যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালার সুফল নেই

শিকারী ছবির দৃশ্যে শাকিব খান ও শ্রাবন্তী। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবিটি বাংলাদেশ ও ভারতে বেশ জনপ্রিয় হয়।  ছবি: সংগৃহীত
শিকারী ছবির দৃশ্যে শাকিব খান ও শ্রাবন্তী। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবিটি বাংলাদেশ ও ভারতে বেশ জনপ্রিয় হয়। ছবি: সংগৃহীত

যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের নতুন নীতিমালা তৈরির ২২ মাস পেরিয়ে গেলেও সুফল ভোগ করতে পারছে না বাংলাদেশ ও ভারতের কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। নীতিমালার কঠোরতার কারণে কোনো কোনো প্রযোজক ছবির কাজ শুরু করেও মাঝপথে বন্ধ করে দেন। কেউ চিত্রনাট্য অনুমোদনের পর নিয়মের দীর্ঘসূত্রতায় ছবির কাজ আর শুরু করেননি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নতুন কমিটি বিষয়টি উপলব্ধি করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সংশোধিত নীতিমালা আবার সংশোধনের আবেদন জানানোর কথা ভাবছে। চলচ্চিত্রশিল্পীরাও মনে করছেন, যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালা সংশোধন করার দরকার।

দুই দেশের প্রযোজক ও পরিচালকদের মতে, যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালার কঠোরতার কারণে ছবি নির্মাণে আগ্রহী হচ্ছে না বাংলাদেশ ও ভারতের কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। তাই আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ।

২০১২ সালের যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা ২০১৭ সালে সংশোধিত হয়। নতুন নীতিমালায় প্রেম আমার ২, সুলতান-দ্য সেভিয়ার ও বালিঘর ছবির অনুমোদন দেয় যৌথ প্রযোজনার চিত্রনাট্য অনুমোদন যাচাই–বাছাই কমিটি। নীতিমালায় কাজের দীর্ঘসূত্রতায় বালিঘর তৈরি করেননি পরিচালক অরিন্দম শীল। প্রেম আমার ২ ও সুলতান-দ্য সেভিয়ার যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালায় তৈরি শুরু হলেও পরে ভারতীয় ছবি হিসেবে আমদানি নিয়মে বাংলাদেশে মুক্তি পায়।

এ বছর এখন পর্যন্ত দিন দ্য ডেসহ যৌথ প্রযোজনার দুটি ছবির আবেদন অনুমোদন দিয়েছে যাচাই–বাছাই কমিটি। এই তথ্য জানান, কমিটির সভাপতি বিএফডিসির পরিচালক (উত্পাদন) নুজহাত ইয়াসমিন। চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্টদের অনেকে এখন বলছেন, ২০১২ সালে তৈরি যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা সংশোধনের জন্য যে আন্দোলন হয়েছিল, তা ছিল আবেগপূর্ণ। নীতিমালা শিথিল করার আলোচনা চলছে। প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘নতুন নীতিমালায় ছবির কাজ অনেকটাই কঠিন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি। তথ্য মন্ত্রণালয়ে নতুন নীতিমালা সহজ করার জন্য আবেদন করব।’

যৌথ প্রযোজনায় দুই দেশে সফল ছবি শিকারি, নবাব, আশিকী। এসব ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভারতের এসকে মুভিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অশোক ধানুকা বলেন, ‘যৌথ প্রযোজনায় ভাইজান এল রে, চালবাজ, তুই শুধু আমার নির্মাণ করেছিলাম। কঠিন নীতিমালা তো আছেই, পাশাপাশি বাংলাদেশে গুটি কয়েক মানুষ ছবির কাজেও বাধা দেয়। বাধ্য হয়েই ছবি তিনটি আমদানিতে মুক্তি দিয়েছি।’

সংশোধিত নীতিমালায় জাজ মাল্টিমিডিয়াও যৌথ প্রযোজনার ছবি বানাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের সিইও আলীমুল্লাহ খোকন বলেন, ‘এই নীতিমালায় কাজ করা কঠিন। সময় লাগে বেশি এবং ছবির বাজেটও অনেক বেড়ে যায়। নীতিমালার ‘ঙ’ অনুচ্ছেদের ধারাগুলো বেশি কঠিন। তার মধ্যে একটি আছে, একটি সিনেমা বানাতে সবকিছুতে দুই দেশের সমান অংশগ্রহণ থাকবে। যা অযৌক্তিক। সিনেমাতে শিল্পী সমান নিলেও, লোকেশন, কারিগরি দিকগুলোতে সমানভাবে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।’