লতা মঙ্গেশকরের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন

লতা মঙ্গেশকর
লতা মঙ্গেশকর

উপমহাদেশের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সুরসম্রাজ্ঞী খ্যাত লতা মঙ্গেশকরের জীবন সংকটাপন্ন। রোববার দিবাগত রাতে তাঁকে মুম্বাইয়ের ব্রিজ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। তবে তাঁর অসুস্থতা নিয়ে পরিবারের পক্ষে এখনো কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু ও ইন্ডিয়ান টাইমস এসব কথা জানিয়েছে। 

হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, রোববার দিবাগত রাত দেড়টা নাগাদ লতা মঙ্গেশকরকে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানকার জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ফারুখ ই উদওয়াড়িয়ারের তত্ত্বাবধানে আইসিইউতে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন তিনি। শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি লতা মঙ্গেশকরের নিউমোনিয়া এবং হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা রয়েছে।

‘পানিপথ’ ছবিতে অভিনয় করার জন্য প্রবীণ অভিনেত্রী পদ্মিনী কোলাপুরেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানান লতা। এর কয়েক ঘণ্টা পরই তাঁর অসুস্থতার খবর পাওয়া গেল। গত ২৮ সেপ্টেম্বর লতা মঙ্গেশকর ৯০ বছরে পা দেন। সাত দশক ধরে দর্শক ও সমালোচক হৃদয় তৃপ্ত করে চলা ভারতীয় সংগীতের এই জীবন্ত কিংবদন্তি ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্মেছিলেন। কিন্তু তাঁর সংগীত ভারত ছাপিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বসংগীতের দরবারে।

লতা মঙ্গেশকর তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৪২ সালে, মারাঠি গান গেয়ে। ১৯৪৬ সালে তিনি প্রথম হিন্দি সিনেমার জন্য গান করেন। বসন্ত জোগলেকরের ‘আপ কি সেবা মে’ ছবিতে তিনি ‘পা লাগু কার জোরি’ গানটি গেয়েছিলেন। দুই বছর পর সুরকার গুলাম হায়দার তাঁকে প্রথম বড় সুযোগ দেন। ‘মজবুর’ ছবিতে ‘দিন মেরা তোরা’ গানটির পর লতাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। সংগীতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ডের ইতিহাস আশা ভোসলের। তিনি গেয়েছেন প্রায় ১০ হাজার গান। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে  এ রেকর্ডটি ছোট বোন আশার হওয়ার আগে ছিল লতা মঙ্গেশকরের। লতা গেয়েছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার গান। লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করেছেন। এর মধ্যে আছে বাংলাও। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ  দিয়েছেন তিনি।

২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।