তিন 'ভাবি' পেলেন সম্মাননা

নাট্য ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে তাঁদের সহযোদ্ধারা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
নাট্য ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে তাঁদের সহযোদ্ধারা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

অন্য রকম এক সম্মাননা আর সংবর্ধনার আয়োজন দেখা গেল গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এমন তিনজন সম্মাননা পেলেন, যাঁদের অন্তত মঞ্চনাটকে সরাসরি সংযোগ নেই। তাঁরা গওহর আরা চৌধুরী, শাহিদা রহমান ও কৃষ্টি হেফাজ। এই তিন নারী পেলেন ‘প্রাঙ্গণেমোর নাট্যযোদ্ধা সহযোদ্ধা সম্মাননা ২০১৯’।

প্রতিটি উৎসবে সংবর্ধনা আর সম্মাননা দেওয়ার রীতি থাকে। নাটকে অবদানের জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তিত্বকে দেওয়া হয় সম্মাননা ও সংবর্ধনা। প্রাঙ্গণেমোরের উৎসবেও এমন আয়োজন রাখা হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে দলটি সম্মাননা দিয়েছে একজন প্রতিষ্ঠিত নাট্যব্যক্তিত্বের স্ত্রীকে। দলপ্রধান অনন্ত হিরার ভাষায় ‘তিন ভাবি’কে ‘প্রাঙ্গণেমোর নাট্যযোদ্ধা সহযোদ্ধা সম্মাননা ২০১৯’ দেওয়া হয়েছে।

সম্মাননা পাওয়া তিন নারীর মধ্যে আছেন নাট্যজন মামুনুর রশীদের স্ত্রী গওহর আরা চৌধুরী, নাট্যজন আতাউর রহমানের স্ত্রী শাহিদা রহমান এবং নাট্যজন লিয়াকত আলীর স্ত্রী কৃষ্টি হেফাজ। অনুষ্ঠানে শিল্পীদের স্ত্রীদের হাতে সম্মাননা পদক ও মানপত্র তুলে দেওয়া হয়। নাট্যব্যক্তিত্বদের দেওয়া হয় ফুলের তোড়া এবং উৎসব স্মারক। সম্মাননা পদক তুলে দেন প্রশান্ত হাওলাদার ও লিপিকা বিশ্বাস তাপসী দম্পতি, তৌফিকুল ইসলাম ও খালেদা বেগম দম্পতি এবং দেবাশীষ বিশ্বাস ও অঞ্জনা দে দম্পতি। যে দম্পতিরা সম্মাননা পদক ও ফুলের তোড়া তুলে দিয়েছেন, তাঁরাও একজন নাটকের মানুষ, অন্যজন ভিন্ন জগতের।

মামুনুর রশীদ ও গওহর আরা চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
মামুনুর রশীদ ও গওহর আরা চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

অনন্ত হিরা বলেন, ‘বছরের পর বছর শ্রম, মেধা আর সময় দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আমাদের অগ্রজ নাট্যজনেরা। তাঁরা কেউ ৪৭ বছর, কেউ ৩৫ বছর সংসার এবং নাট্যচর্চা পাশাপাশি চালিয়ে আসছেন। তাঁদের নাট্যজগতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া, এত দূর আসার পেছনে দারুণ অবদান আছে তাঁদের স্ত্রীদের। এ ক্ষেত্রে তাঁরাও সহযোদ্ধা। এ কারণে আমরা এবার “প্রাঙ্গণেমোর নাট্যযোদ্ধা সহযোদ্ধা সম্মাননা ২০১৯” প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছি।’

লিয়াকত আলী লাকী ও কৃষ্টি হেফাজ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
লিয়াকত আলী লাকী ও কৃষ্টি হেফাজ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

দুই বাংলার নাটক নিয়ে এটি হচ্ছে প্রাঙ্গণেমোরের ১১তম আয়োজন। ২০০৮ সালে প্রথম আয়োজনটি করে প্রাঙ্গণেমোর। এক বছর পরপর নিয়মিতই করে আসছে তারা। গতকাল ছিল উৎসবের অষ্টম দিন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ছিল মুক্ত আলোচনা। ‘থিয়েটারের সংকট দর্শক না ভালো নাটক?’ শিরোনামের এ আয়োজনে। এতে ধারণাপত্র পাঠ করেন হাসান শাহরিয়ার। মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন স্বপন রায়, মলয় ভৌমিক, আহমেদ ইকবাল হায়দার, রতন সিদ্দিকী, মোহাম্মদ আলী হায়দার ও রহমান রাজু। অনন্ত হিরার আলোচনায় আরও ছিলেন আজাদ আবুল কালাম, আততারুজ্জামান, সামিনা লুৎফা নিত্রা, শাকুর মজিদ, আসাদুল ইসলাম, ফয়েজ জহির, তৌফিকুল ইমন প্রমুখ। সন্ধ্যায় ছিল ‘নাট্যযোদ্ধার সহযোদ্ধা সম্মাননা’। শেষে লোকনাট্যদলের নাটক ‘আমরা তিনজন’ মঞ্চস্থ হয়।

আতাউর রহমান ও শাহিদা রহমান। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
আতাউর রহমান ও শাহিদা রহমান। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘আমি বাংলায় ভালোবাসি, আমি বাংলাকে ভালোবাসি’ স্লোগানে এবার মেলায় ‍বাংলাদেশ, ভারতের নয়টি দল অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশের পাঁচটি এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লির চারটি দল।

অনুষ্ঠানে প্রাঙ্গণেমোরের দলপ্রধান অনন্ত হিরা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
অনুষ্ঠানে প্রাঙ্গণেমোরের দলপ্রধান অনন্ত হিরা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আজ শনিবার দিল্লির দল গ্রিনরুম থিয়েটার প্রযোজিত ও অঞ্জন কাঞ্জিলাল নির্দেশিত নাটক ‘বিসমিল্লা’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রাঙ্গণেমোর আয়োজিত এবারের ‘দুই বাংলার নাট্যমেলা ২০১৯’।

ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নাট্যজনেরা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নাট্যজনেরা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া