাজ একা করা যায় না। তাই সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন এই শিল্পী।