বইপাগলের গল্প নিয়ে 'যদি জানতে'

ইয়াশ রোহান, লস্কর নিয়াজ মাহমুদ ও হিমি। ছবি: খালেদ সরকার
ইয়াশ রোহান, লস্কর নিয়াজ মাহমুদ ও হিমি। ছবি: খালেদ সরকার

সবকিছু প্রস্তুত। শুটিং লোকেশনে হাজির নির্মাতা লস্কর নিয়াজ মাহমুদ। কিন্তু একি! এখানে কীভাবে শুটিং করবেন। সবকিছু যে পাল্টে গেছে কয়েক দিনেই। নদীর তীরে যে গাছকে কেন্দ্র করে শুটিং হবে, সেটাই কেটে ফেলা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে পার্ক। নির্মাতার মাথায় হাত। কী আর করা। এগোলেন বিকল্প পরিকল্পনা ধরে। নতুন লোকেশন খুঁজে বের করা হলো।

বাড়ির কাছের সুগন্ধা নদী ছিল নির্মাতার প্রিয়। ছোটবেলা থেকেই এ নদীর সঙ্গে দোস্তি। নিজের সিনেমায় শুটিং লোকেশনের তালিকায় তাই অনায়াসেই ধরা পড়ল এটি। সিনেমার জন্য নদীর তীরে চাই একটি গাছ। কাকতালীয়ভাবে তা–ও মিলে গিয়েছিল। নিজের সিনেমার শুটিং তাই এখানেই করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। তা অধরাই থেকে গেল। তবে থামেনি চলচ্চিত্রটির নির্মাণযাত্রা।

‘যদি জানতে’

কবি ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতা ‘বই’–এর অনুপ্রেরণায় লস্কর নিয়াজ মাহমুদ নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র যদি জানতে। এ ছবিতে অভিনয় করেছেন তরুণ দুই অভিনয়শিল্পী ইয়াশ রোহান ও জান্নাতুল হিমি। ‘মেরিল-প্রথম আলো ফেইম ফ্যাক্টরি’র উদ্যোগ থেকে তরুণ চলচ্চিত্রকার খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতা ‘আগামীর নির্মাতা’র প্রথম আসরের চূড়ান্ত তিনটি ছবির একটি এটি। ছবিটি প্রযোজনা করা হয়েছে মেরিল-প্রথম আলো ফেইম ফ্যাক্টরি থেকে।

গল্পটি কবির

বইপাগল এক মানুষের কাহিনি নিয়ে ছবির গল্প। সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব–নিকাশে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন এ হিসাবকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে সেই মানুষ হতে চেয়েছেন লাল মলাটের একটি বাংলা বই। এই কবির চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান। কী অভিজ্ঞতা ইয়াশের? তিনি বললেন, ‘একজন কবিকে নিয়ে চরিত্রটি। আমি কখনো কবিতা লিখিনি। তাই এ বিষয়ে অভিজ্ঞতাও কম। কবিদের চিন্তা, তাঁদের মনোযোগ—এসব নিয়ে ভেবেছি। কেমন হয়েছে জানি না। আমি চেষ্টা করেছি।’

কবির জীবনে একসময় প্রেম আসে। অলকানন্দা নাম মেয়েটির। কবির জীবনে আরেক গল্প শুরু হয়। অলকানন্দার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তরুণ অভিনেত্রী ও মডেল জান্নাতুল হিমি। তিনি বললেন, ‘আসলে হঠাৎ করেই কাজটি করা। এ ছবির শুটিং স্পটে গিয়েই দেখা হয় নির্মাতার সঙ্গে। তার আগে শুধু স্ক্রিপটা পড়েছি। বেশ ভালো লাগে। সুন্দর ও সহজ গল্প। খুব গোছানো ছিল পরিচালকের কাজ।’

নির্মাতা জানান, কবির শৈশব ও কৈশোরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী ঋতুরাজ ও শতদল। ঝালকাঠি ছাড়াও পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জ, লালবাগ, বাংলাবাজারসহ নানা জায়গায় ছবিটির শুটিং হয়েছে। ছবিটির চিত্রগ্রহণ করেছেন রিপন চৌধুরী।

মেরিল-প্রথম আলোর উদ্যোগে ‘ফেইম ফ্যাক্টরি’ থেকে আয়োজন করা হয় ‘আগামীর নির্মাতা’ প্রতিযোগিতা। সেখান থেকে তরুণ নির্মাতাদের খুঁজে বের করা হয়। অনূর্ধ্ব–৪০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। অংশ নেওয়া প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে ১০ জনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়। তাঁরা ফেইম ফ্যাক্টরির পৃষ্ঠপোষকতায় একটি করে মোট ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানোর সুযোগ পান। এতে অর্থ সহযোগিতা করে মেরিল-প্রথম আলো ফেইম ফ্যাক্টরি। এরপর ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র থেকে বিচারকদের রায় ও দর্শকদের ভোটে বেছে নেওয়া হয় সেরা তিনটিকে। সেরা তিন চলচ্চিত্রকার সুযোগ পান তাঁদের স্বপ্নের ছবি নির্মাণে। ছবিটি এ মাসেই দেখা যাবে।