নেই, তবু ছিলেন হুমায়ূন

চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে সমবেত নৃত্য পরিবেশনা। ছবি: চ্যানেল আইয়ের সৌজন্যে
চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে সমবেত নৃত্য পরিবেশনা। ছবি: চ্যানেল আইয়ের সৌজন্যে

জন্মদিনে তাঁকে নিয়ে অনেক আয়োজন হলো। তাঁর কাজ নিয়ে আলোচনা হলো, তাঁর লেখা বই নিয়ে মেলা হলো, তাঁর পছন্দের কিংবা নিজের লেখা গান গাওয়া হলো। এত সব আয়োজন যাকে নিয়ে, সেই মানুষ হ‌ুমায়ূন আহমেদ সশরীরে ছিলেন না কোথাও। তবু কি ছিলেন না? লেখক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার হ‌ুমায়ূন আহমেদের শারীরিক না থাকাকে মেনে নিয়ে প্রিয়জনেরা তাঁর জন্মদিন উদ্‌যাপন করলেন।

আজ ১৩ নভেম্বর জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মবার্ষিকী।

১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে হ‌ুমায়ূন আহমেদের গড়া নুহাশ পল্লিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে পুরো নূহাশপল্লীকে আলোকিত করেন নুহাশ পল্লীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ভোরে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন দুই সন্তানকে নিয়ে নুহাশপল্লীতে আসেন এবং হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় নুহাশপল্লীর কর্মচারী ও অসংখ্য হ‌ুমায়ূন ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎসবমুখর পরিবেশে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণের চেতনা চত্বরে অনুষ্ঠিত হলো ‘সিটি ব্যাংক চ্যানেল আই হ‌ুমায়ূন মেলা ২০১৯’। আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে শুরু হয় ‘চ্যানেল আই হ‌ুমায়ূন মেলা’র অনুষ্ঠান। চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজসহ বক্তব্য দেন হ‌ুমায়ূন আহমেদের বন্ধু, স্বজনসহ বহু গুণীজন।

বেলুন উড়িয়ে হ‌ুমায়ূন মেলার উদ্বোধন করছেন অতিথিরা। ছবি: চ্যানেল আইয়ের সৌজন্যে
বেলুন উড়িয়ে হ‌ুমায়ূন মেলার উদ্বোধন করছেন অতিথিরা। ছবি: চ্যানেল আইয়ের সৌজন্যে

সাড়ে ১১টায় হলুদ বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। মেলা প্রাঙ্গণে হলুদ পাঞ্জাবি আর নীল শাড়ি পরে উপস্থিত ছিলেন অনেকে। চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিশেষ উন্মুক্ত মঞ্চে ছিল হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা গান। তাঁর স্মরণে স্মৃতিকথা বলেন অনুষ্ঠানে আগত বিশিষ্টজনেরা। আরও ছিল হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা থেকে আবৃত্তি পরিবেশনা। হ‌ুমায়ূন স্মরণে চিত্রাঙ্কন করছে খুদে আঁকিয়েরা। মেলাতে হ‌ুমায়ূন আহমেদের বই, তার নির্মিত চলচ্চিত্র ও নাটকের ভিডিও সিডিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবার পসরা দিয়ে সাজানো ছিল স্টলগুলো।

হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গানওয়ালা প্রকাশ করেছে নতুন দুটি গল্প-গান 'যদি মন কাঁদে' ও 'গনি চাচার গল্প'।

হ‌ুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়েই হ‌ুমায়ূন আহমেদ কথাসাহিত্যে পালাবদলের তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এরপর একের পর এক উপন্যাসে পাঠকের কাছে নন্দিত হয়েছেন অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা নিয়ে। আমৃত্যু সেই জনপ্রিয়তার স্রোতে ভাটার টান পড়েনি।