উত্তাল সাগরে চলছে 'হাওয়া'র শুটিং

‘হাওয়া’ ছবির শুটিং হচ্ছে এই ট্রলারে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
‘হাওয়া’ ছবির শুটিং হচ্ছে এই ট্রলারে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘গত কয়েক দিনের তুলনায় আবহাওয়ার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। সকাল থেকেই রোদ আছে। আকাশে সাদা মেঘ। সাগর পুরোপুরি শান্ত হয়নি, এখনো কিছুটা উত্তাল। এই অবস্থাতেই আমরা শুটিংয়ে যাচ্ছি।’ আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বললেন জনপ্রিয় তারকা চঞ্চল চৌধুরী। তিনি এখন আছেন সেন্ট মার্টিনে। পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ ছবির অন্যতম অভিনয়শিল্পী তিনি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেন্ট মার্টিনে আটকা পড়েন ‘হাওয়া’ ছবির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

টানা তিন দিন শুটিং বন্ধ থাকার পর আজ সকালে আবার গভীর সমুদ্রে রওনা হন ‘হাওয়া’ ছবির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা। ট্রলার থেকে চঞ্চল চৌধুরী জানান, আজ তাঁদের সঙ্গে আছে ৩০০ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বড় ট্রলার এবং তিনটি সার্ভিস ট্রলার। আজ শুটিং দলে আছেন ১২০ জন। পুরো টিম একসঙ্গে সাগরে যাচ্ছে। যেহেতু সাগর কিছুটা উত্তাল, তাই আজ তাঁরা সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ থেকে একটু দূরে শুটিং করবেন, যাতে আবহাওয়া পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে দ্রুত সেন্ট মার্টিনের জেটিতে ফিরে আসতে পারেন।

আজ সোমবার সকালে সেন্ট মার্টিন জেটি থেকে ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করেছেন চঞ্চল চৌধুরী
আজ সোমবার সকালে সেন্ট মার্টিন জেটি থেকে ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করেছেন চঞ্চল চৌধুরী

চঞ্চল চৌধুরী আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেন্ট মার্টিনে যাঁরা আটকা পড়েছেন, তাঁদের সবার নিয়মিত খোঁজ-খবর নিয়েছেন জেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠোফোনে প্রতিদিন একাধিকবার তাঁদের কথা হয়েছে। এই দুর্যোগে সবার কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ায় জেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এ ছাড়া দর্শক, ভক্ত এবং ‘হাওয়া’ ছবির সঙ্গে জড়িত লোকজনের স্বজনেরা সবাই এই পুরো সময় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিলেন, তাঁদের জন্য দোয়া করেছেন। তিনি ‘হাওয়া’ টিমের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, আজ সকালে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ ও ট্রলার যাত্রা করেছে।

‘হাওয়া’ ছবির শুটিং। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
‘হাওয়া’ ছবির শুটিং। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

নির্মাতা সূত্রে জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর ‘হাওয়া’ ছবির শুটিং শুরু হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আর মাত্র চার দিন তাঁরা সাগরে শুটিং করবেন। এরপর কক্সবাজারে চার-পাঁচ দিন শুটিং করতে হবে।

সেন্ট মার্টিনে ‘হাওয়া’ ছবির আরেক শিল্পী নাজিফা তুশি। ছবি: সংগৃহীত
সেন্ট মার্টিনে ‘হাওয়া’ ছবির আরেক শিল্পী নাজিফা তুশি। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন এলাকা ঘিরে ‘হাওয়া’ ছবির শুটিং হচ্ছে। পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন আগেই বলেছেন, ‘এটা সমুদ্রতীরবর্তী মানুষের গল্প না। একেবারে সমুদ্রের জলের সঙ্গে মিশে যাওয়া জেলেদের গল্প। জলের গল্প। মাছ ধরার ট্রলারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কাহিনি। গভীর সমুদ্রে ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য মাছ ধরতে যান জেলেরা। সেখানকার অভিজ্ঞতা এটি। আমাদের এ অঞ্চলে জলকেন্দ্রিক যে মিথোলজি আছে, তার একটা আধুনিক উপস্থাপনা বলতে পারেন।’

ঘূর্ণিঝড়ের আগে সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকতে ‘হাওয়া’ ছবির অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী ও পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন। ছবি: হাসান আহমেদ
ঘূর্ণিঝড়ের আগে সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকতে ‘হাওয়া’ ছবির অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী ও পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন। ছবি: হাসান আহমেদ

এ কারণেই গভীর সাগরে গিয়ে প্রতিদিন তাঁদের শুটিং করতে হচ্ছে। সেন্ট মার্টিন থেকে ট্রলারে দেড় ঘণ্টা চলার পর সাগরের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে নোঙর করেন তাঁরা, যাতে সেখান থেকে কোনো দ্বীপের চিহ্ন দেখা না যায়। সেখানেই দিনে এবং রাতে শুটিং হয়।

‘হাওয়া’ ছবির শিল্পীদের মধ্যে এখন সেন্ট মার্টিনে আছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুশি, সুমন আনোয়ার, শরিফুল রাজ, রিজভি, নাসির, মাহমুদ প্রমুখ।