সাতসকালে ইলিশ নিয়ে হাজির নুসরাত

নুসরাত জাহান। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
নুসরাত জাহান। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

খবরের কাগজ আর মায়ের সাক্ষাৎকার পড়ে পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ চিত্রনায়িকা নুসরাত জাহান জানতে পারেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দারুণ পছন্দ ইলিশ। আর সেই ইলিশ যদি পদ্মার হয়, তবে তো কথাই নেই!

অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় গত শুক্রবার গভীর রাতে আসেন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য গত মঙ্গলবার রাতে চলে আসেন কলকাতায়, নিজ বাড়িতে।

কলকাতার বালিগঞ্জে তাঁর পৈতৃক বাড়ি। মায়ের দেখা আর তাঁর সান্নিধ্য পেতে তিনি হাজির হন। তাঁর মা অধ্যাপক নির্মলা মুখোপাধ্যায় অর্থনীতির অধ্যাপক। বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান। আজ তিনি নেই।

ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রের তারকা ও সাংসদ নুসরাত জাহান নোবেলজয়ীর কথা শুনেছেন। এক বাঙালির এই নোবেল জয়ে তিনিও গর্বিত। সংবাদপত্র আর টিভি চ্যানেলে প্রচারিত খবর দেখে নুসরাত জানতে পারেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় মাছ ইলিশের কথা।

এরপর নুসরাত জাহানের মাথায় ঢোকে যেভাবেই হোক, নোবেলজয়ীর বাড়িতে শুভেচ্ছাস্বরূপ পৌঁছাতে হবে তাঁর প্রিয় মাছ ইলিশ। দুই দিনের জন্য কলকাতায় এসে ইলিশ খাবেন না, তা তো হতে পারে না! অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাও বলেছেন, ইলিশ বড্ড প্রিয় তাঁর ছেলের।

নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নুসরাত জাহান ভালো আর বড় সাইজের ইলিশের খোঁজ শুরু করেন। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে অনেক দিন তেমন ইলিশ ছিল না। সাগর বা নদীতেও মেলেনি বড় ইলিশ। যা উঠেছে, তার দাম চড়া। এক কেজি বা দেড় কেজি ওজনের মাছ পাওয়া যায়। নুসরাত জাহান চান, তার চেয়েও বড় আকারের ইলিশ। সম্প্রতি বাংলাদেশ ৫০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করেছে। ফলে এবার কলকাতায় এসে গেছে বাংলাদেশের ইলিশ। দাম বেশি। তবুও পাওয়া যাচ্ছে বড় সাইজের ইলিশ।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বড় সাইজ আর ভালো ইলিশ খাওয়ানোর জন্য নুসরাত জাহান তাঁর সংসদীয় এলাকা বসিরহাটে খোঁজ নেন। ভাগ্য ভালো তাঁর, পেয়ে যান আড়াই কেজি ওজনের একটি ইলিশ। সেই ইলিশের সঙ্গে কিছু গলদা চিংড়ি যোগ করে বরফের বাক্সে প্যাকিং করে গতকাল বুধবার সকালে যান দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সপ্তপর্ণী আবাসনে। বাড়িটি এখন নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। খুব পরিচিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকেই বাড়ির ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। নুসরাত জাহানকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। তিনি বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের হাতে ইলিশের ব্যাগ তুলে দেন।

ইলিশ পেয়ে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা খুশি হয়ে বলেন, ‘আজ আমি ওকে বেগুন-ইলিশের ঝোল করে খাওয়াব।’

এরপর অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে বিদায় নেন নুসরাত জাহান।