টেকো নায়ক যখন হিট

বালা সিনেমার দৃশ্যে আয়ুষ্মান খুরানা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বালা সিনেমার দৃশ্যে আয়ুষ্মান খুরানা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বড় পর্দার নায়ক কেমন হবেন? আর যা-ই হোক, তাঁর মাথাভর্তি থাকবে শাহরুখ খান বা শহীদ কাপুরের মতো চুল। কিন্তু বালা ছবির নায়ক তাঁদের মতো নন। এই নায়কের যে টাক মাথা। একসময় চুল না থাকা নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগলেও পরে তা কাটিয়ে ওঠেন বালা। নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। আর আত্মবিশ্বাসী করে তোলেন সেসব মানুষকে, যাঁদের মাথায় চুল না থাকা জীবনের সবচেয়ে বড় আক্ষেপগুলোর একটি। এই ছবি সেই মানুষগুলোর জীবনকে উদ্‌যাপন করে। তাই তো বলা হচ্ছে, বছরটা টাক মাথার লোকদের।

এ ছবিটি আয়ুষ্মান খুরানা ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন। যেখানে আয়ুষ্মানের জায়গায় দেখা যাচ্ছে সত্যিকারের একজন টাক মাথার লোককে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
এ ছবিটি আয়ুষ্মান খুরানা ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন। যেখানে আয়ুষ্মানের জায়গায় দেখা যাচ্ছে সত্যিকারের একজন টাক মাথার লোককে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

৭ নভেম্বর ছবি মুক্তির তৃতীয় দিনের মাথায় এই ছবির নামের আগে যুক্ত হয়েছে ‘হিট’ তকমা। বলা হয়, দর্শক আর সমালোচকেরা নাকি দুই মেরুর মানুষ। যে ছবি দর্শকেরা পছন্দ করেন, সেই ছবিকে সমালোচকেরা দেন রসগোল্লা। আর যে ছবি নিয়ে সমালোচকেরা হইহই রইরই করেন, দর্শকেরা সেই ছবির দিকে ফিরেও তাকান না। সালমান খান তাই সমালোচকদের ‘ভালো রিভিউ’য়ে ভয় পান। মনে করেন, এই বুঝি তাঁর ছবি আর চলবে না!

কিন্তু আয়ুষ্মান খুরানা প্রথম ছবি থেকেই প্রথা ভেঙে দর্শক আর সমালোচকদের বসিয়েছেন এক বেঞ্চে। আর দর্শক, সমালোচক, বক্স অফিস—সবাই মিলে ওই ছবিকে দিয়েছেন ভালো নম্বর। প্রথম দিনেই বালা আয় করেছে ১০ কোটি ১৫ লাখ রুপি। কর্মদিবসেও বক্স অফিসে ভাটা পড়েনি। ২৫ কোটি রুপি খরচ করে বানানো ছবি সপ্তাহ না গড়াতেই ইতিমধ্যে বক্স অফিসে তুলে এনেছে প্রায় ৯০ কোটি রুপি। প্রযোজক দীনেশ ভিজানের মুখে হাসি ফুটেছে। হাসি ফুটেছে পরিচালক অমর কৌশিক আর অভিনয়শিল্পী আয়ুষ্মান খুরানা, ভূমি পেড়নেকার ও ইয়ামি গৌতমের মুখেও।

বালা সিনেমার পোস্টারে ভূমি পেডনেকার, আয়ুষ্মান খুরানা ও ইয়ামি গৌতম। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বালা সিনেমার পোস্টারে ভূমি পেডনেকার, আয়ুষ্মান খুরানা ও ইয়ামি গৌতম। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

অবশ্য আয়ুষ্মান খুরানার জন্য বালার সফলতা তেমন কোনো চমক নয়। আগেই ফিল্মফেয়ারকে জানিয়েছিলেন, কেন চলবে এই ছবি। ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আয়ুষ্মান খুরানা বালা সম্পর্কে বলেন, ‘সময় বদলেছে। এখন গল্পই নায়ক। আর এ জন্যই বালা প্রতিষ্ঠা পাবে। মানুষ বিনোদিত হবে।’

আয়ুষ্মান বলেন, ‘আমি এ রকম শক্তিশালী আর দুর্দান্ত চিত্রনাট্য থেকে নির্মিত ছবির অংশ হতে পেরে গর্বিত। একবার স্ক্রিপ্ট পড়েই আমি সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। এই চিত্রনাট্যের একটি চমৎকার হৃদয় আছে। অনুভূতি, বিদ্রূপ, হাসি-তামাশা সবই উপস্থিত। সামাজিকভাবে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সেই সঙ্গে অত্যন্ত গভীরভাবে চিন্তা করে লেখা একটা গল্প।’

আয়ুষ্মান খুরানার বিশ্বাস, এই ছবি দেখার পর মানুষ বালাকে ততটাই ভালোবাসবে, যতটা ব্যক্তি আয়ুষ্মান খুরানাকে ভালোবাসে। টাক মাথার মানুষদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

সময় বলছে, আয়ুষ্মান খুরানার সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি। মানুষ আপন করে নিয়েছে টাক মাথার বালাকে। আর টাক মাথার মানুষও নতুন করে ভাববেন, তাঁরাও হিরো। এখনই কেবলই আয়ুষ্মান খুরানার ছবির সাফল্য উপভোগের সময়।