বলিউডে ঋষির ৫০ বছর

ঋষি কাপুর
ঋষি কাপুর

গায়ে টি-শার্ট, ঠোঁটের কোণে সেই রোমান্টিক হাসি। আজও ঋষি কাপুরের হৃদয় যে তারুণ্য ভরপুর, তার প্রমাণ পাওয়া গেল সম্প্রতি। মুম্বাইয়ের পাঁচতারা হোটেলে তিনি কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে আড্ডায় বসেছিলেন। সেখানে শুরুতেই তিনি বললেন, ‘যদিও আমার বয়স ৬৭। কিন্তু আমার হৃদয় আজও তরুণ। শিগগিরই আমাকে ৪০ বছরের ছোট এক সুপারস্টার নায়িকার সঙ্গে রোমান্স করতে দেখা যাবে।’ 

ঋষির সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের আড্ডার হেতু ছিল মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি দ্য বডির প্রচার। ঋষি কাপুর ও এমরান হাশমি অভিনীত থ্রিলার ধাঁচের এ ছবি মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল। 

১১ মাস ১১ দিনের এক লম্বা সফরে ক্যানসারকে হার মানিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ঋষি কাপুর। যোগ দিয়েছেন কাজে। তবে ঋষি কাপুরের সঙ্গে আড্ডায় বসার শুরুতেই শর্ত ছিল রণবীর-আলিয়া ভাট, আর তাঁর চিকিৎসা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। তাঁর এই ফিল্মি সফর এতটাই সমৃদ্ধ যে তা নিয়ে কথা বলতে বলতে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল। এই আড্ডার শুরুতেই উঠে এল ঋষির বাবা রাজ কাপুরের কথা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মেরা নাম জোকার, দুসরা আদমিসহ আরও অনেক ছবি বাবা বানিয়েছিলেন। তাঁর সব ছবিই ছিল সময়ের আগে। তাই বক্স অফিসে ছবিগুলো চলেনি। বাবা সিনেমা নিয়ে, তাঁর সৃষ্টি নিয়ে নানা নিরীক্ষা করতেন। কিন্তু সব সময় তা পারেননি।’

বাবা রাজ কাপুর পরিচালিত মেরা নাম জোকার ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছিল ঋষি কাপুরের। অভিনয়ের আঙিনায় ৫০ বছরে পার করতে চলেছেন এই বলিউড সুপারস্টার। অভিনয়ে অর্ধশতক পূরণের আগমুহূর্তে এসে ঋষি বলেন, ‘আমি আমার কাজকে উপভোগ করছি। অভিনয়কে ভালোবাসি। মেরা নাম জোকার ছবিটি ধরলে আগামী বছর এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার ৫০ বছর হবে। তবে আমি এখনো নানান বৈচিত্র্যময় চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরতে পারছি। এই বয়সে এসেও রাজমা-চাওল, মুলক, কাপুর অ্যান্ড সনস-এর মতো ছবিগুলোয় ভিন্ন ধারার চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা তো বিরাট অর্জন।’ ঋষি কাপুর মনে করেন একজন অভিনেতা হিসেবে এখনো তিনি নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করছেন। 

নিজের অভিনীত ছবি দেখতে পছন্দ করেন না এই বলিউড তারকা। এমনকি ছেলে রণবীর কাপুরের অধিকাংশ ছবি দেখেননি তিনি। হাসতে হাসতে বললেন, ‘নীতু (ঋষির স্ত্রী) খুবই বাস্তববাদী। ও আমার আর রণবীরের সব ছবি দেখে। ছবি দেখার পর নীতু ওর মতামত দেয়। আমি আবার এটা করি না। আমি অন্য অভিনেতাদের ছবি দেখি।’ 

৫০ বছরের দীর্ঘ অভিনয়জীবনে ঋষির কোনো আক্ষেপ আছে কি না, জানতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেন, ‘না, আমার কোনো আক্ষেপ নেই। রণবীরকে আমি সব সময় বলি, সফলতাকে যেন মাথায় চড়তে না দেয়। আবার ব্যর্থতা যেন হৃদয় চুরমার না করে। কোনো অভিনেতাই জীবনে ১০০ ভাগ সফল হতে পারে না।’ 

এ প্রজন্মের নায়কদের মধ্যে ভিকি কৌশল, রাজকুমার রাও, আয়ুষ্মান খুরানা, রণবীর সিংয়ের প্রশংসা ঝরে পড়ে ঋষির কণ্ঠে। এ তালিকায় ছেলে রণবীরের নামও নেন তিনি। ঋষি বলেন, ‘এই সময়ের নায়কেরা শুধু জিম বা ঘোড়সওয়ারি করে নিজেদের সময় কাটান না। এঁরা অভিনয়েও মনোযোগী হন। আয়ুষ্মান টাক মাথা নিয়ে হিরোর চরিত্রে অভিনয় করল। আমাদের সময় এসব ভাবতেও পারতাম না। তাপসী পান্নু আর ভূমি পেড়নেকর এত কম বয়সে বৃদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করার সাহস দেখাল। এই শিল্পীদের প্রশংসা না করে থাকা যায় না।’

প্রতিযোগিতায় একদমই বিশ্বাসী নন এই বলিউড তারকা। তিনি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘কারও সঙ্গে আমার কোনো প্রতিযোগিতা নেই। নিজের কাজ মন দিয়ে করি। আমি নিজেকে সেরা মনে করি।’