'হিটলারকে কমেডিয়ান বানিয়েছি'

‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবির দৃশ্য। ছবি: ইউটিউব থেকে নেওয়া
‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবির দৃশ্য। ছবি: ইউটিউব থেকে নেওয়া

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯। ৪৪তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামার রাত। জানা গেল, দিন শেষে হিট ‘জোজো র‍্যাবিট’। জোকিন ফিনিক্সের ‘জোকার’, টম হ্যাঙ্কসের ‘আ বিউটিফুল ডে ইন দ্য নেইবারহুড’ আর বং জুন-হোর ‘প্যারাসাইট’ ছবিকে পেছনে ফেলে দর্শকের রায়ে ‘সেরা ছবি’র পুরস্কার পেয়েছে তাইকা ওয়াতিতির ‘জোজো র‌্যাবিট’।

আগামীকাল শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত এই ছবি। ‘জোজো র‍্যাবিট’ ডার্ক কমেডি ধাঁচের ছবি। পরিচালনা করেছেন তাইকা ডেভিড ওয়াতিতি ওরফে তাইকা কোহেন। ছবিতে তিনি অ্যাডলফ হিটলারের ভূমিকায় অভিনয়ও করেছেন। ভ্যারাইটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, এই চরিত্রের জন্য তিনি নাকি অন্য কাউকে ভরসা করতে পারেননি।

হিটলারকে ভালোবাসে ১০ বছর বয়সী জোজো র‍্যাবিট। নাৎসি বাহিনীর সব কর্মকাণ্ডে তার জোর সমর্থন। এদিকে মা আবার ঘরে এক ইহুদি মেয়েকে লুকিয়ে রেখেছে। যার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় জোজোর। তার কাছে সেই মেয়েটিও ভালো, আবার হিটলারও ভালো। কিন্তু একজন ইহুদি আর আরেকজন নাৎসি। এবার কার পক্ষ নেবে জোজো? কী করবে সে? মহাসংকটে পড়ে। এভাবেই এগিয়ে যায় ছবির গল্প।

‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবির দৃশ্য। ছবি: ইউটিউব থেকে নেওয়া
‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবির দৃশ্য। ছবি: ইউটিউব থেকে নেওয়া

অস্কারে মনোনয়ন পাওয়া নিউজিল্যান্ডের এই পরিচালক বলেছেন, ছবিতে তিনি মনেপ্রাণে সেই নাৎসি নেতা হয়ে উঠতে চেয়েছেন। কারণ, এটা নাকি সেই মুহূর্তে তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। জোজো র‍্যাবিটের ভূমিকায় দেখা গেছে রোমান গ্রিফিন ডেভিসকে। এই পিচ্চি এই মুহূর্তে বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে আলোচিত তারকাদের একজন।

ছবির মূল চরিত্র জোজো হিটলার ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের একনিষ্ঠ সদস্য। তাঁর সিঙ্গেল মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ২০১৮ সালের সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জনকারী অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসন। ছবিতে হিটলারকে দেখা গেছে একজন শিশুর মনোজগতে তৈরি কাল্পনিক চরিত্রে। হিটলার এখানে জোজো র‍্যাবিটের ‘ইমাজিনারি ফ্রেন্ড’।

ছবি মুক্তি সামনে রেখে এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাইকা ওয়াতিতি বলেছেন, যে মানুষকে তিনি মন থেকে ঘৃণা করেন, পর্দায় সেই মানুষটা হয়ে ওঠা সহজ নয়। হিটলারের পোশাক গায়ে চাপাতে প্রথমে তাঁর লজ্জা আর সংকোচ হয়েছে।

‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবির দৃশ্য। ছবি: ইউটিউব থেকে নেওয়া
‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবির দৃশ্য। ছবি: ইউটিউব থেকে নেওয়া

‘জোজো র‍্যাবিট’ ছবিতে হিটলারের চরিত্রের বিষয়ে এই পরিচালক, অভিনেতা ও কমেডিয়ান বলেন, ‘এই হিটলার তো ১০ বছর বয়সী এক শিশুর মনে তৈরি। তাই শরীর পরিণত হিটলারের হলেও তার বয়স ১০। এভাবেই হিটলারকে ক্ষমতাহীনভাবে দেখানো হয়েছে। সেই গোঁফ, সেই চুলের কাট, সেই পোশাক। কিন্তু এ এক অন্য হিটলার।’

ওয়াতিতি আরও বলেন, ‘একসময় মনে হলো, আমি তো এখন হিটলারের ওপর ভর করেছি। আমার এখন হিটলারকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আছে। তাই ভাবলাম, হিটলার হয়ে আমি আরও নির্বোধ হব। একটা ভাঁড় হব, যে ভাঁড়কে দেখে লোকে হাসবে। হিটলার হয়ে যেটা সবচেয়ে ভালো লাগল, আমি এই লোকটাকে বিনির্মাণ করেছি। কমেডিয়ান বানিয়েছি।’