মৌসুম শুরু, ব্যস্ত সংগীত তারকারা

সৈয়দ আবদুল হাদী,সামিনা চৌধুরী ,কুমার বিশ্বজিৎ,মমতাজ
সৈয়দ আবদুল হাদী,সামিনা চৌধুরী ,কুমার বিশ্বজিৎ,মমতাজ

সারা বছর হাতে গোনা শো করলেও শীতের শুরু থেকেই ব্যান্ড দল ও একক গানের শিল্পীরা স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে একক শিল্পীদের ব্যস্ততা বেশি থাকে। মূলত অক্টোবর থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত এই ব্যস্ততা চলতে থাকে। এরপর কমতে থাকে। তবে স্টেজ শোর ভরা মৌসুম থাকে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই সময়টায় কোনো কোনো শিল্পী ৩০ দিনের মধ্যে ২৫ দিনই স্টেজ শো করেন। ব্যস্ত এসব একক শিল্পীর তালিকায় আছেন জ্যেষ্ঠ ও তরুণ শিল্পীরা।

একক গানের শিল্পীদের মধ্যে কুমার বিশ্বজিৎ, মমতাজ, সৈয়দ আবদুল হাদী, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, কনকচাঁপা, চন্দনা মজুমদার, আঁখি আলমগীর, কনা, হৃদয় খান, কোনাল, ইমরান, সাব্বির, কিশোর, বিন্দুকনা, লিজা, রাজিব, পুলক, আরিফ, রন্টি, নিশিতা, ঝিলিক, সালমা, রেশমী, শামীম, বেলাল খান, কর্নিয়া, লুইপা প্রমুখ নাম শোনা যায়।

সারা বছরই সমানতালে স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন কুমার বিশ্বজিৎ। তবে বছরের এই সময়টায় তা বেড়ে যায় বলে জানালেন তিনি। এদিকে মায়ের অসুস্থতায় বছরের এই সময়ে ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে আছেন তিনি। জানালেন, ‘নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। জানুয়ারির ১৯ তারিখ পর্যন্ত একটানা শো। এদিকে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মা হাসাপাতালে। কিসের মধ্যে যে আছি, বলতে পারব না।’

২০১৯ সালের প্রায় পুরোটা সময় স্টেজ শোর জন্য ভালো সময় ছিল না বলে মনে করছেন সামিনা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আগের বছরও যেখানে মাসে সাত–আটটা স্টেজ শো থাকত, এ বছরটায় তা কমেছে। স্টেজ শোর মৌসুমও শুরু হয়েছে একটু দেরিতে, ডিসেম্বরে। চলতি মাস ও সামনের মাসে যে কয়টি শোর ব্যাপারে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে, গত বছরের তুলনায় সংখ্যায় কম।’

ভরা মৌসুমে ২৫ থেকে ২৬টি স্টেজ শো করেন বলে জানালেন কনা। এ মাসের শেষ পর্যন্ত ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ১৫টি স্টেজ শোর ব্যাপারে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে। কনা বলেন, ‘শো আরও বাড়বে। ২৫টি শো হতে পারে। দেশে এখন কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো অস্থিরতা নেই। এ কারণে শিল্পীদের স্টেজ শোর ব্যস্ততা বাড়ছে।’

ক্লোজআপ তারকা লিজা ৩০ নভেম্বর থেকে টানা স্টেজ শো করছেন। ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ১০টা শো চূড়ান্ত বলে জানান তিনি। চলতি মাসে ২৫টির মতো শো হতে পারে বলে জানান তিনি। লিজা বলেন, ‘স্টেজ ছাড়া গান থেকে একজন শিল্পীর আয়ের অন্য কোনো পথ দেখছি না। হয়তো ইউটিউব, অ্যাপ থেকে আয় আসতে পারে। তবে তা এখনই না।’

নভেম্বর থেকে মঞ্চের ব্যস্ততা শুরু হলেও কিশোর এই সময়টাতে বিয়ের কারণে ব্যস্ত ছিলেন। ৫ ডিসেম্বরে মৌসুমের প্রথম স্টেজ করেন তিনি। চলতি মসে আরও সাতটি স্টেজ শো রয়েছে এই শিল্পীর। জানালেন নতুন বছরে তা আরও বাড়বে। কিশোর বলেন, ‘গত বছরগুলোর এ সময়টায় মাসে ১৫ কিংবা তারও বেশি স্টেজ শো করেছি। এবার এখনো কম। তবে বাড়বে। আগে একজন শিল্পীর ১০ গান দিয়ে অ্যালবাম বের হতো। এখন সেই প্রচলন নেই। একটা করে গান প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানগুলো। শিল্পী একটা গান থেকে আর কত টাকাইবা পাই। এই সিজনটা একজন শিল্পীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুর-সংগীতের বাইরে যাঁরা শুধুই গান করেন, তাঁদের এই সিজনের আয় দিয়ে সারা বছর চলতে হয়।’

মৌসুমে মাসে ১০ থেকে ১২ শো করেন হৃদয় খান। তিনি বলেন, ‘পেশাদার সংগীতশিল্পীর জন্য সিজনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সারা বছর তো খুব একটা স্টেজ শো থাকে না। এই সময়টায় স্টেজ শো করে একজন শিল্পীকে তাঁর সারা বছর চলার আর্থিক বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়।’