আমার বুক ধুকপুক করছে: অক্ষয় কুমার

ক্যালেন্ডার বলছে, হাফ সেঞ্চুরি পার করে আরও দুই বছর পেরিয়েছে বলিউড তারকা অক্ষয় কুমারের বয়স। কিন্তু বলিউডে তাঁর ছবির বক্স অফিস আয় বলছে ভিন্ন কথা। ২০১৯ সালে এসে তিনি নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সফল বছরের দেখা পেয়েছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তাঁর অভিনীত ছবিগুলোর বক্স অফিস আয় এখন ১ হাজার কোটি রুপির কাছাকাছি। এ বছর অক্ষয় কুমারের তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে—‘কেসরি’, ‘মিশন মঙ্গল’ ও ‘হাউসফুল ফোর’। ২৭ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে ‘গুড নিউজ’। সম্প্রতি এই ‘খিলাড়ি’ তাঁর ব্যক্তিগত জীবন আর ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন ফিল্মফেয়ারের সঙ্গে।

‘হিট মেশিন’ অক্ষয় কুমারের বয়স ৫২ বছর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
‘হিট মেশিন’ অক্ষয় কুমারের বয়স ৫২ বছর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হাউসফুল ফোর’ নিয়ে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য হলো।
যারা এসব নেতিবাচক মন্তব্য করছে, তারা ভালো বলতে পারবে, কেন এসব বলেছে। যার যা বলতে ইচ্ছা করেছে, বলেছে। তাতে আমার কিছু আসে যায় না। কারণ দিন শেষে শেষ কথা বলে বক্স অফিস। সেটাই আমার কাছে মুখ্য।

‘এয়ার লিফট’ (২০১৬) থেকে শুরু করে ‘হাউসফুল ফোর’ আপনার ১১ নম্বর সিনেমা, যেগুলো টানা হিট হয়েছে।
আমি জানি না। আমি কেবল চিত্রনাট্য পড়ি, সাইন করি, সেটে নিজের কাজটা ভালোভাবে করি। দর্শক ভালোভাবে নিচ্ছেন, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।

স্ত্রী টুইঙ্কল খান্নার সঙ্গে অক্ষয় কুমার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
স্ত্রী টুইঙ্কল খান্নার সঙ্গে অক্ষয় কুমার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

আপনার সিনেমা নিয়ে সমালোচকেরাও উচ্চবাচ্য করে না। আবার বক্স অফিসেও ঢের কামাই করে নিচ্ছে।
এটাও আমি বলতে পারব না। তবে আমি সমালোচকদের সম্মান করি। সমালোচকের কাছ থেকে সৎ রিভিউ আসা খুবই জরুরি। আবার কমেডি ধারা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন আমার আর আমার স্ত্রীর রসবোধ ভিন্ন। তাই সমালোচকেরা কমেডির ক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণ করবেন, সেটাই স্বাভাবিক।

টুইঙ্কল খান্না ‘হাউসফুল ফোর’ দেখেছেন?
(হেসে) না, দেখেনি।

এ বছর অক্ষয় কুমারের তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে—‘কেসরি’, ‘মিশন মঙ্গল’ ও ‘হাউসফুল ফোর’। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
এ বছর অক্ষয় কুমারের তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে—‘কেসরি’, ‘মিশন মঙ্গল’ ও ‘হাউসফুল ফোর’। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

‘হাউসফুল ফোর’ ছবিতে ‘আমি অবলা, তবলা নই’ সংলাপের ব্যাপারে আপনার কী বক্তব্য?
এটা তো চিত্রনাট্যকারের বিষয়। এই সংলাপ যখন শুট হয়, তখন আমি সেটে ছিলাম না। তাই জানতাম না।

কমেডি করা খুব কঠিন?
হিউমার পাশে রেখে, লজিক পাশে রেখে কেবল শরীর দিয়ে কমেডি করা কঠিন। একমাত্র চার্লি চ্যাপলিনই সেটা পারতেন। কোনো সংলাপ ছাড়া তিনি মানুষকে হাসাতে পারতেন। ‘লরেন অ্যান্ড হার্ডি’ও (স্ট্যান লরেন আর অলিভার হার্ডি) পারতেন। আমি তাঁদের দেখে বড় হয়েছি, শিখেছি। কিছু না বলে হাসানো খুব কঠিন কাজ।

‘গুড নিউজ’ ছবির গানের দৃশ্য। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
‘গুড নিউজ’ ছবির গানের দৃশ্য। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

কমেডিকে বলিউড অবহেলা করেছে?
আমি ৩০ বছর ধরে এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছি। এখনো পাইনি। অনেকে বলে, কমেডি নাকি সহজ। শুনে আমার হাসি পায়। তবে আমি সব ধরনের ছবি করতে চাই।

অ্যাকশন থেকে আপনি কমেডি ছবিতে কেন এলেন?
খুব যে ভাবনাচিন্তা করে এসেছি, তা নয়। স্রোতের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ‘মিশন মঙ্গল’ ছবিতে মহাকাশ বিজ্ঞানীর চরিত্র করেই ‘লক্ষ্মী বম্ব’ ছবির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। পুরো ইউ টার্ন। আমি সব সময় পরিচালকের হাতটা শক্ত করে ধরে রাখি। তিনি সবদিক থেকেই সিনেমাটা আমার চেয়ে ভালো বোঝেন। তিনিই আমাকে চালান। আর লোকে ভাবে, আমি বুঝি জাহাজের ক্যাপ্টেন। আমি কেবল মন দিয়ে নিজের কাজ করি, আর দোয়া করি যাতে জাহাজটা টাইটানিকের মতো টুপ করে ডুবে না যায়। 

মেয়ের ষষ্ঠ জন্মদিনে ছবিটি পোস্ট করেন অক্ষয় কুমার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া
মেয়ের ষষ্ঠ জন্মদিনে ছবিটি পোস্ট করেন অক্ষয় কুমার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

কোন ছবি আপনার জীবন বদলে দিয়েছে?
বেশ কয়েকটা। ‘সংঘর্ষ’ (২০০০), ‘জানোয়ার’ (১৯৯৯), ‘হেরা ফেরি’ (২০০০), ‘ফির হেরা ফেরি’ (২০০৬)। প্রিয়দর্শন, রাজকুমার সন্তোষী ও নীরাজ ভোহরা—এই তিনজন মানুষ আমাকে বুঝিয়েছেন যে আমাকে দিয়ে হবে।

এ বছর চারটি সুপারহিট সিনেমা উপহার দিলেন। ছবি বাছাই নিয়ে আপনি খুব আত্মবিশ্বাসী?
না, মোটেও না। আমার আশপাশের মানুষ জানে, ছবি মুক্তির আগে আমি কতটা নার্ভাস থাকি। ‘গুড নিউজ’ ছবির মুক্তির দিন যত এগিয়ে আসছে, আবার আমার বুক ধুকপুক করছে।