আবার 'হৃদয়ের রংধনু'

‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবিটি ঢাকায় শিগগিরই আবার নতুন করে মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন সেই প্রক্রিয়া চলছে। জানালেন ছবিটির পরিচালক রাজীবুল হোসেন। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি মাত্র একটি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়ার প্রায় দুই বছরের মাথায় ছাড়পত্র দেওয়া হয় ছবিটিকে।

এই ছবির গল্প প্রসঙ্গে পরিচালক আগেই জানিয়েছেন, এক নিরুদ্দেশ যাত্রা ও এক রহস্যজনক ফোন কল পাল্টে দেয় চার যুবক-যুবতীর জীবন। একটি ক্লু খুঁজতে খুঁজতে তারা আবিষ্কার করে নিজেকে, আর দেখতে পায় এক নতুন বাংলাদেশ। কাহিনি লিখেছেন কায়েস চৌধুরী। ছবিতে অভিনয় করেছেন মিনা পেটকোভিচ, শামস কাদির, মুহতাসিম স্বজন, খিং সাই মং মারমা, শিমুল খান, রাজীবুল হোসেন, লুসি তৃপ্তি গোমেজ, মাখিং মারমা, সাদিয়া মাহি, রায়হান শশী প্রমুখ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলোকে রাজীবুল হোসেন জানান, ‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবিটি গ্লোবাল তাজ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা সিনেমাটোগ্রাফি পুরস্কার জিতেছে। ভারতের আগ্রায় ১৫ থেকে ১৭ নভেম্বর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০১৮ সালে ছবিটি গোয়া ফিল্ম বাজারের ভিউ কর্নারে নির্বাচিত হয়। এ ছাড়া ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও ইথিওপিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় ছবিটি। আগামী ডিসেম্বর মাসে কানাডার টরন্টোতে অনুষ্ঠিত হবে নেপাল কালচারাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ছবিটি এই উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে মনোনীত হয়েছে। নেপাল এরই মধ্যে ২০২০ সালকে পর্যটন বছর হিসেবে ঘোষণা করেছে। তার অংশ হিসেবে এই উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে।

‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবির দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

রাজীবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন দেশব্যাপী ছবিটির বিকল্প প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছি। আমি স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আমাদের কাজের অন্যতম বাধা হলো, আমরা হল মালিকদের কাছ থেকে টাকা ওঠাতে পারি না। তাই আমি প্রেক্ষাগৃহে না গিয়ে বিকল্প উপায়ে ছবির প্রদর্শনী করছি। এভাবে ছবিটির প্রথম প্রদর্শনী করেছি গত মে মাসে, সাজেকে। এরপর কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, সিলেট, রাজশাহীতে ছবিটির প্রদর্শনী হয়েছে। এখন ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছবিটি দেখানো হচ্ছে।’

‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
‘হৃদয়ের রংধনু’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

‘হৃদয়ের রংধনু’র পর আরও দুটি ছবির কাজ হাতে নিয়েছেন পরিচালক রাজীবুল হোসেন। নাম ‘রানওয়ে ২০০২’ ও ‘কলকাতার মেয়েটি’। নেপালে সংঘটিত বাংলাদেশের একটি বিমান দুর্ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে ‘রানওয়ে ২০০২’ ছবির গল্প। দুটি ছবি রাজীবুল হোসেন নিজেই প্রযোজনা করছেন। বললেন, ‘বাণিজ্যিক প্রযোজকদের যে ধরনের দাবিদাওয়া থাকে, তা আমাদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব না। তাই আমি নিজেই আমার ছবি প্রযোজনা করি।’

রাজীবুল হোসেন একজন চলচিত্র নির্মাতা, প্রযোজক এবং শিক্ষক। ‘হৃদয়ের রংধনু’ ছাড়া এর আগে তিনি আরও দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন—‘বালুঘড়ি’ (২০০৬) ও ‘উনদিত্ত’ (২০০৮)। তাঁর তৈরি তথ্যচিত্রটি হলো ‘মৃত্যুপাড়ে বাড়ি’ (২০১২) আর স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচিত্র ‘মি অ্যান্ড দ্য নেচার’ (২০১৩)।