রঙ্গমেলায় আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন মামুনুর রশীদ

বটতলা রঙ্গমেলায় এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন মামুনুর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত
বটতলা রঙ্গমেলায় এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন মামুনুর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

‘নৃশংস নৈঃশব্দ্য ভেঙে সুনন্দ সাহস জাগুক প্রাণে প্রাণে’ স্লোগান নিয়ে আগাওগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব আয়োজন করতে যাচ্ছে বটতলা। আগামী ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় এ উৎসব শুরু হবে। তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ উৎসব চলবে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন রঙ্গমঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় থাকবে নাটকের মঞ্চায়ন। সমাপনী অনুষ্ঠানের দিন আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে খ্যাতিমান অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক মামুনুর রশীদকে।

উৎসব পরিচালক মোহাম্মদ আলী হায়দার জানিয়েছেন, ১৬ নভেম্বর ‘বটতলা রঙ্গমেলা ২০১৯’ শিরোনামের উৎসব উদ্বোধন করবেন নাট্যজন আতাউর রহমান। প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন তিন তরুণ নাট্যকার সাধনা আহমেদ, রুমা মোদক ও শুভাশিস সিনহা।

উৎসবে ইরানের ক্রেজি বডি গ্রুপ পরিবেশন করবে ‘মিস্টিরিয়াস গিফট’ নাটকটি। ছবি: সংগৃহীত
উৎসবে ইরানের ক্রেজি বডি গ্রুপ পরিবেশন করবে ‘মিস্টিরিয়াস গিফট’ নাটকটি। ছবি: সংগৃহীত

১১ দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে প্রতিদিন মূল রঙ্গমঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে বটতলাসহ বাংলাদেশের দুটি ও বিদেশের আটটি দল নাটক পরিবেশন করবে। বাংলাদেশ ছাড়া উৎসবে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হচ্ছে ভারত, স্পেন, ইরান ও নেপাল। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বহিরাঙ্গনে নাদিম মঞ্চে থাকছে নাটক, গান, কবিতা, নাচসহ বিভিন্ন আনন্দ আয়োজন। গত বছরের মতো এবারও থাকছে দেশের আটটি বিভাগের আট নাট্যজনকে সম্মাননা প্রদান, যাঁরা খুব নীরবে দীর্ঘদিন ধরে নাট্যচর্চাকে এগিয়ে নিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এবং করছেন। সম্মাননা পাবেন দেলোয়ার হোসেন (বরিশাল), হেমেন্দ্র চৌধুরী (সিলেট), হরিপদ সূত্রধর (ঢাকা), সবিতা সেনগুপ্ত (রংপুর), গৌরাঙ্গ আদিত্য (ময়মনসিংহ), মিলন চৌধুরী (চট্টগ্রাম), অনিতা মৈত্র (রাজশাহী) ও রোহানি বেগম মেরী (খুলনা)।

১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় এ উৎসব শুরু হবে।
১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় এ উৎসব শুরু হবে।

এবার উৎসবে মঞ্চস্থ হবে ‘ক্রাচের কর্নেল’ (বটতলা, বাংলাদেশ), ‘আমার মুখের আঁচলখানি’ (রঙ্গাশ্রম, ভারত), ‘ডিলেমাস উইথ মাই ফ্লেমেনকো টেইলকোট’ (মুন পেলেস, স্পেন), ‘মিস্টিরিয়াস গিফট’ (ক্রেজি বডি গ্রুপ, ইরান), ‘৪.৪৮ সাইকোসিস’ (আরোহণ গুরুকুল, নেপাল), ‘বিল্বমঙ্গল’ (চাকদহ নাট্যজন, ভারত), ‘ম্যাকবেথ’ (পদাতিক নাট্য সংসদ, বাংলাদেশ), ‘শুক’ (জলপাইগুড়ি কলাকুশলী, ভারত), ‘ব্ল্যাক হোল’ (জ্যোতি ডোগরা, ভারত), ‘আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র’ (সুখচর পঞ্চম, ভারত) ও ‘খনা’ (বটতলা, বাংলাদেশ)। প্রতিদিন নাটক শেষে পর্দার অন্তরালে থাকা থিয়েটারের অপরিহার্য কুশলীদের জানানো হবে সম্মান।

নাটক মঞ্চায়নের পর প্রতিদিন বহিরাঙ্গনে নাদিম মঞ্চে রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টায় দর্শকের মুখোমুখি হবে সংশ্লিষ্ট নাটকের নির্দেশক। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত গান, নাটক, কবিতা ও নাচে অংশ নেবে মণিপুরী থিয়েটার, ক্ষ্যাপা বাউল, জবিরঙ্গ, সমগীত, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, এফ মাইনর, ঢাকা থিয়েটার, মাদল, সর্বনাম, জাককানইবি নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিভাগ এবং বেতালের শিল্পীরা।

২৬ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটায় অনুষ্ঠিত হবে ‘রঙ্গমঞ্চে বটতলার আলাপ’। এতে নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী অংশ নেবেন। বিভাগীয় নাট্যজন সম্মাননা প্রদান করা হবে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটায়।

নেপালের আরোহণ গুরুকুল নাট্যদলের ‘৪.৪৮ সাইকোসিস’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের আরোহণ গুরুকুল নাট্যদলের ‘৪.৪৮ সাইকোসিস’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

উৎসবের সুমন মঞ্চে দেখানো হবে চারটি তথ্যচিত্র। ২১, ২২ ও ২৩ নভেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দেখানো হবে ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ (তাপস সেন, ভারত), ‘ফেরদৌসী মজুমদার’ (বাংলাদেশ) এবং ‘বিহাইন্ড দ্য কার্টেন বিভাস চক্রবর্তী’ (ভারত)। ২৪ নভেম্বর দেখানো হবে ‘দ্য টিচার: সৈয়দ জামিল আহমেদ’ (বাংলাদেশ)। সুমন মঞ্চে ২১, ২২ ও ২৩ নভেম্বর বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত তিনটি মাস্টারক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। সংগীত ও নাট্য বিষয়ে ক্লাস নেবেন শিমূল ইউসুফ, চিত্রকলা ও নাট্যশিল্প নিয়ে বলবেন ঢালী আল মামুন এবং শরীর, নৃত্য ও প্রশ্ন নিয়ে মাস্টারক্লাসে থাকবেন শৈবাল বসু (ভারত)।

‘হৃদয়ঙ্গম ঋদ্ধ’ মঞ্চে থাকবে শিশু প্রহর। ২২ ও ২৩ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে শিশু প্রহরে মঞ্চস্থ হবে আওয়ার কিংডম (শব্দাবলী, বরিশাল), পুথিপড়া, পাখিপড়া (ফুলকি, চট্টগ্রাম) ও পুতুলনাচ (বাংলাদেশের পুতুল নাট্য গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র)। এ ছাড়া দুদিনই থাকবে আর্ট ক্যাম্প। ক্যাম্পে উপস্থিত থেকে শিশুদের উৎসাহিত করবে ‘সিসিমপুর’। ২৬ নভেম্বর রাত নয়টায় উৎসবের পর্দা নামবে।