কারও অসুস্থতা তাঁর ব্যক্তিগত ও গোপন ব্যাপার: অমিতাভ

অমিতাভ বচ্চন। ছবি: রয়টার্স
অমিতাভ বচ্চন। ছবি: রয়টার্স

‘কারও শারীরিক অসুস্থতা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত ও গোপন ব্যাপার। তা ব্যবহার করে কিংবা তা থেকে বাণিজ্যিক সুবিধা নেওয়া ঠিক না। তা মোটেও বিক্রি করার মতো বিষয় নয়।’ টুইটারে লিখেছেন ‘বলিডের শাহেনশাহ’ অমিতাভ বচ্চন। তিনি এখন মুম্বাইয়ে তাঁর বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। চার দিন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকার পর গত শুক্রবার রাত পৌনে ১০টায় তিনি মুম্বাইর নানাবতী হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জয়া বচ্চন ও ছেলে অভিষেক বচ্চন।

ভক্ত, সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন। বাসায় ফিরে টুইটারে তিনি আরও লিখেছেন, ‘যাঁরা আমার জন্য প্রার্থনা করেছেন, আপনাদের সবাইকে আমার ভালোবাসা।’

জানা গেছে, অমিতাভ বচ্চন এখন বাসায় পূর্ণ বিশ্রামে আছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন, বাসার ভেতরে হাঁটছেন। নাতনি আরাধ্যকে সব সময় পাশে রাখছেন।

ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে তাঁর সাদা রঙের র‌্যাঞ্জ রোভার গাড়ি নানাবতী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসে। তখন গাড়ির সামনের সিটে বসেছিলেন অভিষেক বচ্চন। আর স্ত্রী জয়া বচ্চনের সঙ্গে পেছনের সিটে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন। এ সময় তিনি পরেছিলেন সাদা-লাল রঙের জ্যাকেট ও সাদা হ্যাট।

‘হিন্দুস্তান টাইমস’ থেকে জানা গেছে, অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অমিতাভ বচ্চনকে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে খবরটি জানাজানি হয়ে যায়। অমিতাভ বচ্চন অনেক দিন থেকেই যকৃতের সমস্যায় ভুগছেন। প্রথমে শোনা যায়, রুটিন চেকআপের জন্য অমিতাভ বচ্চনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ কারণেই তিনি হাসপাতালে আছেন। শুক্রবারও তাঁর চেকআপ চলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসক বলেছেন, আতঙ্কের কিছু নেই, অমিতাভ বচ্চনকে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে।

অমিতাভকে হাসপাতালের একটি আলাদা কক্ষে রাখা হয়। সেই কক্ষে আইসিইউর সব সুবিধা ছিল। সেই কক্ষে তাঁর পরিবারের সদস্য আর হাসপাতালের নির্ধারিত চিকিৎসক এবং কর্মী ছাড়া কারও প্রবেশের অনুমতি ছিল না।

গত বৃহস্পতিবার ছিল কড়ওয়া চৌথ। সেদিন রাতে টুইটারে অমিতাভ বচ্চন ব্লগ লিখেছেন। ভক্তদের কড়ওয়া চৌথের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, হাসপাতালে থাকলেও স্ত্রীর কথা তাঁর বারবার মনে পড়ছে। জয়ার একটি পুরোনো ছবি শেয়ার করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘জয়া পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্ত্রী।’ আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বামীর কল্যাণ কামনা করে নির্জলা উপবাস করে ব্রত পালন করেছেন জয়া বচ্চন। এ কারণেই তাঁর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।

এদিকে বচ্চন পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের কাছ থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানতে পেরেছে, তাঁর যকৃতের সমস্যা নতুন নয়। এই সমস্যার জন্য তিনি প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবারও তা-ই হয়েছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন অমিতাভ বচ্চন। এ কারণেই তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০০০ সালে অমিতাভ বচ্চনের যক্ষ্মার চিকিৎসা হয়। এ ছাড়া ১৯৮২ সালে ‘কুলি’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। তারপর তাঁর দেহে একাধিক অস্ত্রোপচার হয়েছে। প্রচুর পরিমাণ রক্ত নিতে হয়। চিকিৎসকদের মতে, ওই সময় কোনো রক্তদাতার কাছ থেকে অমিতাভ বচ্চনের শরীরে হেপাটাইটিস বি-র ভাইরাস প্রবেশ করে। তাই তখন থেকে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলছেন বলিউডের এই মেগাস্টার।

সম্প্রতি অমিতাভ বচ্চন নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর যকৃতের মাত্র ২৫ শতাংশ কাজ করছে। আর তার ওপর ভরসা করেই বেঁচে আছেন তিনি।