'হাওয়া'য় আঁকা হবে জেলেদের জীবন

চঞ্চল চৌধুরী ও নাজিফা তুশি
চঞ্চল চৌধুরী ও নাজিফা তুশি

জেলেদের নিয়ে যতগুলো ছবি হয়েছে, বেশির ভাগই সমুদ্রপাড়ের জীবন। জেলেদের দুঃখ–দুর্দশার গল্প উঠে এসেছে সেগুলোয়। কিন্তু গভীর সমুদ্রে জলের সঙ্গে জেলেদের জীবন খুব একটা উঠে আসেনি বাংলা ছবিতে। সে গভীর জলের গল্প, জেলেদের জীবনের গল্প বলতেই হাজির হচ্ছে ছবি হাওয়া।

কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন এলাকা ঘিরে শুটিং হচ্ছে পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের এ ছবির। সেখান থেকেই মুঠোফোনে জানালেন ছবির শুটিং অভিজ্ঞতা, ছবি নিয়ে আবেগ–উচ্ছ্বাস। সুমনের ভাষায়, ‘এটা সমুদ্রতীরবর্তী মানুষের গল্প না। একেবারে সমুদ্রের জলের সঙ্গে মিশে যাওয়া জেলেদের গল্প। জলের গল্প। মাছ ধরার ট্রলারকে কেন্দ্র করে কাহিনি গড়ে উঠেছে। গভীর সমুদ্রে ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য মাছ ধরতে যায় জেলেরা। সেখানকার অভিজ্ঞতা এটি। আমাদের এ অঞ্চলে জলকেন্দ্রিক যে মিথোলজি আছে, তার একটা আধুনিক উপস্থাপনা বলতে পারেন। আধুনিক রূপকথা আরকি।’

সুমন জানান, গভীর সমুদ্রে গিয়ে শুটিং করতে হচ্ছে। বারবার শুটিং করাটা কঠিন। তাই একবারেই ৪০ দিনের মতো শুটিং করে ছবিটি শেষ করবেন তাঁরা। চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুশি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়াররা অভিনয় করছেন ছবিতে। রোমাঞ্চ ও আনন্দ—দুই অনুভূতিই আছে সেখানে। সুমন বলেন, ‘গভীর সমুদ্রে গিয়ে শুটিং করতে হয়েছে। নানা ঘটনা ঘটছে, রোমাঞ্চকর যেমন, তেমনি আনন্দেরও। জোছনা রাতে সমুদ্রের ভেতরে শুটিং করেছি। এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। বৃষ্টির একটি দৃশ্য ছিল। বৃষ্টির সময় সে শুটিং করেছি। কৃত্রিমতার আশ্রয় নিতে হয়নি।’

হুট করেই সুমনরা চলে যাননি সমুদ্রে। এর আগে বিভিন্ন সময় ক্যামেরা নিয়ে গভীর সমুদ্রে চলে গেছেন। মাথায় স্কেচ করে এনেছেন শুটিংয়ের। তারপর প্রথম পাঁচ দিন চলেছে মহড়া। তারপরই শুটিংয়ে নামা। চিত্র গ্রহণের দায়িত্ব পড়েছে কামরুল হাসান খসরুর কাঁধে। সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড ছবিটি প্রযোজনা করেছে। নির্মাণপ্রতিষ্ঠান ফেসকার্ড।

আগামী মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে শেষ হবে শুটিং। তারপর ছয় মাস লাগবে প্রযোজনা–পরবর্তী কাজে। দেশেই মুক্তি পাবে? নাকি উৎসবে ঘুরবে? সুমন বলেন, ‘আমাদের দেশটা নদীমাতৃক দেশ। এখানকার ছবিতে সমুদ্রপাড়ের জীবনের গল্প আছে, কিন্তু সমুদ্রের ভেতরের গল্প কম। আমার দর্শন হলো এস এম সুলতান যে জনজীবনের গল্প আঁকতে চেয়েছেন, তার সঙ্গে শিল্পী নিজে একাত্ম ছিলেন। আমরা মধ্যবিত্তরা মধ্যবিত্তদের প্রেক্ষাপট থেকে জীবনকে দেখতে চাই। জেলেজীবনের দুঃখ–দুর্দশা দেখতে চাই। আমি সিনেমায় সেটি দেখাতে চাই না। শুধু একটা জেলেজীবনের গল্প বলব। ছবিটি যেহেতু আমাদের দেশের মানুষের জন্য, প্রথমত তাদের দেখাতে চাই, তারপর উৎসবের কথা ভাবব।’