সলিল চৌধুরীকে স্মরণ করবে জলতরঙ্গ

সলিল চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
সলিল চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আজ আলোর পথযাত্রী সলিল চৌধুরীর জন্মদিন। গত শতাব্দীর দীর্ঘসময় ধরে তিনি গণমানুষের গান করে এই ভূখণ্ডের মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন। গান লিখেছেন, সুর করেছেন। উপহার দিয়েছেন একের পর এক অবিস্মরণীয় গান। পেয়েছেন অসাধারণ জনপ্রিয়তা। তাঁর গানে উঠে এসেছে সমাজের অসংগতির কথা। গণমানুষের বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে দিয়ে শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। সহজ কথায় গানে গানে প্রান্তিকজনকে সংহতির ডাক দিয়েছেন তিনি।

সলিল চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর শাহবাগের গণগ্রন্থাগারের মূল মিলনায়তনে তাঁর কালজয়ী গান, কবিতা আর জীবনীর কিছু অংশ শৈল্পিক আবহে উপস্থাপন করবে জলতরঙ্গ।

জলতরঙ্গের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়েই তাঁর জন্মদিনের আয়োজনটি আমরা সবাই মিলে পালন করব। মানুষ নতুন করে সলিলের সৃষ্টি সম্পর্কে জানবে, সলিলের গানে, সুরে ডুবে যাবে। আর এ জন্য চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই আসরে 'রানার', 'প্রান্তরের গান', 'আজ নয় গুন গুন', 'সাত ভাই চম্পা', 'আমি ঝড়ের কাছে রেখে গেলাম' সহ সলিলের বেশ কিছু কালজয়ী গান শিল্পীরা গাইবেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সলিল চৌধুরীর জন্ম। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সলিল চৌধুরীর জন্ম। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সংগঠনটির সভাপতি মাসুদা খান জলতরঙ্গ নিয়ে বলেন, ‘সংগঠনটিকে আমরা সাজিয়েছি কিছু নতুন মুখ নিয়ে। সুরের মূর্ছনায় যে ভাবের উদয় হয় তাকেই তাঁরা ধারণ, লালন ও পালন করেন। পুরোনো দিনের গান ও কবিতা নিয়ে শ্রোতার আসর আয়োজন এবং প্রকাশনা করা হচ্ছে নিয়মিতভাবে।’

১৯২৫ সালের ১৯ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সলিল চৌধুরীর জন্ম। স্কুল শেষে কলকাতায় পড়তে এসে ভর্তি হলেন বঙ্গবাসী কলেজে। স্নাতক পড়াকালে ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। পার্টির সাংস্কৃতিক সংগঠন ভারতীয় গণনাট্য সংঘে (আইপিটিএ) যোগ দিয়ে সক্রিয়ভাবে প্রচুর কাজ করেন।

সলিল চৌধুরীর গান শোনাবেন জলতরঙ্গর শিল্পীরা। ছবি: জলতরঙ্গর সৌজন্যে
সলিল চৌধুরীর গান শোনাবেন জলতরঙ্গর শিল্পীরা। ছবি: জলতরঙ্গর সৌজন্যে

সলিল চৌধুরী ৭৫টিরও বেশি হিন্দি সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেন। এ ছাড়া ৪৫টি বাংলা সিনেমা, ২৬টি মালয়ালম সিনেমা ও কিছু তামিল, তেলেগু, কান্নাড়া, গুজরাটি, মারাঠি, অসমিয়া, ওড়িয়া চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেন। তাঁর নিজের কথা ও সুর করা এমন কয়েকটি কালজয়ী বাংলা গান যেমন ‘গাঁয়ের বধূ’ ‘ধিতাং ধিতাং বোলে’, ‘আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা’, ‘যা রে উড়ে যা রে পাখি, ‘না মন লাগে না’, ‘আহা ওই আঁকাবাঁকা যে পথ’,‘যদি কিছু আমারে শুধাও’, ‘প্রান্তরের গান আমার’, ‘ঝুনঝুন ময়না নাচো না’ ‘হেই সামালো’, ‘পথে এবার নামো সাথি’, ‘বিচারপতি তোমার বিচার’, ‘ও আলোর পথযাত্রী’ ইত্যাদি।

১৯৯৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এই বিস্ময়কর বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী মানুষটির মহাপ্রয়াণ ঘটে।