নওশাবা, তিনু ও একটি বিড়ালের গল্প

এসো সুসংবাদ এসো ছবির িশল্পী তিনু রসিদ, নওশাবা আহমেদ ও নির্মাতা তানভীর আহম্মেদ। ছবি: কবির হোসেন
এসো সুসংবাদ এসো ছবির িশল্পী তিনু রসিদ, নওশাবা আহমেদ ও নির্মাতা তানভীর আহম্মেদ। ছবি: কবির হোসেন

‘এই ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এখানে আসতে পারেনি।’ আড্ডার শুরুতে নওশাবার এই কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকাতে হয়। যতদূর জানি নওশাবা আহমেদ ও তিনু রসিদই ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রের দুই অভিনয়শিল্পী। তৃতীয় শিল্পী কে? পরে জানা গেল, সে একটি বিড়াল। এই ছবির গল্প অনেকটা তাঁকে কেন্দ্র করেই।

নতুন ছবির অভিজ্ঞতা

ঢাকায় প্রথম আলোর কার্যালয়ে একসঙ্গে তিনজনের সঙ্গে দেখা হলো। একজন সংগীতশিল্পী, একজন নির্মাতা ও একজন অভিনেত্রী। তিনজন একসঙ্গে কেন? সে হদিস খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, অভিনেত্রী নওশাবা আহমেদ, নির্মাতা তানভীর আহম্মেদ ও কার্নিভাল ব্যান্ডের গায়ক তিনু রসিদ কাজ করেছেন নতুন একটি ছবিতে, নাম—এসো সুসংবাদ এসো। আড্ডায় উঠে এল স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটিতে তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতার কথা। ‘মেরিল-প্রথম আলো ফেইম ফ্যাক্টরি’ উদ্যোগ থেকে তরুণ চলচ্চিত্রকার খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতা ‘আগামী নির্মাতা’র প্রথম আসরের চূড়ান্ত তিনটি ছবির একটি এসো সুসংবাদ এসো। ছবিটি প্রযোজনা করা হয়েছে মেরিল-প্রথম আলো ফেইম ফ্যাক্টরি থেকে।

ছবির গল্প এক দম্পতির। তাঁদের সঙ্গে প্রধান একটি চরিত্রে আছে বিড়াল। বিড়ালটিকে রূপক ধরে দাম্পত৵জীবনের নানা টানাপোড়েন উঠে এসেছে ছবির গল্পে। উঠে এসেছে, এই সময়ে তরুণ দম্পতিদের মাতৃত্ব, ক্যারিয়ার, জীবন–যাপনসহ নানা দিক। আড্ডায় মাঝখানে বসেছেন পরিচালক। দুই পাশে দুই অভিনয়শিল্পী। এক পাশে নওশাবা আরেক পাশে তিনু রসিদ। তিনু পেশায় সংগীতশিল্পী হলেও এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। নির্মাতা তানভীর বললেন, ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা ছবিতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। প্রথমে আমরা ছবির সংগীতের ব্যাপারে কথা বলি। সংগীতের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে অভিনয়ের জন্য তিনুকে নির্বাচন করে ফেলি।’

গান থেকে অভিনয়ে

অভিনয়ের প্রস্তাব শুনে তিনুর চোখ চড়কগাছ। গান করেন ভালো কথা। অভিনয় কী করে করবেন? অভিনয়ের ‘অ’–এর অভিজ্ঞতাও নেই তাঁর। তিনু বলেন, ‘আমি ভাবছি আমার কাছে ও (তানভীর) মিউজিকের কথা বলার জন্য আসছে। পরে শুনি, আমাকে নাকি অভিনয় করতে হবে। ভেবেছি ও তো পাগলাটে, হয়তো মজা করছে। পরে দেখি, স্ক্রিপ্ট দিল। স্ক্রিপ্ট দেখে ভালো লেগেছে। কিন্তু আমি তো এসব কিছুই পারি না। সংলাপ ভুলে যাই।
তারপরও শুরু করলাম। নওশাবা আহমেদ খুব হেল্প করেছেন। অসাধারণ অভিজ্ঞতা।’

শৈশবে ফিরে যাওয়া

নওশাবা আহমেদের চরিত্রটি প্রথমে অন্য একজনের করার কথা ছিল। নওশাবার সঙ্গে কথা বলে নির্মাতার মনে হলো, এই চরিত্রে নওশাবাকে নিলে ভালো হবে। নওশাবা এবার কথার ঝুড়ি খুললেন। বললেন, ‘যখন আমি শুনেছি যে একটা বিড়ালের সঙ্গে আমার বেশি অভিনয় করতে হবে, তখন আগ্রহী হই। কারণ, মানুষের চেয়ে প্রাণীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ভালো। শৈশব থেকে পশুপাখিই ছিল আমার খেলার সঙ্গী। আমার একসময় নয়টা বিড়াল ছিল। বিড়ালগুলো এক এক করে নেই হয়ে যায়। শুটিং করতে গিয়ে অনেক দিন পর মনে হয়েছে, ছোটবেলার বন্ধুকে ফিরে পেয়েছিলাম।’

নওশাবা জানান, মূলত বিড়ালকে রূপক ধরে একটি মেয়ের জীবনে মাতৃত্ব কত গুরুত্বপূর্ণ, তা দেখানো হয়েছে। স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিটিতে আরও দেখা যাবে গালিব আহমেদ ও মনিষা অর্চিকে।

আসছে তিন ছবি

মেরিল-প্রথম আলোর উদ্যোগ ‘ফেইম ফ্যাক্টরি’ থেকে আয়োজন করা হয় ‘আগামীর নির্মাতা’ প্রতিযোগিতা। সেখান থেকে তরুণ নির্মাতাদের খুঁজে বের করা হয়। অনূর্ধ্ব ৪০ বছর বয়সীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। অংশ নেওয়া প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে ১০ জনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়। তাঁরা ফেইম ফ্যাক্টরির পৃষ্ঠপোষকতায় একটি করে মোট ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানোর সুযোগ পান। এতে অর্থ সহযোগিতা করে মেরিল-প্রথম আলো ফেইম ফ্যাক্টরি। এরপর ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র থেকে বিচারকদের রায় ও দর্শকদের ভোটে বেছে নেওয়া হয় সেরা তিনটিকে। সেরা তিন চলচ্চিত্রকার সুযোগ পান তাঁদের স্বপ্নের ছবি নির্মাণে। ছবিটি আগামী ডিসেম্বর মাসে দেখা যাবে।